ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

দণ্ডপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন শতাধিক আসামি পলাতক

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৪ আগস্ট ২০১৬

দণ্ডপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন শতাধিক আসামি পলাতক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যাদের বিচার চলছে তাদের বড় একটি অংশ পলাতক। এই সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েইে চলেছে। তদন্ত সংস্থা তদন্ত করতে গিয়ে দেখছে এ সমস্ত মামলার বেশির ভাগ আসামি পলাতক। পলাতক দেখিয়েই তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হচ্ছে। দ-প্রাপ্ত এবং বিচার চলছে এমন শতাধিক আসামি পলাতক রয়েছে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২৬তম রায়ে পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের জন্য স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইজিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সাহায্য নেয়ার কথাও বলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ২৬টি মামলায় পলাতক রয়েছে ২১ আসামি। অন্যদিকে বিচার বা তদন্ত চলছে এমন মামলায় মোট ৬৭ আসামি পলাতক। পলাতক থাকার কারণে যাদের বিরুদ্ধে দ- প্রদান করা হয়েছে তারা আর উচ্চতর আদালতে আপীল করতে পারছে না। ফলে তাদের ট্রাইব্যুনালের দ-ই বহাল থাকছে। এর আগে ট্রাইব্যুনাল স্ব-প্রণোদিত হয়ে একটি আদেশ দিয়েছিলেন। ট্রাইব্যুনালের রায়ে সাজাপ্রাপ্ত এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর পলাতক সকল আসামির গ্রেফতারের উদ্যোগ নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে একটি মনিটরিং সেল গঠন, সেই সঙ্গে আগামী ৪০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়া হয়। আদেশে পুলিশের (ডিআইজি) অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শকের কম পদমর্যাদা নয়- এমন সব (পুলিশ, ডিবি, এসবি ও র‌্যাবের) কর্মকর্তার সমন্বয়ে মনিটরিং সেল গঠন করার জন্য বলা হয়। তারা ওই আসামিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন কিনা, সে সংক্রান্ত প্রতিবেদন ৪০ দিন পর পর ট্রাইব্যুনালকে জানাতে বলা হয়েছে। কিন্তু এরপরও এর কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি। ২০১০ সাল থেকে যাদের বিচার চলছে এমন শতাধিক আসামি পলাতক রয়েছে, যাদের গ্রেফতার করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক দ-প্রাপ্ত পলাতক আসামিরা হলো- আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, আশরাফুজ্জামান খান, চৌধুরী মঈনুদ্দিন, জাহিদ হোসেন খোকন, হাসান আলী, ফোরকান মল্লিক, আশরাফ হোসেন, মুজিবুর রহমান ওরফে আঙ্গুর মিয়া, নাসির উদ্দিনসহ ২১ জন। বিচার ও তদন্ত চলছে এমন পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছে- অধ্যাপক শরীফ হোসেন, আব্দুল মান্নান, আব্দুল বারী, হারুন ও আবুল হাশেম। গাজী মোঃ আব্দুল মান্না, হাফিজ উদ্দিন ও আযহারুল ইসলাম, ইব্রাহিম হোসেন, শেখ মোহাম্মদ মুজিবুর, আজিজ সরদার, কাজী ওহিদুল ইসলাম, আব্দুল খালেক মোড়ল ও মশিয়ার রহমান, আবুল কালাম, মোঃ ইউসুফ, আব্দুল কুদ্দুস, সৈয়দ মোঃ হুসাইন ও জয়নাল আবেদীন, কক্সবাজারের মৌলভী জকরিয়া সিকদার, অলি আহমদ, জালাল উদ্দিন প্রকাশ, সাইফুল প্রকাশ সাবুল, মমতাজ আহম্মদ, হাবিবুর রহমান, আমজাদ আলী, আব্দুল মজিদ প্রকাশ, আঃ শুক্কুর, জাকারিয়া, মৌলভী জালাল, আব্দুল আজিজ ও ইদ্রিস আলী সরদারসহ অনেকে। এদিকে কয়েকটি মামলায় পলাতক আসামিদের বিচার শুরু হচ্ছে। নোয়াখালী জেলার সুধারামের পাঁচজন আসামির মধ্যে গ্রেফতার রয়েছেন- আমির আহম্মেদ ওরফে রাজাকার আমির আলী, মোঃ ইউসুফ, মোঃ জয়নাল আবদিন ও মোঃ আব্দুল কুদ্দুস এবং পলাতক আছেন আবুল কালাম ওরফে এ কেএম মনসুর। কক্সবাজারের মহেশখালীর ১৯ আসামির মধ্যে গ্রেফতারকৃত পাঁচজন হচ্ছেন- এলডিপির নেতা কক্সবাজার চেম্বারের সাবেক সভাপতি সালামত উল্লাহ খান ওরফে আঞ্জুবর ওরফে ‘পঁচাইয়া রাজাকার’, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ রশিদ মিয়া, ওসমান গণি, নুরুল ইসলাম ও বাদশা মিয়া। পলাতকরা হচ্ছেন- রমিজ হাসান, জকরিয়া শিকদার, অলি আহমদ, মোঃ জালাল উদ্দিন, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাবুল, মমতাজ আহম্মদ, হাবিবুর রহমান, আমজাদ আলী, আব্দুল মজিদ, আব্দুল শুক্কুর, মোঃ জাকারিয়া এবং আব্দুল আজিজ। মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার পাঁচ আসামির একটি মামলায় গ্রেফতার আছেন ইউনুস আহমেদ ও ওজায়ের আহমেদ চৌধুরী এবং পলাতক আছেন শামসুল হোসেন তরফদার, নেসার আলী ও মোবারক মিয়া। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের একটি মামলার পলাতক ছয়জন আসামি হচ্ছেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজ, মোঃ রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু, মোঃ আবদুল লতিফ, আবু মুসলেম মোঃ আলী, মোঃ নাজমুল হুদা ও মোঃ আব্দুর রহিম মিয়া।একটি মামলার পলাতক দুই আসামি হচ্ছেন- হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মুড়াকরি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী ও কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলী।
×