এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ নতুন পাসপোর্ট করার জন্য রাষ্ট্রয়ত্ত সোনালী ব্যাংকে নির্দিষ্ট হারে ফি জমার রশিদসহ আবেদনপত্র জমা দিতে গেলেই ঘটে বিপত্তি কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও প্রতি পাসপোর্ট আবেদন ফরমে অতিরিক্ত দেড় হাজার টাকা দিতে হয় বিদেশগামী যুবকদের। কাগজপত্র ভুয়া অথবা রোহিঙ্গা হলে তো কোন কথাই নেই, কমপক্ষে ৬০-৭০ হাজার টাকার কন্ট্রাক্টে যেতে হবে তাকে। উচ্চমান সহকারী আবু হানিফ মোস্তফা কামাল কিংবা দালাল চক্রের মাধ্যমে নেয়া হয় এসব ঘুষের অর্থ। তাও আবার বিনা রশিদে। কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নিত্য দিনের চালচিত্র দেখলে অবাক বনে যায় অনেকে। দৈনিক বৈধ-অবৈধ নতুন সাধারণ বা জরুরী অথবা হালনাগাদ করার পাসপোর্ট ফরম জমা পড়ে শতাধিক। এ হিসেবে সরকারী ছুটির দিন বাদে প্রতি মাসে ২০ কর্মদিবসে অবৈধ ভাবে ঘুষ হিসেবে নেয়া হচ্ছে ৪০ লাখ টাকা। রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট জায়েজ করতে লাগে ৭০ হাজার টাকা। এ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার কিংবা উন্নয়ন খাতে জমা হয় না। পকেটস্থ করছে পাসপোর্ট অফিসের সংশ্লিষ্ট কতিপয় কর্মকর্তা ও দালাল। ঐ টাকা থেকে প্রতি মাসে একটি অংশ এক শ্রেণীর ভূঁইফোড় সাংবাদিকেদের পকেটে চলে যাচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা। কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের তিন কর্মকর্তা যথাক্রমে সহকারী পরিচালক শরিফুল ইসলাম, উপ-সহকারী পরিচালক শওকত কামাল ও উচ্চমান সহকারী আবু হানিফ মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্টর আবেদন ফরম গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েই চুক্তি ভিত্তিক ভুয়া আইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন সনদ ও চেয়ারম্যান সনদসংবলিত আবেদন ফরম জমা করতে প্রকারভেদে ৬০-৭০ নতুবা সর্বনিম্ন ৩৫-৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করার একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৈধ আর অবৈধ হোক ফরম জমা করতে গেলেই ১ হাজার ৫শ’ টাকা বিনা রশিদে জমা দিতে হচ্ছে সেখানে। শওকত কামালের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব আর চেয়ার দখল নিয়ে রশি টানাটানি দীর্ঘদিন ধরে চলছে। দুই কর্মকর্তার বিরোধ নিয়ে ফায়দা লুটছে উচ্চমান সহকারী আবু হানিফ মোস্তফা কামাল ও সংঘবদ্ধ দালাল চক্র। এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে একাধিকবার কল করেও সহকারী পরিচালক শরিফুল ইসলাম ফোন রিসিভ করেননি। একইভাবে উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ শওকত কামাল ও উচ্চমান সহকারী আবু হানিফ মোস্তফা কামাল ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার রিং করার পরেও রিসিভ না করায় তাদেরও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
দুই কর্মকর্তার বিরোধে ফায়দা লুটছে দালাল চক্র
কক্সবাজার পাসপোর্ট অফিস দুর্নীতির আখড়া
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: