ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

আকাশচুম্বী ব্যয়ে সাড়া কম

হজ প্যাকেজ থেকে দেড় লাখ টাকা কমানোর সুযোগ ছিল

আজাদ সুলায়মান

প্রকাশিত: ২৩:৩৮, ২৮ মার্চ ২০২৩

হজ প্যাকেজ থেকে দেড় লাখ টাকা কমানোর সুযোগ ছিল

অস্বাভাবিক হজ প্যাকেজ থেকে অন্তত দেড় লাখ টাকা কমানোর সুযোগ ছিল

অস্বাভাবিক হজ প্যাকেজ থেকে অন্তত দেড় লাখ টাকা কমানোর সুযোগ ছিল। সরকারি ও বেসরকারি দুটো ক্যাটাগরিতেই এ ব্যয় কমানো যেত। এখনো সেটা কাটছাঁট করা সম্ভব। হাব, আটাব ও বিমানের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এসব তথ্য। হজ প্যাকেজের ১৬টি খাতের মধ্যে অন্তত চারটি খাত থেকেই বড় অঙ্কের টাকা কমানো যেত। আর সামান্য পরিমাণে কমানো যেত আরও ৫টি খাতে। আটাব বলছে, এবারের হজ সংক্রান্ত সৌদি আরবে যে চুক্তি করা হয়েছে সেটিতেই অনেক অস্বচ্ছতা ও যথেষ্ট সন্দেহের কারণ নিহিত রয়েছে।

হজ এজেন্সিগুলোর কোনো মতামত না নিয়েই হাব সভাপতি নিজে সৌদি আরব গিয়ে এই চুক্তির অন্যতম প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যারাই এ চুক্তি করেছেন তারাও অস্বাভাবিক ব্যয়ের খাতে সম্মতি দিয়েছেন।  
আটাব সভাপতি এস এন মঞ্জুর মোর্শেদ মাহবুব দৈনিক জনকণ্ঠকে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণাদি দিয়েই বলেছেন, এবারের হজ চুক্তির গোটা প্রক্রিয়াটিই ছিল সন্দেহজনক ও অস্বচ্ছ। এতে কারোর কাছে কোনো জবাবদিহিতারও সুযোগ ছিল না। যে কারণে হজের অস্বাভাবিক ব্যয় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে গোটা জাতির ওপর। এখানে কমিশন বাণিজ্যেরও বিরাট সুযোগ থাকায় নানা সন্দেহ সংশয় আরও বাড়ছে। 
হাব বলছে- আশপাশের দেশের তুলনায় বাংলাদেশের হজ প্যাকেজে আকাশচুম্বি ব্যয় ধরা হয়েছে। এরমধ্যে বিমান ভাড়া ধার্য করা হয়েছে তুঘলকি কায়দায়। 
এমন পরিস্থিতিতে বিমানের ভাড়া কমিয়ে এক লাখ টাকা করা এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিল রেখে হজের প্যাকেজ চার লাখ ৫০ হাজার টাকায় নির্ধারণ করার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদের সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির। তিনি বলেন, এবারের প্যাকেজ আশপাশের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। তথ্য প্রমাণাদি দিয়ে এই প্যাকেজ চ্যালেঞ্জ করা যায়।  

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস থেকে জেদ্দার দূরত্ব ১৩ হাজার ৩৯৫ কিলোমিটার। বিমানে সময় লাগে ১৫ ঘণ্টা ২০ মিনিট। যার বিমান ভাড়া ১৭০০ ডলার যা বাংলাদেশী মুদ্রায় এক লাখ ৭০ হাজার টাকা। আর ঢাকা থেকে জেদ্দার দূরত্ব সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার হলেও টিকিটের দাম ধরা হয়েছে এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা। এই একটা খাতেই তো দেখা যায় কীভাবে হাজীদের কাছ থেকে মুনাফা আদায়ের নীলনক্সা করা হয়েছে। আবার ইন্দোনেশিয়া থেকে একজন মুসলিম তিন লাখ ৪৭ হাজার ৩৪৭ টাকার প্যাকেজে হজ করার সুযোগ পান। জেদ্দা থেকে কম দূরত্বে ঢাকায় সেটাই করা হয়েছে ৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকায়।
জানা গেছে, এবারের হজ প্যাকেজের ১৬টি খাতের মধ্যে অন্তত চারটি খাতে অস্বাভাবিক ব্যয় সংযোজন করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে বিমান ভাড়া, মক্কা মদীনায় বাড়ি ভাড়া, সার্ভিস চার্জ ও অন্যান্য খাত।
প্রথমত, এবারের বিমান ভাড়া ধার্য করা হয়েছে এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা। গত বছর যা ছিল এক লাখ ৪০ হাজার। এই বিমানভাড়া এবার কমপক্ষে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা করা হলেও বিমানের লাভ থাকত। বিমানের ভেতরের দেওয়া তথ্যেই দেখা যাচ্ছে এখানে অন্তত ৩৮ হাজার বেশি ধরা হয়েছে। ঢাকা থেকে জেদ্দা পর্যন্ত ৪১৯ আসনের বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ দিয়ে হজ ফ্লাইট অপারেট করার সার্বিক খরচ কিছুতেই দেড় লাখ টাকার বেশি পড়ে না। তারপরও যদি বিমান প্রতিটি যাত্রীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভের টার্গেট থাকে সেটা কিছুতেই এক লাখ ৬০ হাজারের বেশি হয় না।

