ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

কারখানার বর্জ্য খালে, সেচ দেওয়ায় মরে যাচ্ছে বোরো

সংবাদদাতা, বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ২১:২২, ৩ এপ্রিল ২০২৪

কারখানার বর্জ্য খালে, সেচ দেওয়ায় মরে যাচ্ছে বোরো

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর রায়খালী খালের দূষিত পানি দিয়ে সেচ দেওয়ায় মরে যাওয়া বোরো খেত

বোয়ালখালী  উপজেলার রায়খালী খালে ছড়িয়ে পড়া কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যরে পানি দিয়ে সেচ দেওয়ায় মরতে বসেছে বোরো খেত। এতে বিপাকে পড়েছেন বোরো চাষিরা। এই বিষাক্ত পানির কারণে উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের প্রায় ২২৮ একর জমির বোরো খেত ক্ষতির মুখে পড়েছে। দেখা দিয়েছে ফসল উৎপাদনে অনিশ্চয়তা। স্থানীয় সেচ স্কিম ম্যানেজার কৃষক নুরুল আবছার বলেন, সারোয়াতলী মাঝির পাড়া হাজী বিলে প্রায় ৬০ একর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে।

সম্প্রতি রায়খালী খালের পানি দিয়ে সেচ দেওয়ার পর এসব জমির ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ক্ষতির মুখে পড়া এই বিলের কৃষকেরা সেচ খরচ দিতে এখন অপরাগতা প্রকাশ করছেন। আমার নিজের চাষ করা বোরো ধানের খেতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবারের মতো ক্ষতির সম্মুখীন আর কখনো হইনি। সরকারিভাবে সহযোগিতা না পেলে সর্বস্বান্ত হয়ে যাব।

তিনি জানান, উপজেলার ৭টি স্কিমের আওতায় অন্তত ৫ শত কৃষক বোরো আবাদ করেছেন। এ আবাদে ব্যবহার করেন রায়খালী খালের পানি। কল-কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য খালে ফেলার কারণে পানি দূষিত হয়ে পড়ায় এখন ফসল উৎপাদন নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে। এ ব্যাপার সারোয়াতলী ইউনিয়নের ৫ জন স্কিম ম্যানেজার কৃষি বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। 
সারোয়াতলী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলায় অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা কলকারখানার দূষিত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে কর্ণফুলী নদীর শাখা খাল রায়খালীতে। এতে পানি কালো এবং লালচে রং ধারণ করেছে। এ খালের বিষাক্ত পানি ব্যবহার করায় কৃষিজমি নষ্ট হচ্ছে। ধানের চারা লাল হয়ে মরে যাচ্ছে। জমিতে জমে থাকা পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। জমিতে কাজ করতে গিয়ে চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিসার আতিক উল্লাহ বলেন, খালের দূষিত পানি দিয়ে সেচ দেওয়ার ফলে সারোয়াতলী ও বেঙ্গুরা এলাকার কয়েকটি বোরো ধান খেতের ক্ষতি হয়েছে। এক্ষেত্রে খালের পানি দিয়ে সেচ প্রদানের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বোরো মৌসুমে বৃষ্টি না হলে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যায় নদী ও খালের পানিতে। লবণাক্ততার কারণে ফলন কিছুটা কম হয়। তাই পুকুর বা জলাশয়ের পানি ব্যবহার করতে হবে। তবে নদী ও খালের পানির দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে আন্তরিকতার সঙ্গে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বললেন এই কৃষিবিদ।

×