ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতুর ওপারেই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের স্থান বিবেচনায় ॥ মেনন

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৩ এপ্রিল ২০১৬

পদ্মা সেতুর ওপারেই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের স্থান বিবেচনায় ॥  মেনন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ বিমান পর পর ছয় বছর লোকসান দেয়ার পর গত বছর থেকে লাভের মুখ দেখেছে। এ ছাড়া পদ্মা সেতুর ওপারেই বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর নির্মাণের স্থান বিবেচনায় রয়েছে। ইতোমধ্যে নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে । সেই সঙ্গে পদ্মার ওপারে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নামে দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। এ জন্য চারটি স্থানে প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ২০১৮ সালের মধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিকে উন্নীত হবে। বেসামরিক বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব তথ্য প্রকাশ করেন। ডিআরইউর সাগর-রুনী মিলনায়তনে মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাশেদ খান মেনন বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প, বিমান পরিবহন বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়েও খোলামেলা কথা বলেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি জামাল উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদসহ ইউনিটির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ বিমান বর্তমানে লাভজনক প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, বিমানকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি করার পর ৬ বছর ক্রমাগত লোকসান হচ্ছিল। গত বছর থেকে বিমান লাভের মুখ দেখছে। এ বছরও আমরা লাভ করব। লোকসানের মূল কারণ ছিল বিমানের জাহাজগুলো পুরনো। সে কারণে অনেক রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন অভ্যন্তরীণ রটে দিনে দুটি করে ফ্লাইট চলছে। রাশেদ খান মেনন বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, এ খাতের উন্নয়নে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যে পর্যটন খাতে সাড়ে ৩ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। দেশে পর্যটক আকৃষ্ট করতে আগামী মাস থেকে দেশে ও দেশের বাইরে প্রচার চালানোর কথা উল্লেখ করেন তিনি। মেনন বলেন, একজন পর্যটক এলে ১১ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়। আমরা চীন, থাইল্যান্ড, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া থেকে পর্যটক আকৃষ্ট করতে চাই। সম্ভাবনার দিক পোশাক শিল্পের পরই আমাদের পর্যটন খাত হতে পারে। যদিও বাংলাদেশ এখনও পর্যটনের দেশ হিসেবে পরিচিতি পায়নি। মালয়েশিয়া, থাইদের সঙ্গে পর্যটন বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমইউ) স্বাক্ষর হয়েছে। তিনি সরকারের বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর আমরা অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক যাত্রা পথে ফিরে আসতে পেরেছি। রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিতে ফিরেছি। যদিও কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রয়ে গেছে। সংবিধান সংশোধনের সময় আমরা এর বিরোধিতা করেছি। রাষ্ট্রীয়ভাবে জঙ্গীবাদ-মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতার যে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হতো তা দূর হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের উত্তরে রাশেদ খান মেনন নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে বলেন, নির্বাচন কমিশন এখন যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে সেটি আগেই নেয়ার দরকার ছিল। আমি মনে করি নির্বাচন কমিশন যথাযথভাবে পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এ সময় তিনি ব্যাংকগুলোতে লুটপাটের ঘটনার সমালোচনা করেন বলেন, ব্যাংকগুলোতে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে, যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের রিভার্জ থেকে চুরির টাকা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে। কিছু টাকা পাওয়ার আশ্বাসও ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। বিএনপি-জামায়াতের সহিংস আন্দোলনের তীব্র সমালোচনা করেন মেনন। বলেন, তারা যেভাবে জ্বালাও, পোড়াও করেছে মানুষ হত্যা করেছে সেটি আমরা দেখেছি। আমি মনে করি আমরা যদি সেভাবে রাজনৈতিক উদ্যোগ নিতাম তাহলেও মোকাবেলা করতে পারতাম। এ ছাড়া দেশে এখনও দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি মন্তব্য করে রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বেশ কিছু ক্ষেত্রে সরকার উপযুক্ত পদক্ষেপ নিলেও দুর্নীতি দূর করা এখনও সম্ভব হয়নি। দুর্নীতি পুরোপুরি দূর করতে পারলে প্রবৃদ্ধি আরও বেড়ে যেত এবং দেশ আরও এগিয়ে যেত। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের উত্তরে রাশেদ খান মেনন নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে বলেন, নির্বাচন কমিশন এখন যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে সেটি আগেই নেয়ার দরকার ছিল। আমি মনে করি নির্বাচন কমিশন যথাযথভাবে পদক্ষেপ নিতে পারেনি। সাংবাদিক শফিক রেহমানের গ্রেফতার সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শফিক রেহমান আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব, সন্দেহ নেই। কিন্তু তার সম্পর্কে পত্র-পত্রিকায় যেসব খবর দেখছি তা যদি সত্যি হয় তাহলে আমাদের বোধ-বুদ্ধি হারিয়ে ফেলতে হয়।
×