ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

লালমনিরহাটে কুয়াশা ও শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত 

লালমনিরহাট সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৯:১২, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

লালমনিরহাটে কুয়াশা ও শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত 

শীতের কারণে কর্মস্থল ছেড়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। 

লালমনিরহাটে ঘন কুয়াশা ও শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে চারদিক ঘন কুয়াশায় আচ্ছাদিত, সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। ফলে ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র লোকজন সীমাহীন কষ্ট ও দুর্দশায় দিনাতিপাত  করছেন। 

উত্তরের জেলা লালমনিরহাট হিমালয় পর্বতের খুব কাছাকাছি হওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। লালমনিরহাটে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে শীতের আবহ তেমন না হলেও হঠাৎ ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে তাপমাত্রা। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে বেশি মাত্রায় ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে লালমনিরহাটের আশেপাশে জেলাগুলোতে। রাতভর বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরতে থাকে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে ঘন কুয়াশার কারণে মহাসড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। তবে গত কয়েকদিন আগে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে ছিল কুয়াশার পরিমাণ। দিনের বেলা খানিক সময়ের জন্য সূর্যের দেখা মিললেও কাঙ্ক্ষিত উত্তাপ ছড়াতে না পারার কারণে শীতের তীব্রতা অনুভূত হয় দিনজুড়ে। আজ রবিবার (১০ ডিসেম্বর) সারাদিন সূর্যের দেখা মিলেনি। বিকেল গড়াতেই  শীতের মাত্রা আরো বেশি অনুভূত হচ্ছে।

জেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, ছিন্নমূল গরিব অসহায় মানুষ শীতের কারণে বেশি কষ্টে আছে। আর কৃষকরা  মাঠে যেতে পারছে না, ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। এছাড়াও অন্যান্য পেশার লোকজন শীতের কারণে কাজে যেতে পারেনি। 

আদিতমারি লালপুল এলাকার কৃষক সাইদুর রহমান জানান, এ বছরে গতকাল থেকে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। শীতের কারণে মাঠে যাওয়া যাচ্ছে না, তবুও মাঠে গেলে বেশিক্ষণ টিকা যায় না। বাধ্য হয়ে বাসায় চলে এসেছি। সারপুকুর এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী সুকুমার বর্মন জানান ঠান্ডার কারণে পুকুরে নামা যাচ্ছে না মাছ ধরা যাচ্ছে না। জোর করে পুকুরে নামলেও কিছুক্ষণের মধ্যে হাত পা বড়ফ হয়ে যায় বাধ্য হয়ে সবাই চলে এসেছি। 

ভাদাই এলাকার খবিরন বেয়া জানান, শীতের পোশাক নাই বাহে কষ্ট করি আছি। শীতের পোশাক হইলে একটু শীত কম নাগিন হে আগুন পোয়ে (দিয়ে) জার (ঠান্ডা) কাটপার চেষ্টা করছোং লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডা জনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলছে। বিশেষ করে শিশু রোগীরা শীত জনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন পাশাপাশি বয়স্ক বৃদ্ধরা শীত জনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে দেখা গেছে।

কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, রবিবার সকাল ৯টায় লালমনিরহাটে ও কুড়িগ্রাম জেলায় ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে উত্তরের হিমেল বাতাসের কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। আজ সকাল ৮টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার আরো বলেন, ‘আজ সকাল ৯টায় লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলায় সর্বনিম্ন ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।’

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু রায় জানান, জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত নিউমোনিয়া আক্রান্ত বেশি শিশু ভর্তি হচ্ছেন। লালমনিরহাট স্বাস্থ্য বিভাগ শীতজনিত রোগীদের সেবা দিতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

এম হাসান

×