ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আইপিএল ॥ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে হায়দরাবাদ চ্যাম্পিয়ন

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৩০ মে ২০১৬

আইপিএল ॥ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে হায়দরাবাদ চ্যাম্পিয়ন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হায়দরাবাদ নাকি ব্যাঙ্গালুরু- কে হবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (আইপিএল) চ্যাম্পিয়ন? দু’দলের জন্যই প্রথমবার শিরোপা জয়ের হাতছানি। তবে নিজেদের মাঠ এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে খেলা, তাই স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা এগিয়েই ছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। শেষ পর্যন্ত বিরাট কোহলির নেতৃত্বে ২০০৯ ও ২০১১ সালে ব্যর্থতার পর আবারও রানার্সআপ হয়েছে দলটি। আইপিএল ফাইনালের ইতিহাসে সর্বাধিক রান করে সাইনরাইজার্স হায়দরাবাদ ৮ রানে হারিয়েছে তাদের। নবম আসরে নিজেদের প্রথম শিরোপা জিতেছে হায়দরাবাদ। প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২০৮ রান তুলেছিল হায়দরাবাদ। জবাবে ক্রিস গেইল ও বিরাট কোহলির ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পরও ভুবনেশ্বর কুমার ও মুস্তাফিজুর রহমানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৭ উইকেটে ২০০ রান করতে সক্ষম হয় ব্যাঙ্গালুরু। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি ফেয়ার প্লে ট্রফিও জিতে নেয় হায়দরাবাদ। আর পুরো আসরে দলের বোলিং বিভাগকে নেতৃত্ব দেয়া তরুণ বাংলাদেশী পেসার মুস্তাফিজ হয়েছেন আইপিএলের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়। তিনি ১৬ ম্যাচে নিয়েছেন ১৭ উইকেট ৬.৯০ ইকোনমিতে। পুরো আসরেই মিতব্যয়ী বোলিং করে সবার কাছে প্রশংসিত হয়েছেন ২০ বছর বয়সী এ বাঁহাতি বাংলাদেশী। নিকট অতীতটাই বড় হিসাব হয়ে উঠেছিল ফাইনালের টসে। আগে ব্যাটিং বেছে নেয় হায়দরাবাদ। কারণ প্রাথমিক পর্বে দু’দলের দুই মোকাবেলায় আগে ব্যাটিং করা দলটিই জিতেছে। সিদ্ধান্তটা খারাপ হয়নি হায়দরাবাদের। আর অন্যতম পেসস্তম্ভ মুস্তাফিজুর রহমান ইনজুরি কাটিয়ে একাদশে। আর ফাইনাল ম্যাচের স্নায়ুচাপটাই অন্যরকম। টার্গেট নিয়ে ব্যাটিং করা কঠিন। শুরুটা দারুণ করেছেন ওয়ার্নার ও শিখর ধাওয়ান। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই ৫৯ রান তুলে ফেলেন তারা। অবশ্য এরপরই বোলিং করতে এসে যুবেন্দ্র চাহাল ফিরিয়ে দেন ধাওয়ানকে। তিনি ২৫ বলে করেছিলেন ২৮। তবে উদ্বোধনী জুটিতে আসা দ্রুতগতির ৬৩ রান বড় সংগ্রহের ভিত দিয়েছে হায়দরাবাদকে। আর ওয়ার্নার ব্যাট হাতে জ্বলে উঠে ৩৮ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৬৯। তার বিদায়ের পরও ব্যাঙ্গালুরু রানের পাহাড় গড়ে বেন কাটিংয়ের তা-বে। তিনি মাত্র ১৫ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৩৯ রানের হার না মানা ইনিংস উপহার দেন। যুবরাজ সিং ২৩ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৩৮ রানের কার্যকর ইনিংস উপহার দেন। ৭ উইকেটে ২০৮ রান করে হায়দরাবাদ। বিশাল টার্গেটও ক্ষুদ্র হয়ে যায় যখন গেইল ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন। তিনি জ্বলেও উঠলেন। কোহলি অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে তাঁকে সঙ্গ দিলেন। রীতিমতো তা-ব চালিয়ে গেইল ৩৮ বলে ৪ চার ও ৮ ছক্কায় যখন ৭ রান করে ফিরে যান ততক্ষণে ১১৪ রানের জুটি হয়েছে মাত্র ৬৩ বলে। সেই ঝড়ের মধ্যেও মুস্তাফিজ বোলিংয়ে এসে মাত্র ৪ রান দেন নিজের প্রথম ওভারে। দারুণ বোলিং করতে থাকা এ বাঁহাতি ১৭তম ওভারে শেন ওয়াটসনেরও উইকেট তুলে নেন। কিন্তু সে ওভারে ১০ এবং ১৯তম ওভারে ১১ রান দেন মুস্তাফিজ। এর আগেই কোহলিও ৩৫ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৫৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন বারিন্দার স্রানের বলে বোল্ড হয়ে। এরপর আর কোন ব্যাঙ্গালুরু ব্যাটসম্যান সুবিধা করতে পারেননি। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৮ রানের। কিন্তু ভুবনেশ্বর মাত্র ৯ রান দেন। ৭ উইকেটে ২০০ রান করতে সক্ষম হয় ব্যাঙ্গালুরু। প্রথমবারের মতো শিরোপা জয় করে হায়দরাবাদ। ব্যাঙ্গালুরু অধিনায়ক কোহলি ৮১.০৮ গড়ে ৯৭৩ রান করে আসরের সেরা খেলোয়াড় হয়ে জিতেছেন অরেঞ্জ কাপ। স্কোর ॥ সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ইনিংস- ২০৮/৭; ২০ ওভার (ওয়ার্নার ৬৯, কাটিং ৩৯*, যুবরাজ ৩৮, ধাওয়ান ২৮; জর্ডান ৩/৪৫, অরবিন্দ ২/৩০)। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ইনিংস- ২০০/৭; ২০ ওভার (গেইল ৭৬, কোহলি ৫৪, বেবি ১৮*; কাটিং ২/৩৫, বিপুল ১/১৭, মুস্তাফিজ ১/৩৭)। ফল ॥ সাইনরাইজার্স হায়দরাবাদ ৮ রানে জিতে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন। ম্যাচসেরা ॥ বেন কাটিং (হায়দরাবাদ)। সেরা খেলোয়াড় ॥ বিরাট কোহলি (ব্যাঙ্গালুরু)।
×