ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

এমবিবিএস পরীক্ষার অকৃতকার্য হওয়ায় ভারতে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ২০:৩৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

এমবিবিএস পরীক্ষার অকৃতকার্য হওয়ায় ভারতে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক ॥ এমবিবিএস পরীক্ষার উপরেই যেন জীবন নির্ভর করছিল। কিন্তু, তাতে অকৃতকার্য হওয়ায় শেষমেশ সেই জীবনই খোয়ালেন তেলঙ্গানার এক তরুণী গৃহবধূ। মেডিক্যাল পরীক্ষায় টানা তিন বার ফেল করার ‘অপরাধে’ ওই গৃহবধূকে খুন করার অভিযোগ উঠল তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। হায়দরাবাদের অদূরে নাগোল এলাকার রক টাউন কলোনিতে এই ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী-সহ তাঁর শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সাইবারাবাদ থানার পুলিশ জানিয়েছে, তেলঙ্গানার খাম্মাম জেলার কুসুমাঞ্চি গ্রামের গৃহবধূ ২৪ বছরের কে হরিকাকে তাঁর স্বামী রবিবার রাতে শ্বাসরোধ করে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। লাল বাহাদুর নগরের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার পি বেনুগোপাল রাও জানিয়েছেন, হরিকার স্বামী রুশি কুমার বি টেক পাশ করেছেন। কিন্তু, এই মুহূর্তে কোথাও কাজ করতেন না। বছর দুয়েক আগে তাঁদের বিয়ে হয়। নাগোল এলাকার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন তাঁরা। হরিকার মায়ের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই মেয়ের উপর পণ নিয়ে অত্যাচার চালাত রুশির পরিবার। পাশাপাশি তাঁকে ডাক্তার হওয়ার জন্য চাপ দিতেন রুশি কুমার। কারণ, স্ত্রী-র রোজগারের টাকায় সচ্ছল জীবন কাটাতে চেয়েছিলেন তিনি। এমনকী, এমবিবিএস পরীক্ষায় কৃতকার্য না হলে তাঁকে ডিভোর্সও দেবেন বলে হুমকি দিতেন তিনি, এমনটাই অভিযোগ পুলিশের। চলতি বছরে ফের এমবিবিএস পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন হরিকা। তবে ডেন্টাল সার্জারিতে স্থানীয় এক বেসরকারি কলেজে সুযোগ পেলেও, তাতে রুশি কুমার রাজি হননি। ওই গৃহবধূর পড়শিরা জানিয়েছেন, রবিবার রাত ৮টা নাগাদ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রবল ঝগড়াঝাটি শুরু হয়। ওই ফ্ল্যাট থেকে কোনও চিৎকার শুনতে পাননি বলে পুলিশের কাছে জানিয়েছেন তাঁরা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আগুন ধরানোর আগে হরিকাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেন তিনি। সে কারণেই কোনও চিৎকারের আওয়াজ আসেনি ওই ফ্ল্যাট থেকে। এর পর জল দিয়ে আগুন নেভানোরও চেষ্টা করেন রুশি কুমার। ওই ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখে পড়শিরা সেখানে ছুটে যান। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। এর পর রুশি কুমারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হরিকার মা জানিয়েছেন, গত রবিবার রাতে রুশি তাঁকে ফোন করে জানান, হরিকা গায়ে আগুন দিয়েছে। এর পরেই তাঁরা মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু তত ক্ষণে সব শেষ। হরিকার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর শ্বশুর-শাশুড়িকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পি বেনুগোপাল রাও জানিয়েছেন, “‘‘হরিকার স্বামীর দাবি, তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু, আমরা ঘঠনাস্থলে গিয়ে যা বুঝেছি, তাতে এটা খুনের ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই এটি খুন কি না বোঝা যাবে।” সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×