ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দ ফাহিম মুনয়েমের ইন্তেকাল

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২ জুন ২০১৬

সৈয়দ ফাহিম মুনয়েমের ইন্তেকাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফাহিম মুনয়েম আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি-রাজিউন) বুধবার ভোর সোয়া ৬টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গুলশানের বাসায় তাঁর মৃত্যু হয়। আগামী মাসে তার বয়স হতো ৬৩ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন ছেলে রেখে গেছেন। মাছরাঙার একজন সহকর্মী জানান, বুধবার ফাহিম মুনয়েমের মরদেহ স্কয়ার হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুই ছেলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার পর জানাজা ও দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। সৈয়দ ফাহিম মুনয়েমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও তথ্য সচিব মরতুজা আহমদ। এছাড়াও জাতীয় প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন, সামাজিক, রাজনৈতিকসহ পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে। ফাহিম মুনয়েমের জন্ম ১৯৫৩ সালে, ঢাকায়। বাবা সৈয়দ নুরউদ্দিন এক সময় দৈনিক সংবাদের নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবস্থাপনায় লেখাপড়া করে আসার পর ১৯৮২ সালে সংবাদে যোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে ফাহিম মুনয়েমের সংবাদপত্র জগতে প্রবেশ। এরপর মর্নিং সান ও ইউএনবিতে কাজ করেছেন তিনি, পালন করেছেন ডেইলি স্টারের ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের দায়িত্ব। ডেইলি স্টারে থাকা অবস্থাতেই ২০০৭ সালে তখনকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদের প্র্রেস সচিবের দায়িত্ব পান তিনি। তার আগে ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের আমলে জাপানে বাংলাদেশ দূতবাসের প্রেস কাউন্সিলর করা হয়েছিল তাকে। ২০১০ সালে মাছরাঙা টেলিভিশনের যাত্রা শুরুর সময় তিনি যোগ দেন প্রধান নির্বাহী হিসেবে। গত ছয় বছর তার নেতৃত্বেই সম্প্রচার চালিয়ে আসছিল বেসরকারী এই টেলিভিশন চ্যানেলটি। সহকর্মী সংবাদকর্মীদের অনেকের কাছে ফাহিম মুনয়েম ‘টিপু ভাই’ হিসেবেই বেশি পরিচিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর সহকর্মীদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ‘টিপু ভাই’ নামে শোক জানাতে দেখা গেছে। অনেকেই তাঁর সঙ্গে কর্মজীবনের অনেক স্মৃতি তুলে ধরেছেন। ফাহিম মুনয়েম ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য। তার মৃত্যুতে আলাদা বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেছেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী বিএনপি নেতা এম শামসুল ইসলাম ও তরিকুল ইসলাম। এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের দুই অংশের মহাসচিব ওমর ফারুক, এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, শাবান মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। শোক প্রকাশ করেছে রুর‌্যাল জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশন (আরজেএফ) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সাংবাদিক সৈয়দ ফাহিম মুনয়েমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এক শোকবাণীতে স্পীকার বলেন, সৈয়দ ফাহিম মুনয়েমের মৃত্যুতে দেশ একজন বিশিষ্ট সংবাদিককে হারালো। তার মৃত্যু দেশের গণমাধ্যমের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। শোক জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। তাঁর মৃত্যুতে ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বী মিয়া এবং হুইপ আ স ম ফিরোজও শোক জানিয়েছেন। এদিকে সৈয়দ ফাহিম মুনয়েমের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেসবুকে তাকে লেখা ‘খোলা চিঠি’ প্রত্যাহার করে নিলেন সঙ্গীতশিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মী মাকসুদুল হক। বুধবার নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এই তথ্য জানান তিনি। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মান প্রশ্নবিদ্ধ করে মাছরাঙা টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রতি প্রচারিত প্রতিবেদন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নাগরিক মহলে জোর সমালোচনা হয়। এরই অংশ হিসেবে সঙ্গীতশিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মী মাকসুদুল হক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মাছরাঙার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফাহিম মুনয়েমের বরাবরে ইংরেজীতে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেন।
×