ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাউবোর ৩৩ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ১৬ এপ্রিল ২০১৬

পাউবোর ৩৩ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম

নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ, ১৫ এপ্রিল ॥ শাল্লা উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাওবো) ৩৩টি প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব প্রকল্পের কোন কোন বাঁধে কাজ একেবারেই হয়নি বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। আবার কোন কোন বাঁধে নামমাত্র মাটি ফেলা হয়েছে, যা নিয়ে প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটির (পিআইসি) সভাপতি ও অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। এ সময় জনরোষে পড়ে পিআইসি সভাপতি ও সদস্যরা গা-ঢাকা দিয়েছে। ফলে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতেই বাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকছে হাওড়ে। এর পর স্থানীয় কৃষকরা এলাকার মসজিদে মাইকিং করে নিজ উদ্যোগে নিজ খরচে পাকা বোরো ফসল রক্ষায় নিজস্ব শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁধ রক্ষা করেছেন। জানা যায়, সুনামগঞ্জের হাওড় এলাকায় আগাম বন্যা প্রতিরোধ প্রকল্পের অধীনে পিআইসি স্থানীয় আনন্দপুর গ্রামের পার্শ¦বর্তী মাদারিয়ার কুড় পাউবোর ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের বিপরীতে আট লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়, যার প্রকল্প সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য মিহির কান্তি রায়। কাজটি ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও এখনও কাজ চলছে বলে জানান তিনি। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, মাদারিয়া কুড় পাউবোর বাঁধে শত শত কৃষক রাঁধ রক্ষার কাজ করছেন এবং বর্ণিত প্রকল্প সভাপতি ও সেক্রেটারির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ মানববন্ধন করেছেন। এ সময় এলাকার কৃষকরা বলেন, উক্ত বাঁধে মাত্র দেড় থেকে দুই লাখ টাকার কাজ করে বাকি বরাদ্দকৃত টাকা প্রকল্প সভাপতি মিহির কান্তি রায় আত্মসাত করেছেন। প্রকল্প চেয়ারম্যান এ সময় কৃষকদের রোষানলে গা ঢাকা দিয়েছেন। অপরদিকে পাউবোর বাস্তবায়নাধীন এ উপজেলার বিভিন্ন উপ-প্রকল্পের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ/মেরামত কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন কৃষকরা। এর মধ্যে অত্যধিক ঝুকিপূর্ণ বাঁধসমূহ হলোÑ সহদেবপাশা, জুয়ারিয়া, শ্রীহাইল জুয়ারিয়া, কান্দখলা, আছানপুর, খলাপাড়া, সরসপুর, চাপ্টা, মাউতি। এদিকে উপজেলার সবকটি ফসল রক্ষা বাঁধে সরেজমিন পরিদর্শনকালে এলাকার কৃষকগণের মুখে মুখে একই কথা শুনা যায় যে, পিইসির সভাপতিগণ দলীয় ক্ষমতার দোহাই দিয়ে প্রকল্পের কাজ না করেই বরাদ্দকৃত টাকা পাউবোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ও প্রকল্পের সভাপতি মিহির কান্তি রায় বাঁধ নির্মাণকাজে অনিয়মের দায় স্বীকার করে বলেন, আমারা তো আসলে প্রকৃতিগত মানুষ, আমরা নির্দোষ না। তবে চেষ্টা করছি যতটুকু দেশের জন্য কাজ করা যায়। শতভাগ কাজ হয়নি স্বীকার করে বলেন, আমরা কাজ করছি, এখন পর্যন্ত কাজে আছি। জনরোষে পলায়ন করা বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, দেশের (এলাকার) স্বার্থে আমরা যে কোন অপবাদ নিতে পারি। উল্লেখ্য, এ বছর সুনামগঞ্জ জেলার ৪২টি হাওড়ের ১৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ করছে ২৫১টি পিআইসি।
×