ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যমুনায় বাঁধে ধস

প্রকাশিত: ০৪:১২, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

যমুনায় বাঁধে ধস

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ যমুনা নদীতে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করছে। কাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এতে ভাঙ্গনকবলিত এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যেই সিরাজগঞ্জ সদরের পাঁচঠাকুরী এলাকায় ১০টি বাড়িসহ বেশ কয়েক একর আবাদি জমি যমুনায় বিলীন হয়েছে। যমুনার প্রচ- স্রোতে ডানতীর রক্ষা বাঁধের ২শ’ মিটার ধসে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানান, ইতোমধ্যেই সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে কাজীপুরের নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্পের বাইরে মল্লিকপাড়া, ফুলজোড় ও নতুন মাইজবাড়ী চরের শতাধিক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত দু’বছরে সিমলা থেকে বাহুকা পর্যন্ত ১০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ডানতীর রক্ষা বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। শনিবার রাতে আকস্মিক ধস নামে এবং রবিবার দুপুর পর্যন্ত তা ২০০ ফিটে বিস্তৃতি ঘটে। বিলীন হয় ১০টি ঘরবাড়িসহ বেশ কয়েক একর আবাদি জমি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। বগুড়ায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া থেকে জানান, এ যেন আষাঢ়ে দিনের প্রকৃতি। বৃষ্টির একটানা মোহনীয় ছন্দ-সুরে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়ার মনকাড়া আহ্বান। ঋতু বদলের স্বাভাবিক পরিক্রমায় আষাঢ়-শ্রাবণ বাঙালী জীবনযাত্রায় বৃষ্টির প্রস্তুতি থাকলেও আশ্বিনে ভারি বৃষ্টিপাত, ছন্দপতনের মতো। তবে এমনিই ভারি আকাশ নিয়ে অঝোর ধারার বৃষ্টি ঝরেছে সোমবার বগুড়ায়। ভারি বৃষ্টিপাতে শহরের সড়ক নিচু এলাকা তলিয়ে যায় হাঁটু পানিতে। সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। নগরজীবনে নেমে আসে বিড়ম্বনা। সড়ক ডুবে যাওয়ায় ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। বৃষ্টি নিয়ে কত কাব্য, গান আর কতই উপাখ্যান। বৃষ্টির কাছে চাওয়া-পাওয়া নিয়েও রয়েছে অনেক আকুতি। আর এখন সেই আপ্ত বাক্যের মতো- মেঘ না চাইতেই জলের মতো অবস্থা, ঘোরবাদল দিন যেন ডানা মেলে দিয়েছে এ আশ্বিনে। তবে এখনকার এ বৃষ্টি কৃষকের কাছে আশীর্বাদের মতো। কারণ রোপা আমন মৌসুম চলছে। সেচ নয়, আমন আবাদের জন্য বৃষ্টিই কৃষকের কাছে অনেক বড় চাওয়া। কয়েক দিন ধরেই চলছে ভারি মেঘের ভেলায় রোদ-বৃষ্টির হাসি-কান্না। এ আবহাওয়ায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অনেকটা স্বাভাবিক হলেও একেবারে আকাশভাঙ্গা বৃষ্টি নগরজীবনে আকস্মিক ছিল। বেলা ১১টার পর থেকে এ মুষলধারার বৃষ্টি আষাঢ়ের আবেগী সৌন্দর্যে ছড়িয়ে দেয়ার সঙ্গে নাগারিক জীবনযাত্রায় অচলাবস্থা সৃষ্টি করে। ভারি বৃষ্টিপাতের পর থেমে থেমে মাঝারি, কখনও বা হালকা বৃষ্টি। এর রেশ থাকে বিকেল পর্যন্ত। শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা থেকে স্টেশন রোড, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, কলোনি, বাদুরতলা, মালতিনগরের কিছু এলাকা, চেলোপাড়া নটাইপাড়ার নিচু এলাকাসহ শহর ও শহরতলির বিভিন্ন অলিগলি সড়ক ও নিচু এলাকা তলিয়ে গিয়ে অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে লোকজনকে পোহাতে হয় দুর্ভোগ। অপরদিকে বৃষ্টির কারণে শহরজুড়ে দেখা দেয় যানজট। প্রধান সড়কে জল ও যানজটে দীর্ঘ সময় ধরে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়। বৃষ্টিতে ভিজে সাধারণ পথচারীরা পর্যন্ত ভোগান্তিতে পড়ে যানজটের কারণে। এদিকে বগুড়া আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে, এ সময়ে এটি রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত। এর আগে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে একদিনে সর্বোচ্চ ৭৯ মিলিমিটার হয়েছিল। সাধারণত আশ্বিনে এ ধরনের ভারি বৃষ্টি খুবই কম হয়। সোমবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল পৌনে ৩টা পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। রাজশাহীতে জলাবদ্ধতা স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী থেকে জানান, আশি^নে টানা দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজশাহী নগরজুড়ে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার দুপুরে ভারিবর্ষণে দেখা দিয়েছে নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে নগরীর নিচু এলাকা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে মানুষ। আবহাওয়া অফিস জানায়, কয়েক দিন ধরেই রাজশাহী অঞ্চলে হাল্কা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সর্বশেষ সোমবার বেলা পৌনে ১টার পর টানা দেড় ঘণ্টা ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ মিলিমিটার। জলাবদ্ধতায় শুধু রাস্তাঘাট নয়, পানি উঠেছে বাড়িঘরসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও। আর এজন্য নগরবাসী সিটি কর্পোরেশনের অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাকেই দায়ী করেছে। বৃষ্টিতে নগরীর সাহেববাজার, উপশহর, মিয়াপাড়া, রানীবাজার, গণকপাড়া, শালবাগান, স্টেডিয়াম এলাকা, কোর্ট এলাকা, বুলনপুর, হড়গ্রাম, ছোটবনগ্রাম, উপশহর সপুরা, গুড়িপাড়াসহ নিচু এলাকাগুলোয় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। নগরীর গুড়িপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে অনেক বাড়ি জলমগ্ন। নগরীর অভিজাত এলাকা উপশহরের রফিকুল ইসলাম জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে উপশহর। এজন্য সিটি কর্পোরেশনই দায়ী। সঠিক সময়ে ড্রেন পরিষ্কার ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার সঠিক পরিকল্পনা না করায় এ দুর্দশা। একই এলাকার আলী বলেন, এমনিতেই উপশহর এলাকা মূল শহর থেকে একটু নিচু, বৃষ্টি হলেই এ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
×