ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্লট বাতিলের সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী

যুদ্ধাপরাধীদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তিও ক্রোক করার দাবি

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১৫ জুলাই ২০১৬

যুদ্ধাপরাধীদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তিও ক্রোক করার দাবি

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে তাদের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে দেয়া প্লট বাতিলের সিদ্ধান্ত একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ঢাকায় এ তথ্য প্রকাশ করে বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে যারা প্লট পেয়ে ডেভেলপারকে দিয়েছেন সেই ডেভেলপাররা তাদের অংশ পাবে। বাকি অংশ সরকার নিয়ে নেবে। কিন্তু মন্ত্রী কতসংখ্যক যুদ্ধাপরাধীর প্লট বাতিল করা হয়েছে তা উল্লেখ করেননি। এদিকে এ সিদ্ধান্ত প্রকাশ করার পর দাবি উঠেছে ইতোমধ্যে যাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনা প্রমাণিত হয়েছে তাদের প্লট, ফ্ল্যাট, স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করার এখনই সময়। যুদ্ধাপরাধীদের অনেকে স্বাধীনতার পর নানাভাবে নানা পথে টাকার কুমির বনে গেছেন। যার মধ্যে চট্টগ্রামের সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং মীর কাশেম আলী প্রথম কাতারে রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আরও অনেক যুদ্ধাপরাধী আছেন যারা বিত্তের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। চট্টগ্রামে সাকাচৌর মরহুম পিতা ফজলুল কাদের চৌধুরী (ফকাচৌ) শীর্ষ স্থানীয় একজন রাজাকার ছিলেন। তিনি এদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পালানোর সময় তিনি ধরা পড়ে জেলে যান। কিন্তু বিচারের আগেই জেলে তার মৃত্যু ঘটে। চট্টগ্রাম, ঢাকা শহরে এবং তাদের গ্রামের বাড়ি রাউজানে এ যুদ্ধাপরাধী পিতা-পুত্রের অঢেল সম্পত্তি রয়েছে। রয়েছে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। অনুরূপভাবে যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচারে ফাঁসির দ-ে দ-িত মীর কাশেম আলী কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক বলে ইতোমধ্যে তথ্য প্রকাশ হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতে তার ফাঁসির আদেশ বহাল রয়েছে। সে রায় কার্যকরের অপেক্ষায়। তার অর্জিত সম্পত্তি পাহাড়সম। আর নগদ টাকার পরিমাণ কত তা ব্যাংকের হিসাব মিলিয়ে দেখলেই বেরিয়ে আসবে। এসব যুদ্ধাপরাধীর পক্ষে যুদ্ধাপরাধ বিচার বাধাগ্রস্ত করতে বিদেশে যেমন লবিষ্ট নিয়োগ করা হয়েছে তেমনি দেশে বিভিন্ন জঙ্গী গ্রুপের সদস্যদের অর্থায়ন করা হয়েছে বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। উদ্দেশ্য বিচার বানচাল করা। তবে সরকার অনড় থাকায় সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে যুদ্ধাপরাধী বিচার এগিয়ে নিচ্ছে এবং একে একে রায় বাস্তবায়ন হচ্ছে। এদের অপতৎপরতা শেষ হবে না। তাদের উত্তরাধিকাররা সুযোগ পেলেই ছোবল মারতেই থাকবে। সঙ্গত কারণে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গীপনায় জড়িতদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। যুদ্ধাপরাধ ও জঙ্গীবাদে জড়িত থাকার অভিযুক্তদের অনেকেই রাতারাতি তাদের সম্পত্তির মালিকানা পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে স্থানান্তর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ঘোষণা বর্তমান সরকার দেয়ার পরই অনেকে এ কাজ সম্পন্ন করেছেন।
×