শৈলকুপায় ঝাপান খেলা ॥ উপচেপড়া ভিড়

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝিনাইদহ, ৮ অক্টোবর ॥ শৈলকুপায় অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলা। শনিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ উপজেলার বিএলকে স্কুল প্রাঙ্গণে এ খেলার আয়োজন করে এলাকাবাসী। বিষধর সাপ নিয়ে খেলা দেখতে স্কুল প্রাঙ্গণে ভিড় করেছিল শত শত মানুষ। আর দর্শকদের হাততালি আর উল্লাসে খেলা দেখাতে ব্যস্ত সাপুড়েরা। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া ঝাপান খেলা আবারও ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছে শৈলকুপা উপজেলার বিএলকে এলাকাবাসী। বাদ্যের তালে তালে ঝুড়ি থেকে বেরিয়ে আসে ভয়ঙ্কর গোখরা সাপ। উপস্থিত শত শত দর্শকের করতালি একটুও বিচলিত করতে পারে না ফণা তুলে এই নাচিয়েকে। মনিবের ইশারা ইঙ্গিত তাকে ঠিক বুঝিয়ে দিয়েছে, শুধু মানুষকে আনন্দ দেয়ার খেলা নয়, বরং চলছে মর্যাদার লড়াই। ঐতিহ্যবাহী এ সাপখেলা দেখতে ভিড় করেন হাজারো দর্শক। বাদ পড়েনি মহিলা দর্শকরাও। ঢাক আর ঢোলের বাদন আর নাচগানে সাপুড়েরা দর্শকদের মন ভরিয়ে তোলেন। ৭টি সাপুড়ে দলের শতাধিক সাপের মধ্যে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে প্রতিটি সাপ প্রদর্শন করে নিজেদের আকর্ষণীয় কসরত। আর এই দুর্লভ দৃশ্য দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা। অনেকে জীবনে প্রথম আবার অনেকে অনেকদিন পর দেখছেন এ খেলা। এই ঝাপান খেলা দেখে খুবই আনন্দিত হয় দর্শক। শৈলকুপার অংশগ্রহণকারী সাপুড়ে লিটন জানান, এটা আমাদের বাপ দাদার পৈত্রিক পেশা। আমার আগে আমার বাবা তার আগে তার বাবা সকলেই সাপ খেলা দেখিয়ে জীবনধারণ করতেন। আমরা বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াই। এ ধরনের আয়োজন হলে এলাকার সাপুড়েদের মিলনমেলায় অনেক ভাববিনিময় ও বিভিন্ন প্রজাতির সাপের খোঁজখবর পাওয়া যায় বলে জানান বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাপুড়েরা। শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, সমাজ থেকে সন্ত্রাস, মাদক দূর করতে এ ধরনের আয়োজন করা দরকার। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে যদি এ ধরনের খেলার আয়োজন করা হয় তবে সমাজ থেকে অপরাধ অনেকটা বন্ধ হবে। এ ব্যাপারে আয়োজক সাবেক যুগ্ম সচিব মীর সাহাব উদ্দিন বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে এই খেলার আয়োজন।