ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে ২দিন আটকে রেখে এক শিশুকে অমানবিক নির্যাতন

প্রকাশিত: ০২:০২, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মাদারীপুরে ২দিন আটকে রেখে এক শিশুকে অমানবিক নির্যাতন

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ মোবাইল চুরির অভিযোগে মেহেদী হাসান (১৭) নামের এক শিশুকে ২দিন ঘরে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন করে শিবচর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যন দেলোয়ার বেপারীর ভাই কামরুল বেপারী। এ ঘটনা ঘটে শিবচর উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের রহম আলী বেপারী কান্দি গ্রামে। এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটলেও নির্যাতিত মেহেদীর পরিবার পুলিশকে জানাতে সাহস পায়নি। নির্যাতনকারী প্রভাবশালী, তাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিতে পারে এ আশঙ্কায়। স্থানীয়ভাবে সংবাদ পেয়ে শিবচর থানার পুলিশ রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় হাতে-পায়ে ও গলায় শিকল দেওয়া অবস্থায় মেহেদীকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। তার অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিবচরের কাদিরপুর ইউনিয়নের পার্শ¦বর্তী শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বি,কে নগর পশ্চিম কাজী কান্দি গ্রামের মনোয়ার খাঁর ছেলে মেহেদী ডিস লাইনের কর্মী। সে বিভিন্ন গ্রামে ডিস লাইনের সংযোগ দিতো এবং মেরামতের কাজ করতো। ঈদের আগে মেহেদী হাসান কামরুল বেপারীর ঘরে ডিস লাইনের কাজ করে। এ সময় কামরুল বেপারীর ২টি মোবাইল সেট হারিয়ে যায়। শনিবার দুপুরে কামরুল বেপারী ডিস লাইনের কাজ করার কথা বলে মেহেদীকে বাড়ি থেকে ডেকে আনে। মেহেদী এলে তাকে মোবাইল চুরি অবিযোগে মারধোর শুরু করে। এরপর তাকে একটি বদ্ধ ঘরে হাত-পায়ে ও গলায় লোহার শিকল বেঁধে আটকে রেখে ২দিন ধরে শারীরিক নির্যতন চালাতে থাকে। মেহেদীর পরিবার ঘটনাটি জানতে পেরেও কামরুলরা অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিতে পারে এ আশঙ্কায় তাকে উদ্ধার করতে সাহস পায়নি এবং পুলিশে সংবাদ দিতে পারেনি। স্থানীয়ভাবে সংবাদ পেয়ে শিবচর থানার পুলিশ রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মেহেদীকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এদিকে মেহেদীকে উদ্ধার করার সময় পুলিশ কামরুলকে আটক করলেও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যন দেলোয়ার বেপারী তাকে আটক বা গ্রেফতার করতে দেয়নি। তিনি পুলিশের কাছ থেকে তার ভাই কামরুল বেপারীকে ছাড়িয়ে রাখেন। নির্যাতিত মেহেদীর মা পারুল বেগম বলেন, ‘ওরা খুব প্রভাবশালী, আমাদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দেওয়ায় পুলিশকে জানাতে সাহস পাইনি। এখনো মামলা করার সাহস পাচ্ছি না। কারণ তারা আমাদের পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমরা ওদের ভয়ে আতঙ্কে আছি।’ এ ব্যাপারে শিবচর থানার এস. আই আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতে-পায়ে ও গলায় লোহার শিকল বাধা অবস্থায় মেহেদীকে উদ্ধার করি। উদ্ধারের পর তাকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি।’
×