স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ হিল্লা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় প্রায় ২৫ দিন ধরে এক পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রাম্য মাতবরদের রোষানলে পড়ে সমাজচ্যুত হয়ে পড়া পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। সামাজিক কোন অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণ বা যেতে না দিয়ে পরিবারটিকে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার ইসবপুর গ্রামের বাসিন্দা বেসরকারী সার্ভেয়ার মকবুল হোসেন (৫৬) মনোমালিন্য ও কথাকাটাকাটির কারণে রাগের মাথায় স্ত্রী সফুরা বেগমকে (৫১) গত বছরের ১৯ অক্টোবর তালাক দেন। এই দম্পতির ৫ মেয়ে ও ২ ছেলে রয়েছে। পরে ছেলেমেয়েরা বিষয়টি মিটিয়ে তাদের মাকে ঘরে আনতে বলে। মকবুল হোসেন ভুল বুঝতে পেরে কয়েকজনের সঙ্গে পরামর্শ করে চলতি বছর ১৫ জুন কাজী অফিসে গিয়ে সফুরা বেগমকে পুনরায় বিয়ে করে সংসারে আনেন। আর এতেই ওই পরিবারটি গ্রাম্য মাতবরদের রোষানলে পড়ে। মাতবরদের নির্দেশÑ স্ত্রীকে হিল্লা বিয়ে না দিয়ে তাকে নিয়ে মকবুল হোসেন সংসার করতে পারবে না। মকবুল হোসেন জানিয়েছেন, গত ৫ ও ৭ জুলাই মাতবরদের মধ্যে আজাহার ও হামিদ বাড়িতে এসে স্ত্রীকে হিল্লা বিয়ে দেয়ার জন্য বলে। অন্যথায় সে সমাজে থাকতে পারবে না জানিয়ে দেয়। এর আগে গ্রাম্য মাতবররা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে।
গ্রাম্য মাতবরদের মধ্যে রয়েছে- জমসেদ আলী, একাব্বর আলী, সাদেক আলী, সাইদুল ইসলাম আজাহার ও আব্দুল হামিদ। মাতবররা এক মাদ্রাসা থেকে ফতোয়া এনে তা বাস্তবায়ন করে। একঘরে হওয়ার শিকার মকবুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বাড়িতে এসে গ্রাম্য মাতবররা সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়ার পর থেকে তিনি ও পরিবারের সদস্যরা অসহায় অবস্থায় রয়েছেন।
গ্রামের কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে ভয়ে তাদের কেউ দাওয়াত দিচ্ছেন না। এমনি মসজিদে পর্যন্ত যেতে তিনি ভয়ে রয়েছেন। এ ব্যাপারে গ্রাম্য মাতবরদের একজন জমসেদ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, একঘরে করে রাখার বিষয়টি সঠিক না। তবে হিল্লা বিয়ে দেয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং মকবুল হোসেনকে বিষয়টি জানানোর কথা স্বীকার করে বলেন, এ নিয়ে কোন চাপ দেয়া হয়নি, পরামর্শ করা হয়েছে। তিনি মাদ্রাসা থেকে ফতোয়া আনার বিষয়টিও অস্বীকার করেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: