ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এক বছরে বেড়েছে চার হাজার

জাপানে শতায়ুর সংখ্যা ৬৫ হাজার ৬শ’ ৯২

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

জাপানে শতায়ুর সংখ্যা ৬৫ হাজার ৬শ’ ৯২

জাপানে শতায়ু মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। বিশ্ব বৃদ্ধ দিবস উপলক্ষে দেশটির সর্বশেষ করা জরিপে শতায়ুু মানুষের সংখ্যা ধরা হয়েছে ৬৫ হাজার ৬৯২ জন, যা গত বছরের চেয়ে ৪ হাজার ১২৪ জন বেশি। স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ অধিদফতর পরিচালিত এ জরিপের ফলে বলা হয়েছে, জাপানের সিমানে, কচি, কাগুশিমা, ততোরি ও কাগুয়া প্রদেশের অধিবাসীদের অনেকেরই বয়স একশ’ বছরের উর্ধে। যাদের মধ্যে ৮৮ ভাগই নারী। খবর ইয়াহু নিউজের কাগুশিমা প্রদেশের কিকাই শহরের ১১৬ বছর বয়সী নাবি তাজিমাকে সবেচেয়ে বেশি বয়সী নারী হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। এরপরই রয়েছেন টোকিওর মাসামিসু ইয়োশিদা। যার বয়স ১১২ বছর। মূলত উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও খাবারের প্রতি সচেতনতায় শতবর্ষী মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বলে মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর আগে আন্তঃসম্পর্ক মন্ত্রণালয়ের জরিপে বলা হয়েছিল, ১২ কোটি ৭১ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে শতকরা ২৬ দশমিক ৭ ভাগ মানুষের বয়স ৬৫ বছরের উর্ধে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বৃদ্ধদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ‘শ্রম বাজারে’ বেশ প্রভাব পড়ছে। ফলে এই বৃহৎ জনসংখ্যার মধ্যে (৬৫ বছরের উর্ধে) দেড় কোটি মানুষকে সরকার ভরণ-পোষণ করছে। অনেকেই আবার এ বয়সে নিয়োজিত আছেন ‘কৃষি কাজে’। সরকারের তথ্যমতে, দেশটিতে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীরাই কৃষির হাল ধরে আছেন। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে একই মন্ত্রণালয়ের জনসংখ্যার আরেক জরিপ অনুযায়ী, বর্তমান জনসংখ্যা ১২ কোটি ৭১ লাখ ১ হাজার ৪৭ জন, যা ২০১০ সালের আদম শুমারির চেয়ে শতকরা ৭ ভাগ কম। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আদম শুমারির তথ্য জানিয়ে বলেছে, গত বছরের ১ অক্টোবর দেশব্যাপী জরিপ চালানো হয়। এতে দেখা যায়, বর্তমানে পুরুষের সংখ্যা ৬ কোটি ১৮ লাখ ২৯ হাজার ২৩৭ জন, আর নারীর সংখ্যা ৬ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার ৮১০ জন। এর আগে গত বছরের এক জরিপে, দেশটিতে ৮০ বছরের উর্ধে জ্যেষ্ঠ নাগরিকের সংখ্যা এক কোটি বলা হয়েছিল। যা মোট জনসংখ্যার শতকরা ৭ দশমিক ৯ ভাগ। সরকার বলছে, বৃদ্ধরা অধিকাংশই কর্মহীন, ফলে অর্থনীতিতে তারা কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে জাপান অর্থনীতিতে ব্যাপক হুমকির মুখে পড়বে বলেও জানানো হচ্ছে। বৃদ্ধদের অধিকাংশই ব্যায়ামে নিয়োজিত। পরিমিত খাবার ব্যবস্থা ও উন্নত চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধদের আয়ু দীর্ঘায়িত করতে অনেকটাই অনুঘটকের ভূমিকা পালন করছে বলেও জরিপে বলা হয়েছে। সব কিছু ছাপিয়ে নতুন প্রজন্মকে সন্তান জন্মদানে উদ্বুব্ধ করতে সরকার বেশকিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে। ১৯২০ সাল থেকে চলে আসা জাপানী আদিম শুমারি অনুযায়ী, বিয়ের প্রতি অনীহা আর পর্যাপ্ত চাপের কারণে জনসংখ্যার তীর নিম্নমুখী হচ্ছে। জাপানে সন্তান জন্মের পর থেকে ১২ বছর পর্যন্ত সরকার তার কিছুটা ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেয়। প্রতি মাসে সরকারের কোষাগার থেকে অর্থ যায় এ কাজে। সরকার বিয়েতে উৎসাহী করতে বেশকিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঘোষণা অনুযায়ী, দেশটিতে শিশু জন্মহার ১ দশমিক ৪ থেকে ১ দশমিক ৮ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
×