ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে জিসান হত্যার ৭ আসামি আটক

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২৮ জুলাই ২০১৫

মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে জিসান হত্যার ৭ আসামি আটক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে রাজধানীর ধানম-িতে এসএসসি পরীক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম জিসানকে (১৭) হত্যাকা-ের প্রধান সন্দেহভাজন আসামিসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। আড়াই মাস আগে ধানম-ি লেকের রফিক চত্বরে তাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- সন্দেহভাজন মূল আসামি মেহেদী হাসান (২১), শরীফ হোসেন (২১), মোঃ ইমন (২১), হাসান আহম্মেদ জনি (২০), আসিফ ইকবাল অনিক (২০), অমিত হাসান (২১) ও ওয়াসিফ উল্লাহ গৌরব (২২)। পুলিশ জানায়, তাদের দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এরা সবাই পেশাদার ছিনতাইকারী বলে দাবি করেছে পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, জিসানকে হত্যার পর হত্যাকারীরা তার মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায়। ওই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি-দক্ষিণ) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) রাজীব আল মাসুদ জানান, মোবাইল ফোন ছিনতাই কেন্দ্র করে গত ১২ মে রাত আটটার দিকে কে বা কারা ধানম-ি লেকের রফিক চত্বরে জিসানকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে ফেলে যায়। প্রথমে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ধানম-ির বাংলাদেশ মেডিক্যাল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। দু’দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১৪ মে রাত দুটোর দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিসান মারা যান। এডিসি রাজীব আল মাসুদ আরও জানান, দিন ১৫ মে ঘটনায় নিহত জিসানের বাবা আজহার মুন্সী বাদী হয়ে ধানম-ি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। তিনি জানান, ১৪ জুন মামলাটি ধানম-ি থানা থেকে উচ্চতর তদন্তের জন্য ডিবির দক্ষিণ বিভাগকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর জিসানের ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ডিবি দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদের নির্দেশনায় এবং এডিসি রাজীব আল মাসুদের তত্ত্বাবধানে সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার নূর আলম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়। এরই সূত্র ধরে রবিবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা অভিযান চালানো হয়। পরে ছাত্র জিসান খুনের ঘটনায় ওই সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। কী কারণে জিসানকে হত্যা করা হয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আসল ঘটনা জানা যাবে। তবে খুনীরা জিসানকে আগে থেকে চিনতেন না বলে জানান অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রাজীব আল মাসুদ। তিনি আরও জানান, গ্রেফতারের সময় জিসানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও গোয়েন্দা পুলিশ উদ্ধার করে, যে ফোনটি গত ১২ মে জিসানকে হত্যার পর খুনীরা নিয়ে যায়। নিহত জিসানের বাবা আজহার মুন্সী জানান, তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরে। তারা রাজধানীর আদাবরে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। জিসান গোপালগঞ্জে বোনের বাসায় থেকে পড়াশোনা করতেন। গোপালগঞ্জ এম এম মডেল হাইস্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা শেষে জিসান ঢাকায় বেড়াতে আসে। তিনি জানান, জিসানকে ঢাকার কোন একটি কলেজে ভর্তি করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু ফল প্রকাশের আগেই জিসান খুন হয়। সে বাণিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ ৪ দশমিক ২৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
×