ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রত্যাহার দাবি বিএসটিএমপিআইএর

উৎপাদিত বস্ত্রে ১৫% হারে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১৮ জুলাই ২০১৬

উৎপাদিত বস্ত্রে ১৫% হারে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বস্ত্র শিল্পে উৎপাদিত বস্ত্রে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে টেক্সটাইল মিলস ও পাওয়ার লুম শিল্পের শীর্ষ সংগঠন বিএসটিএমপিআইএ। বস্ত্র খাতের জন্য বস্ত্রপল্লী স্থাপন, স্বল্পসুদে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা, ১০ বছরের মধ্যে সমস্ত বস্ত্র শিল্পে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন নিশ্চিত, থ্রাস্ট সেক্টর হিসেবে ঘোষিত বস্ত্র খাতকে অতিসত্বর পুনরায় কার্যকরসহ সংগঠনটি সরকারের কাছে নয় দাবি জানিয়েছে। এসব দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে প্রায় ৫০ লাখ লোক পথে বসবেও বলে জানানো হয়। রবিবার রাজধানীর কাকরাইল ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ সেমিনার হলে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড টেক্সটাইল মিলস এ্যান্ড পাওয়ারলুম ইন্ডাস্ট্রিজ এ্যাসোসিয়েশন (বিএসটি এমপিআইএ) আয়োজিত ‘টেক্সটাইল শিল্পের উন্নয়নে পাবলিক প্রাইভেট ডায়লগ’ অনুষ্ঠানে সংগঠনের পক্ষে এসব দাবি জানানো হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, সিনিয়র সচিব মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া, এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ ইন্সপায়ার্ড প্রকল্পের টিম লিডার আলি সাবেত। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের পরিচালক শাজাহান আলী ভূঁইয়া, হায়দার আলী, আবু হাসান মনি ও আব্দুল হাকিম প্রমুখ। সংগঠনের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে বিএসটিএমপিআইএ সভাপতি আজিজুল হক বলেন, চলতি বাজেটে বস্ত্রবয়ন শিল্পে উৎপাদিত সকল ধরনের বস্ত্রের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করেছে অথচ ১৯৯১ সালে ভ্যাট আইন প্রত্যাবর্তনের পর থেকে বস্ত্র শিল্পের দুরবস্থার কথা চিন্তা করে সরকার বস্ত্র শিল্পের ওপর কোন রকম ভ্যাট আরোপ করেনি। ১৫ শতাংশ ভ্যাট বস্ত্রবয়ন শিল্পের মালিকরা কোন অবস্থাতেই দিতে পারবে না। আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার না করলে দেশের অধিকাংশ ছোট ও মাঝারি বস্ত্রবয়ন শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে এবং লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। বিদেশী কাপড়ে বাজায় সয়লাব হয়ে যাবে। ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, আমাদের দেশের ব্যাংকগুলো বস্ত্র খাতে বিনিয়োগ করতে মোটেও আগ্রহী নয়। ব্যাংকের সুদের হারও অত্যধিক। ব্যাংকের বর্তমানে প্রচলিত ১৪ শতাংশ সুদে বস্ত্র শিল্প নয় কোন শিল্পই করা সম্ভব হবে না। বিশেষভাবে বস্ত্রশিল্পের জন্য প্রয়োজনে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ অথবা কোন স্বল্প সুদে বিদেশী অর্থায়ন দরকার। তিনি আরও বলেন, বস্ত্রশিল্পের উন্নয়নের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার অত্যাবশক। অতিসত্বর পাওয়ারলুমে রিপ্লেসমেন্ট দরকার। উন্নতমানের কাপড় অর্থাৎ রফতানিযোগ্য কাপড় উৎপাদনের জন্য অতিসত্বর আধুনিক রিপিয়ারলুম, এয়ারজেটলুম ও ওয়াটারজেটলুম স্থাপন অত্যন্ত প্রয়োজন। আধুনিক লুম চালানোর জন্য আমাদের দেশে প্রচুর দক্ষ জনশক্তি রয়েছে। রফতানিযোগ্য কাপড় তৈরি করতে পারলে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিজ হিসেবে আমরা পোশাক শিল্পের চাহিদা মেটাতে পারব এবং দেশের হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাতে পারব। এমনকি এ খাতে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করা সম্ভব হবে। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, বস্ত্রশিল্পের উন্নয়নে সরকার বদ্ধপরিকর। ভ্যাট প্রত্যাহার সিদ্ধান্তে যা করা দরকার, আমরা তাই করব। অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, বিশ্বের ইতিহাসে শিল্পোন্নয়নে বস্ত্র খাতের অবদান গুরুত্বপূর্ণ।
×