এর পরিবর্তে বিমানপ্রতি হজযাত্রীর কাছ থেকে আরও অতিরিক্ত ৩৮ হাজার টাকার বেশি আদায়ের টার্গেট নিয়ে ভাড়া নির্ধারণ করেছে। ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে বিমান থেকে গতানুগতিক একটি যুক্তি দেখানো হয়, হজের সময় বিমান যাত্রী নিয়ে যায়, ফিরে খালি ফ্লাইটে। আবার হজ আনার সময় খালি যায়, ফিরে যাত্রী ভরা নিয়ে। দুবার এভাবে ফাঁকা যাওয়াতেই খরচটা বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। বিমানের এ যুক্তি খন্ডিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমান সারা বছর ঢাকা-জেদ্দা রুটে সাধারণ যাত্রীর ভাড়া নেয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। হজের সময় যদি সেটার দ্বিগুণও ব্যয় হয়ে থাকে তাহলেও সেটা কিছুতেই দেড় লাখ টাকার বেশি হতে পারে না। 
বিমান সূত্রমতে, একটি হজ ফ্লাইটের মোট খরচের ৩৫% চলে যায় জ্বালানি খাতে। বাকি ৬৫ ভাগ খরচ লাগে অন্য সব খাতে। ঢাকা থেকে জেদ্দায় যেতে ৭০ থেকে ৭৫ টন তেল লাগে। যা আজকের বর্তমান বাজার দরে (জেট ফুয়েল প্রতি লিটার ১০৫ টাকা) ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পড়ে। ফিরতেও কমবেশি এত টাকারই জ্বালানি লাগে। আসা-যাওয়া মোট এক কোটি ৪৭ লাখ টাকা পড়ে। ৪১৯ জন যাত্রীর আসা-যাওয়া বাবদ যদি এই টাকা লাগে তাহলে একজনের লাগে ৩৫ হাজার টাকা।  প্রতি ফ্লাইটের মোট খরচের ৩৫ ভাগ যদি জ্বালানি খাতে ধরা হয়-তাহলে বাকি টাকা যোগ করলে সেটা কিছুতেই এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা হয় না। অনেক কম থাকে।

বিমান বলছে দুবার হজযাত্রী পরিবহনে বিমানের প্রতিটি ফ্লাইটকে দুবার করে খালি আসা-যাওয়া করতে হয়। সেজন্য এত খরচ লাগে। এ বিষয়ে এভিয়েশান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খালি যাওয়ার সময় একটি ফ্লাইটে পুরো তেল লাগে না। কাজেই এখানে ব্যয় কমে আসে। এ হিসাবেও সেটা কিছুতেই এক লাখ ৬০ হাজার টাকার বেশি হতে পারে না। 
এ ব্যয়কে অস্বাভাবিক উল্লেখ করে হাব সহ-সভাপতি মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী বলেন, ভারত শ্রীলঙ্কা ইন্দোনেশিয়া মালয়েশিয়া তাদের নিজ নিজ দেশের মুদ্রায় বিমান ভাড়া বিনিময় মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করে। কিন্তু বাংলাদেশ বিমান নিজস্ব মুদ্রা টাকার পরিবর্তে ডলারের মাধ্যমে বিনিময় করায় এ খরচ বেড়েছে অস্বাভাবিক। এটাতে লাগাম টানা দরকার ছিল। 
বিমান ভাড়ার পরই সবচেয়ে বড় ব্যয় হচ্ছে- মক্কা মদীনায় বাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে। এবারের হজ প্যাকেজে ধর্ম মন্ত্রণালয় বাড়ি ভাড়া ধার্য করেছে- মোট সাত হাজার ২০১ রিয়াল যা বাংলাদেশী সাড়ে ২৮ টাকা দরে দাঁড়ায় দুই লাখ চার হাজার ৪৪৪ টাকা। হাব ও আটাব বলছে- বর্তমানে মক্কা ও মদীনায় ধর্ম মন্ত্রণালয় যে ধরনের বাড়ি বাছাই করেছে তার ভাড়া কিছুতেই সাড়ে পাঁচ হাজার রিয়ালের বেশি হতে পারে না। বাংলাদেশী টাকায় যা এক লাখ ৫৬ হাজার ৭৫০ টাকা। অথচ প্যাকেজে এখানে বাড়তি ধরা হয়েছে ৪৭ হাজার ৬৯৪ টাকা।

