অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পরিকল্পনা কমিশন শক্তিশালীকরণ, জনবল নিয়োগ ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের বৈঠকে। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চামেলী হলে পরিকল্পনা কমিশনের সভায় এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও পরিকল্পনা কমিশনের চেয়ার্পরসন শেখ হাসিনা।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্র জানায়, দেশের সব উন্নয়ন প্রকল্পে জনবল নিয়োগের ক্ষমতা পরিকল্পনা কমিশনের কাছে ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে দিয়ে প্রকল্পে জনবল সংক্রন্ত যাবতীয় বিষয়ে অর্থবিভাগের বদলে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) দেখভাল করবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ বৈঠকে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যদের সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা, বিভাগীয় প্রধানদের সচিব পদমর্যাদায় (গ্রেড-১) ভুক্ত করা, ১০টি বড় বরাদ্দপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ে পরিকল্পনা উইংয়ে অতিরিক্ত প্রধান (গ্রেড-২) কর্মকর্তা নিয়োগ, প্রত্যেক জেলায় পরিকল্পনা কমিশনের কার্যালয় স্থাপনসহ এক গুচ্ছ প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান ও পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে যাচাই-বাছাই করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের উর্ধতন একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আগে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা প্রতিমন্ত্রী মর্যাদার ছিলেন। পরবর্তীতে সচিব করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সদস্যদের সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা দেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সব মিলে পরিকল্পনা কমিশন শক্তিশালীকরণের প্রস্তাবটি বিবেচনাধীন আছে।
সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা দ্রুত তৈরির তাগিদ দিয়েছেন প্রধান মন্ত্রী। এ সময় তিনি পাট পণ্যের উন্নয়ন ও পাট চাষ বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তির কথা বলেছেন। এছাড়া এই পরিকল্পনায় বর্তমান অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।
বিসিএস ইকোনমিক ক্যাডারের কর্মকর্তা পদন্নোতি, পদের নামের পরিবর্তন, সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ কয়েকটি বিষয়ে প্রায় এক দশকের বেশি সময়ে আন্দোলন করছে। কর্মবিরতি, পরিকল্পনামন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাওসহ নানা কর্মসূচী হাতে নেয়। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের হস্তক্ষেপে সব ধরনের কর্মসূচী স্থগিত করে বিসিএস ইকোনমিক এ্যাসোসিয়েশন। এরই ধারাবাহিকতায় বিসিএস ইকোনমিক এ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশন সমঝোতা স্মারক সই করে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। এরপরও কোন সমাধান হয়নি। গতকালকের বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
সূত্র জানায়, গত ৩০ বছরের মধ্যে এটিই হচ্ছে চেয়ারম্যান হিসেবে কোন প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা কমিশনের বৈঠক। ইস্যুগুলো ছিল, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, পরিকল্পনা কমিশন শক্তিশালীকরণ, প্রকল্প সংক্রান্ত বিদ্যমান পরিপত্রের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন, জনবলের পুনর্বিন্যাস, আইএমইডির বিষয়াবলি এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিষয়াবলি। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা দ্রুত তৈরির তাগিদ দিয়েছে। এ পরিকল্পনায় পাট পণ্য ও পাট চাষ উন্নয়নে বিষয়টি গুরুত্ব দিতে বলেছেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: