ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষায় নায়ে শুকনায় পায়ে এ প্রবাদ এখন অচল

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ১৫ জুলাই ২০১৭

বর্ষায় নায়ে শুকনায় পায়ে এ প্রবাদ এখন অচল

বদলে গেছে ময়মনসিংহের প্রান্তিক জনপদের চিরচেনা চেহারা। কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়নই নয়। রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালভার্টসহ প্রান্তিক জনপদের ব্যাপক উন্নয়নে ঘটেছে এই বৈপ্লবিক পরিবর্তন। ফলে ‘বর্ষায় নায়ে শুকনায় পায়ে’-ময়মনসিংহ জনপদের জন্য এমন প্রবাদ এখন আর খাটছে না। খানাখন্দ ও বেহাল দশার রাস্তাঘাটের দেখা মেলাই ভার এখন। জেলা সদর থেকে উপজেলা সদর, কিংবা উপজেলা সদর থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিটি ওয়ার্ড ও গ্রাম পর্যায়ে কাঁচা ও ইট সুরকি রাস্তাঘাটের জায়গায় এখন বেশিরভাগ পিচঢালা সড়ক। বর্ষায় যেখানে ময়মনসিংহের প্রান্তিক জনপদে পৌঁছাতে দুর্ভোগের সীমা থাকত না, এখন সেখানে যেতে কোন দুর্ভোগই পোহাতে হয় না। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল এবং জেলা ও উপজেলা পরিষদসহ সড়ক বিভাগের উদ্যোগে যোগাযোগের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে এর সুবিধা পাচ্ছে এখন প্রান্তিক জনপদের বিপুল জনগোষ্ঠী-এই দাবি এলাকাবাসীর। স্থানীয় সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ জেলা সদর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরের ব্রহ্মপুত্র পাড়ের দুর্গম বোররচর ইউনিয়নের যোগাযোগ অবস্থা ছিল ‘বর্ষায় নায়ে, শুকনায় পায়ে’। জেলা সদর থেকে নৌকায় ব্রহ্মপুত্র পার হয়ে কিংবা ঘুরপথে ফুলপুর হয়ে যেতে হতো বোররচরে। শম্ভুগঞ্জ বাজার হয়েও নদী আর খাল পার হয়ে যাতায়াত ছিল বোররচরবাসীর। মাত্র একঘণ্টা পথ পাড়ি দিতে সময় লাগত ৪/৫ ঘণ্টা। যোগাযোগ অবস্থা বেহাল দশার কারণে এ সময় বোররচরবাসীর দুর্ভোগের সীমা ছিল না। যোগাযোগ অবস্থার এমন বেহাল দশার কারণে চিকিৎসা ও শিক্ষাসহ সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল ওই এলাকাবাসী। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় ময়মনসিংহ জেলা সদর থেকে শম্ভুগঞ্জ হয়ে একটি মাত্র সড়কের কারণে বদলে গেছে বোররচরবাসীর জীবনযাত্রা। একটি ব্রিজ আর সড়কের কারণেই ঘটেছে এই পরিবর্তন। ময়মনসিংহ জেলা সদর থেকে বোররচর যেতে এখন সময় লাগছে মাত্র একঘণ্টা। কেবল তাই নয়, প্রত্যন্ত এই জনপদে আধুনিক ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও পরানগঞ্জে ২০ শয্যার সরকারী হাসপাতালের সেবা পাচ্ছে এলাকাবাসী। একটি মাত্র সড়কের কারণে বদলে গেছে ব্রহ্মপুত্র পাড়ের নদী ভাঙন কবলিত বোররচরের। সবজির ভা-ার বলে খ্যাত বোররচরে মৌসুমে এখন কোটি টাকার শীতকালীন সবজি উৎপাদিত হয়। এইসবজি যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে। গফরগাঁও কান্দিপাড়া সড়কের ১০ কিলোমিটার ও পাগলা সড়ক এমনই বেহাল ছিল। কোন রিকশা কিংবা ভ্যান এই পথে যেতে রাজি হয়নি। সাধারণ মানুষকে হেঁটে যেতে হয়েছে গন্তব্যে। সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের ফলে এখন পুরো গফরগাঁওয়ের ১৫ ইউনিয়নের চেহারা পাল্টে গেছে। একই অবস্থা ভারত সীমান্তবর্তী ধোবাউড়া কলসিন্দুর সড়ক, ফুলবাড়িয়া কেশরগঞ্জ সড়ক, গৌরীপুর শাহগঞ্জ সড়ক, ঈশ্বরগঞ্জ আঠারবাড়ি সড়ক, ঈশ্বরগঞ্জ উচাখিলা সড়ক, ফুলপুর থেকে হালুয়াঘাটের সাখুয়াই সড়কসহ ত্রিশাল, মুক্তাগাছা ও ভালুকায় সড়ক নির্মাণের ফলে খানাখন্দ ও বেহালদশা বদলে গেছে। এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন জানান, গ্রামীন যোগাযোগ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন করার ফলে প্রান্তিক জনপদের মানুষ সুবিধা ভোগ করছে। -বাবুল হোসেন, ময়মনসিংহ থেকে
×