যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর, ২২ জানুয়ারি ॥ কেশবপুরে পাষ- স্বামী তার স্ত্রী জেসমিনকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। শুক্রবার সকালে যৌতুকের জন্য মারপিটের এক পর্যায়ে ঘরের ভেতর আটকিয়ে স্বামী রবিউল ইসলাম রবি গৃহবধূ জেসমিনের শরীরে পেট্রোল ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। চিৎকার করে জেসমিন ঘর থেকে বাইরে এলে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে কেশবপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। ডাক্তার বলেছে, জেসমিনের শরীরের প্রায় ৩০ ভাগ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত জেসমিন হাসপাতালে জানান, প্রায় আট বছর আগে কেশবপুরের কুশলদিয়া গ্রামের শেখর আলী মোড়লের ছেলে রবিউল ইসলাম রবির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। লামিয়া নামে ছয় বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে তাদের। বিয়ের পর থেকে দফায় দফায় জেসমিনের পরিবার রবিউলকে যৌতুক হিসেবে অনেক টাকা দিয়েছে। তারপরও রবিউল জেসমিনকে কন্যাসহ ডুমুরিয়া থানার আরশনগর মৃত পিতার বাড়ি তাড়িয়ে দেয়। এরপর সে আরও পাঁচটি বিয়ে করে। দেড় মাস আগে আবারও এক লাখ টাকা নিয়ে জেসমিনকে আবার নিয়ে আসে। সেই টাকা দিয়ে রবিউল মোটরসাইকেল কিনে ভাড়া চালায়। জেসমিনের জা শিরিন জানায়, পরের বার আনার পনেরো দিন পর থেকেই জেসমিনের ওপর আবার নির্যাতন শুরু করে রবিউল। জেসমিন জানান, রবিউল তার অন্য বউ মরিয়ামকে আবারও বাড়ি আনার জন্য তার উপর টাকার চাপ দিয়ে প্রতিদিনই মারপিট করে আসছিল। শুক্রবার সকালে মারপিট করতে করতে রবিউল আমাকে বলে ‘তুই চলে যা’ ‘তোর চেয়ে মরিয়ম আমাকে আরও বেশি টাকা দেবে’। এসময় জেসমিন যেতে রাজি না হওয়ায় মারপিট করতে করতে তাকে ঘরের ভেতর নিয়ে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে পুড়ে জেসমিনের মুখ, গলা, কাঁধ ও বুক ঝলসে গেছে। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে জেসমিন তার ওপর বর্বর নির্যাতনের বর্ণনা দেবার সময় বার বার বাঁচার আকুতি জানিয়ে হাওমাও করে যখন কাঁদছিলেন তখন তার পাশে ছয় বছরের ছোট মেয়ে লামিয়া মা মা বলে বিলাপ করছিল। হাসপাতালে ডাক্তার আনোয়ার হোসেন জানান, জেসমিনের শরীরের প্রায় ৩০ ভাগ পুড়ে গেছে। থানার দারোগা আব্দুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে জেসমিনের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে হত্যার চেষ্টার সত্যতা পেয়েছি।