ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেট কারাগারের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি ॥ ৮ ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

প্রকাশিত: ০৮:১৩, ২৩ জুলাই ২০১৬

সিলেট কারাগারের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি ॥ ৮ ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

মশিউর রহমান খান ॥ সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের মূল ফটকের সামনে কারারক্ষীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল ইকবাল হাসানের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কারা অধিদফতর। কমিটিকে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে সরেজমিনে তদন্ত করে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীনের কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার কারা অধিদফতর থেকে এ নির্দেশ প্রদান করা হয়। এ ঘটনায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের ৮ নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন জনকণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন সিলেট বিভাগের কারা মহাপরিদর্শক তৌহিদুল ইসলাম, ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল জলিল ও কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ এর জেলার তরিকুল ইসলাম। কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, শনিবার থেকে কমিটি তাদের তদন্তকাজ শুরু করবেন। কমিটি কারারক্ষীদের সঙ্গে কি কারণে বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে বা নিয়মানুযায়ী কারারক্ষীরা তাদের দায়িত্ব পালনে কোন প্রকার অবহেলা রয়েছে কি না? সংঘর্ষে কারারক্ষীদের বা দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের কোন বিশেষ ভূমিকা বা নির্দেশ ছিল কি না। সংঘর্ষে কারা আহত হয়েছে বা কত জন এবং এদের সর্বশেষ অবস্থা কি তা বের করা হবে। এছাড়া জামিন প্রক্রিয়ায় কোন ত্রুটি বা গাফিলতি রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। এর আগে বৃহস্পতিবার সংঘর্ষের পর সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাসুদ পারভেজ মঈন বাদী হয়ে ৬০ জন অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। কমিটি এ মামলার বিষয়বস্তু সম্পর্কেও তদন্ত করবে বলে জানা গেছে। ছাত্রলীগের বহিষ্কৃতরা হলেন- সিলেট জেলা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সহ-সভাপতি হোসাইন আহমদ চৌধুরী, শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক মওদুদ আহমদ আকাশ, উপ গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ফাইয়াজ আহমদ জামিল, সহ-সম্পাদক মাসুম আহমদ মাহি, সরকারী কলেজ ছাত্রলীগ নেতা রুহেল আহমদ, এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা দেলওয়ার হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা ছয়েফ আহমদ (বালুচর) ও এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সৌরভ দাস। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেটের ডিআইজি প্রিজন্স তৌহিদুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে ৫ মামলায় আটক আসামি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি হিরণ মাহমুদ নিপুণের জামিনের কাগজ আদালত থেকে কারাগারে এসে পৌঁছায়। এরপর পুলিশসহ সকল গোয়েন্দা সংস্থার কাছে কোন আটকাদেশ বা নির্দেশনা রয়েছে কি না তা জানতে চাওয়া হয়। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আসতে দেরি হওয়ায় কারাফটকের বাইরে তাকে নিতে আসা কয়েক শত সমর্থক জেলের তালা ভাঙ্গব নিপুণ ভাইকে আনব সেøাগান দিয়ে কারাফটকের ভেতরে ঢুকতে চেয়ে ব্যাপক হট্টগোল করতে থাকে। একপর্যায়ে জেলকোড ভেঙ্গে কারাফটকে অসংখ্য মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশের চেষ্টাকালে কারারক্ষীরা বাধা দিলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরবর্তীতে রিজার্ভগার্ডের কারারক্ষীরা এসে ফটকে অবস্থানকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় তারা কারারক্ষীদের অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে এবং আতঙ্ক ছড়াতে কারা ব্যারাকে কয়েকটি ককটেল ফাটায়। সংঘর্ষে ১৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছে। এছাড়া কয়েকজন সাংবাদিকও আহত হন। বিষয়টি তদন্তে অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
×