ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১

গরু বেঁচে ইতালি, ৪ মাসেও খোঁজ নেই নারীর

প্রকাশিত: ২১:৩২, ২৫ মে ২০২৪

গরু বেঁচে ইতালি, ৪ মাসেও খোঁজ নেই নারীর

রায়পুরের শারমিন আক্তার

ইতালি যাওয়ার জন্য লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের শারমিন আক্তার নামে এক নারী দুটি গরু বিক্রি ও ঋণ করে তিন লাখ টাকাসহ ঘর থেকে বের হন। কিন্তু চার মাস হয়ে গেলেও তার কোনো খবর নেই। ২৫ বছর বয়সী শারমিন কোথায়, কার কাছে, বেঁচে আছেন কিনা, নিশ্চিতভাবে এসবের কিছুই বলতে পারছেন না কেউ। 

এর মধ্যেই তার বাবা সজল আলী ও মা পেয়ারা বেগমের কাছে ভারতীয় মোবাইল ফোন নম্বর থেকে মুক্তিপণের জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন অজ্ঞাত এক নারী।

ধারণা করা হচ্ছে, ভারত থেকে ফোন করা অজ্ঞাত ওই নারীর কাছে শারমিন আক্তার রয়েছেন। সংঘবদ্ধ চক্র তাকে বিক্রি করে দিতে পারে।

এদিকে মেয়েকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধারের জন্য শনিবার (২৫ মে) বাবা সজল আলী ও মা পেয়ারা বেগম স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। মেয়েকে ফিরে পেতে তারা কাঁদছেন।

অভিযোগ রয়েছে, ইতালি নেওয়ার কথা বলে একটি চক্র শারমিনের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নেয়। প্রায় ৪ মাস আগে শারমিন বাড়ি থেকে বের হন ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে। এরপর থেকে তার খবর নেই। পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগের চেষ্টা করেও সন্ধান পাচ্ছেন না। সম্প্রতি এক নারী  ৯১৯০৯১৫৮৬০৬৮ ও ০১৯০৯৮৪২৩৭৬ নম্বর থেকে বাড়িতে কল করে জানান, শারমিনসহ তিনি ভারতে রয়েছেন। শারমিনের জন্য ৫০ হাজার টাকা চান তিনি।

শারমিনের বাবা সজল রায়পুরের দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের হাজিমারা স্লুইসগেইট এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় জেলে। 

সজল ও তার স্ত্রী পেয়ারা জানান, শারমিন স্বামী পরিত্যক্তা। ৪ বছর আগে তাকে গৃহকর্মীর কাজে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে পাঠানো হয়। সেখানে মোবাইল ফোনে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা দুর্গাপুর গ্রামের সাহাব উল্লাহর মেয়ে রাবেয়া বেগমের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে। এরপর দুজনই ইতালি যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। সেখান থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে রাবেয়া নোয়াখালী ও পরে শারমিন গ্রামের বাড়িতে আসেন। ৪ মাস আগে রাবেয়া তার ছোট বোন কুলসুম আক্তারকে রায়পুরে শারমিনের বাড়িতে পাঠান। ১০ দিন কুলসুম রায়পুরে ছিলেন। এরপর তিন লাখ টাকাসহ শারমিনকে নিয়ে কুলসুম ঢাকায় রাবেয়ার কাছে যান। এরপর থেকে শারমিনের কোনো খোঁজ নেই। 

সজল আলী বলেন, নোয়াখালীর রাবেয়া দালাল চক্রের সদস্য। আমার মেয়ে তাদের খপ্পরে পড়েছে। দুটি গরু বিক্রি ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তিন লাখ টাকা দিয়েছি। আমরা ধারণা করছি, রাবেয়া ও তার বোন কুলসুম ভারতে নিয়ে শারমিনকে কোনো এক নারীর জিম্মায় আটকে রেখেছে। ওই নারী তাকে নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে মোবাইল ফোনে আমাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে। 

তিনি আরও বলেন, আমি শারমিনকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত চাই। জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

রায়পুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) শামছুল আরেফিন বলেন, ঘটনাটি কেউ পুলিশকে জানায়নি। ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এবি

×