স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কে না জানে, এই ক্রীড়াভূবনের ক্রীড়ামঞ্চে সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমসের আসর। এই আসরের বেলায় একটি আপ্তবাক্য বহুল প্রচলিত। তা হলো, ‘পদক নয়, অংশগ্রহণ করাই বড় কথা।’ বিশ্বের অনেক বাঘা বাঘা ক্রীড়াবিদই এই আসরে পদক জিততে পারেন না। সর্বোচ্চ সাফল্য স্বর্ণপদক পাওয়া তো দূরের কথা। সেখানে সাফল্য ধরে রাখা তো আরও কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কথায় আছে, শিরোপা জেতার চেয়ে তা ধরে রাখা কঠিন। অথচ এই কঠিন কাজটিই করে ফেললেন কানাডার রোজি ম্যাকলেনান (পুরো নাম রোজেনাঘ রোজি ম্যাকলেনান)। জিমন্যাস্টিক্স ডিসিপ্লিনের তিনটি শাখা। আর্টিস্টিক, রিদমিক এবং ট্র্যাম্পোলাইন। শেষের খেলাটিই খেলে থাকেন আগামী ২৮ আগস্ট ২৮ বছর পূর্ণ হতে যাওয়া রোজি। কানাডার এই স্বর্ণকেশী সুদর্শনা ট্র্যাম্পোলাইনকন্যা ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে এই ইভেন্টের এককে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। ফলে এবার চলমান রিও অলিম্পিক আসরেও তিনিই ছিলেন ফেবারিট। ফলে প্রত্যাশার চাপও ছিল তার ওপর। কিন্তু সব চাপকে জয় করে এবারও জেতেন কাক্সিক্ষত সোনা। তার স্কোর ছিল ৫৬.৪৬৫ পয়েন্ট। পেছনে ফেলেন রৌপ্যজয়ী গ্রেট ব্রিটেনের ব্রিয়নি পেজ (৫৬.০৪০) এবং তাম্রজয়ী চীনের লি দানকে (৫৫.৮৮৫)। বয়স বাড়লে আগের লন্ডন আসরের চেয়ে এবার অনেক ভাল স্কোর গড়েছেন রোজি। ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে স্বর্ণপদক করায়ত্ত করতে রোজি গড়েছিলেন ৫৭.৩০৫ পয়েন্ট। তার মানে চার বছরের ব্যবধানে তিনি পয়েন্ট কমিয়ে এনেছেন ০.৮৪।
২০০৮ বেজিং অলিম্পিকেও অংশ নিয়েছিলেন রোজি। সেটাই ছিল তার অভিষেক অলিম্পিক। তবে সেবার ফাইনালে উঠলেও পদক জিততে পারেননি। হয়েছিলেন সপ্তম।
‘খেলাটাকে আমি খুবই ভালবাসি। তবে টানা সাফল্য পাওয়াটা এত সহজ ব্যাপার নয়। এতে সাফল্যের জন্য প্রচুর অনুশীলন করতে হয়েছে আমাকে। স্বর্ণ জিতে দারুণ অনুভূতি হচ্ছে আমার।’ স্বর্ণজয়ের পর এভাবেই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন রোজি। অলিম্পিকসহ বড়মাপের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এ পর্যন্ত ১৯টি পদক জিতেছেন রোজি। ২টি অলিম্পিকে, ১৪টি ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে এবং ৩টি প্যান আমেরিকান গেমসে। এগুলোর ৬টি স্বর্ণ, ৯টি রৌপ্য এবং বাকি ৪টি তাম্রপদক।
বংশানুক্রমিকভাবেই রোজির রক্তে মিশে আছে জিমন্যাস্টিক্স। তার দাদা ছিলেন একজন জিমন্যাস্ট। তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন ১৯৪০ টোকিও অলিম্পিকে। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে সেই আসর অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই দাদাও দেখাতে পারেননি তার জিমন্যাস্টিক্স প্রতিভা। তবে তিনি না পারলেও ৭৬ বছর পর তার নাতনী ঠিকই নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করলেন দ্বিতীয়বারের মতো।
শীর্ষ সংবাদ: