ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেখার কেউ নেই

বাঁকখালী ভরাট হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৩:২২, ৬ মে ২০১৬

বাঁকখালী ভরাট হচ্ছে

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ এবার বাঁকখালী নদীতে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য মহাযজ্ঞ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বড় বড় স্তূপ করা হয়েছে ইট আর কনক্রিটের। এস্কেভেটর দিয়ে মাটি ও ময়লা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে বাঁকখালী নদী। শীঘ্রই ভবনের নির্মাণ কাজও শুরু হবে বলে জানা গেছে। এভাবে প্রকাশ্যে বাঁকখালীতে দখলদারদের মহাযজ্ঞ চললেও খবর নেই প্রশাসন ও পরিবেশ অধিফতরের। সূত্রে জানা গেছে, শহরের ঐতিহ্যবাহী লালদীঘি খননের মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে বাঁকখালী নদীর একটি বিশাল অংশ। টানা তিন সপ্তাহ ধরে ডাম্পার দিয়ে মাটি ফেলে দখলদার চক্র বাঁকখালী নদী দখল করলেও প্রশাসন বা পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষ থেকে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এ পর্যন্ত। যার কারণে ভরাটকৃত জায়গায় বর্তমানে ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত দুই দিন ধরে এস্কেভেটর দিয়ে দখলদাররা নতুন করে নদী ভরাট করেছে। সূত্র মতে, সময়ের ব্যবধানে নাব্য হারিয়ে সঙ্কীর্র্ণ হয়ে পড়ে বাঁকখালী নদী। এর ফলে ধীরে ধীরে ভরাট হয়ে যাচ্ছে বাঁকখালী নদীর দক্ষিণ পার। জেগে ওঠা নদীর এপারে কুদৃষ্টি পড়ে অবৈধ দখলদারদের। পেশকারপাড়া, নুরপাড়া, বদরমোকামসহ কয়েকটি এলাকার দখলদার সিন্ডিকেট করে একের পর দখল করে স্থাপনা তৈরি করে চলছে। পরে জায়গাসহ ওসব স্থাপনা বিক্রিও করে দেয়া হচ্ছে। তবে মাঝে মধ্যে প্রশাসনও ওসব অবৈধ দখলদারের স্থাপনায় ঢুঁ মারে। তড়িঘড়ি দু’একটি স্থাপনায় হস্তক্ষেপও করে। কিন্তু সেগুলো শুধু ফটোসেশনই। না হলে একের পর এক দখলদারের তালিকা তৈরি করলেও উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত আলোর মুখ দেখে না। গত কয়েক বছর ধরে বাঁকখালী নদীর দক্ষিণপারের কস্তুরাঘাট পুরাতন পোনা মার্কেট এলাকায় পৌরসভার বর্জ্য ফেলা শুরু করে। এতে আরও ভরাট হয়ে ওঠে বাঁকখালী নদীর পার। বর্জ্য ফেলার সুযোগকে কাজে লাগায় বাঁকখালীর দখলদাররা। বাঁকখালী নদী রক্ষায় ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ‘বেলা’র পক্ষ থেকে হাইকোর্টে একটি মামলা করা হয়। ওই মামলার প্রেক্ষিতে বাঁকখালী নদীর বর্জ্য ফেলা বন্ধসহ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে। ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি ওই রুলের শুনানিতে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে এ বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে কক্সবাজার পৌর মেয়রকে নির্দেশ দেয় আদালত। একই সঙ্গে এ বিষয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কিন্তু বাঁকখালী উচ্ছেদে এখনও দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
×