ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বজ্রপাতে মা, ছেলে ও শিশুসহ ১৬ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২০ জুন ২০১৭

বজ্রপাতে মা, ছেলে ও শিশুসহ ১৬ জনের মৃত্যু

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ফরিদপুরে বজ্রপাতে মা ও ছেলেসহ মারা গেছেন সাতজন। এছাড়া দেশের অন্য সাত জেলায় বজ্রপাতে শিশুসহ মৃত্যু হয়েছে আরও নয়জনের। রবি ও সোমবার এসব ঘটনা ঘটে। স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। জানা গেছে, ফরিদপুরের সালথায় বাজ্রপাতে মা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ভাবুকদিয়া গ্রামে বজ্রপাতের এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেনÑ ভাবুকদিয়া গ্রামের মৃত দবিরদ্দীন মোল্লার প্রতিবন্ধী মেয়ে সেলিনা বেগম (৩৫), সেলিনার ছেলে হেলাল মোল্লা (১৩)। নিহত অপরজন হলেনÑ একই গ্রামের রহমান খানের ছেলে মিলন খান (৩৩)। ঘটনার সময় হেলেনা ও তার ছেলে হেলাল রান্নাঘরে ছিল। এ সময় বজ্রপাতের ঘটনা ঘটলে তারা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। হেলাল ভাবুবদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। অপরদিকে নিহত মিলন খান ওই সময় বাবার সঙ্গে ক্ষেত থেকে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে নিহত হন। মিলন বিবাহিত এবং এক ছেলের বাবা। এদিকে ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের হরিরামপুর ইউনিয়নের ছমির ব্যাপারীর ডাঙ্গীর ফসলি মাঠে বজ্রপাতে কাবেল বিশ্বাস (৪০) নামে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ছমির ব্যাপারী ডাঙ্গীর বাসিন্দা মোসলেমের ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে নিহত হন আদেল। কাবেল কুষ্টিয়ার হাটখোলা গ্রামের বাদল বিশ্বাসের ছেলে। ঘটনার সময় বৃষ্টির ভেতর তিন কৃষক কাজ করতে ছিল। হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। এদিকে ফরিদপুরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের কবিরপুর খেয়া ঘাটে বজ্রপাতে নিহত হয়েছে দিনমজুর মোঃ ওমর (৪৫)। তিনি নাটোর জেলার মোঃ আনসারের ছেলে। দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বৃষ্টি শুরু হলে কয়েকজন শ্রমিক খেয়াঘাটে একটি ছাপড়ায় আশ্রয় নেয়। ওই ছাপড়ায় বজ্রপাতের ঘটনা ঘটলে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ওমর। এছাড়া সোমবার বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছে। দুপুরে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে বাজিতপুর মোল্যাপাড়া জামে মসজিদের ইমাম আওয়াল ফকির (৪৮) গরু আনার জন্য দুর্গাপুর মাঠে গেলে বজ্রপাতে মাঠেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় তার গরুটিও মারা যায়। একই সময় এ গ্রামের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা ফরহাদ মোল্যা (৩৫) গোয়ালঘরের ভেতর দাঁড়িয়ে ছিল। গোয়ালঘরের ওপর বজ্রপাতের ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। দিনাজপুর ॥ সদর উপজেলায় পৃথক স্থানে বজ্রপাতে এক কিশোরীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও একজন। নিহতরা হলেনÑ দিনাজপুর সদর উপজেলার ৬নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মোহনপুর বানিয়াপাড়া গ্রামের আতাবুদ্দিনের পুত্র দিনমজুর লুৎফর রহমান (৩০) ও একই ইউনিয়নের সহবতপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের কন্যা মুর্শিদা বেগম (১৫)। ৬নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, রবিবার সন্ধ্যায় জমিতে কাজ শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন দিনমজুর লুৎফর রহমান। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটলে তার মৃত্যু হয়। তার সঙ্গে থাকা অপর এক দিনমজুর আহত হন। তার নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। প্রায় একই সময় কিশোরী মুর্শিদা বেগম মাঠে গরু আনতে গেলে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। মাগুরা ॥ আজ মাগুরায় পৃথক বজ্রপাতে সোমবার দুপুরে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলোÑ সদর উপজেলার মঘি গ্রামের মৃত আব্দুল ওহেদ শেখের ছেলে আসাদ শেখ (৫২) এবং নালিয়ারডাঙ্গি গ্রামের ঝতু জোয়াদারের ছেলে কলমদি জোয়াদার (৪২) । মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে এ দুই কৃষকের মৃত্যু হয় । জানা গেছে, দুপুরে মাঠে কাজ করার সময় হটাত বৃষ্টি হচ্ছিল এ সময় পৃথক বজ্রপাত হলে তারা দুজন আহত হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মাগুরা সদর হাসপাতালে আনা জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। মানিকগঞ্জ ॥ মানিকগঞ্জের শিবালয়ে বজ্রপাতে রুহুল শেখ নামের প্রথম শ্রেণী পড়ুয়া স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিবালয় উপজেলার বরুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রুহুল আরুয়া ইউনিয়নের বরুরিয়া গ্রামের আওলাদ শেখের ছেলে। এবং স্থানীয় নালী বরুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র। স্থানীয় আরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার জামাত আলী জানান, বৃষ্টির মধ্যে বাড়ির পাশের একটি বাগান থেকে জামরুল কুড়িয়ে বাড়ি ফিরছিল ওই রুহুল শেখ। পথিমধ্যে প্রচ- গতির বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। নওগাঁ ॥ নওগাঁর ধামইরহাটে রবিবার সন্ধ্যায় বজ্রপাতে রফিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার সময় ধামইরহাটে প্রবল আকারে বজ্রবৃষ্টি শুরু হয় এবং বেশ কয়েকবার আকাশে বিকট শব্দে বজ্রপাত ঘটে। বজ্রপাতে উপজেলার আঙ্গরত গ্রামের মৃৃত রমজান আলীর পুত্র ৩ সন্তানের জনক রফিকুল ইসলাম (৩৫) হাঁসকুড়ি নামকস্থানে এবং ধামইরহাট পৌরসভার অন্তর্গত জয়জয়পুর গ্রামের মৃত হাসান আলীর ছেলে দুলাল হোসেনের একটি জার্সি গাভী মারা যায়। কুষ্টিয়া ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মাঠে ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে বাদশা (১৮) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছে। এ সময় তার ছোট ভাই রাজা (১৬) গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সোমবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার ভারত সীমান্তসংলগ্ন রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সোনাতলা ঠাকুরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, ঠাকুরপাড়া গ্রামের রাজ্জাকের দুই ছেলে রাজা ও বাদশা সকালে স্থানীয় একটি মাঠে গরুর ঘাস কাটতে যাওয়ার পর বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় বজ্রপাত হলে বড় ভাই বাদশা ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এলাকাবাসী আহত অবস্থায় রাজাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করে। বাগেরহাট ॥ মোরেলগঞ্জ উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়নের পশরবুনিয়া গ্রামে সোমবার বজ্রপাতে বাদল শেখ (৪০) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। চালিতাবুনিয়া গ্রামের আব্দুস সালাম শেখের ছেলে বাদল শেখ পশরবুনিয়া গ্রামে ট্রাকটর মেশিন দিয়ে জমি চাষাবাদ করছিল। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে তিনি নিহত হয়। ঝালকাঠি ॥ ঝালকাঠিতে বজ্রপাতে জাকির হোসেন (৫৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার খাদৈক্ষীরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাহির হোসেন ওই গ্রামের মৃত গেরছে আলী হাওলাদারের ছেলে।
×