আটাব সভাপতি এসএন মনজুর মোর্শেদ মাহবুব জানিয়েছেন, ধর্ম মন্ত্রণালয় বাড়ি ভাড়া না করেই আগাম হজ প্যাকেজে আনুমানিক বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করেছে জুড়ে দিয়েছে প্যাকেজে। এই এক খাতেই সাড়ে ৪৭ হাজার টাকা বাড়তি ধরা হয়েছে। অথচ ধর্ম মন্ত্রণালয় বাড়ি ভাড়ার নেওয়ার দুমাস আগেই হজের প্যাকেজ ঘোষণা করে দিয়েছে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে- বাড়ি ভাড়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকা উচিত ছিল। মক্কা মদীনায় কীভাবে কারা বাড়ি ভাড়া করে, কারা কত কমিশন খায়, সেগুলো খতিয়ে দেখা দরকার।

আর বাড়ি ভাড়া না করেই আগেই কীভাবে সেটা নির্ধারণ করা হয়েছে সেটাও বড় প্রশ্ন তুলেছে আটাব ও হাব। জানতে চাইলে হাব সহ-সভাপতি মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী বলেন, এটা আরও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় করা যেত। তবে গত বছরের বাড়ি ভাড়াকে ভিত্তি ধরে এবারও সেটাই নির্ণয় করা হয়েছে। 
বাড়ি ভাড়ার পরই আসে অন্যতম খাত সার্ভিস চার্জ। এটা হচ্ছে- হজের পাঁচদিন মিনায়, আরাফায়, মুজদেলেফায়, হাজিদের জন্য তাঁবুতে ম্যাট্রেস, বিছানা, চাদর বালিশ, কম্বল, এয়ারকন্ডিশন ও খাবারসহ অন্যান্য খরচ। এ খাতে হজের প্যাকেজে ১৫% ভ্যাট সহ মোট ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৫৮ রিয়াল বাংলাদেশী টাকায় যা দাঁড়ায় এক লাখ ৬০ হাজার ৬৩০ টাকা। হাব জানিয়েছে- এ খাতের ব্যয় বাস্তবতার চেয়ে অনেক বেশি। সৌদি আরবে হজযাত্রীদের সেবা দেওয়া হয় ডি ক্যাটাগরির। এদের চেয়ে আফ্রিকার হাজিদেরও বেশি মর্যাদার সঙ্গে সার্ভিস দেওয়া হয়। অথচ তাদের দেশের জন্য সার্ভিস চার্জ কিছুতেই তিন হাজার রিয়ালের বেশি নয়।

সৌদি আরবে বাংলাদেশীদেরকে যে সার্ভিস দেওয়া হয় তা ডি ক্যাটাগরির যা বাংলাদেশী টাকায় কিছুতেই তিন হাজার রিয়ালের বেশি নয়। এর বিপরীতে প্যাকেজে টাকা ধার্য করা হয়েছে পাঁচ হাজার ছয়শ ৫৮ রিয়াল। অর্থাৎ এই একটি খাতেই বাড়তি ধরা হয়েছে দুই হাজারেরও বেশি রিয়াল যা বাংলাদেশী টাকায় পড়ে ৫৭ হাজার টাকা। 
এ সম্পর্কে জানা গেছে, এ বছর সার্ভিস চার্জের জন্য সৌদি আরবে চারটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে মাশরিক যার সঙ্গে বাংলাদেশ চুক্তি করেছে। আটাব সভাপতি বলেন, যেখানে অন্য তিনটি কোম্পানি এরচেয়েও কম খরচে সার্ভিস দিতে আগ্রহী ছিল সেখানে কেন এত টাকা দিয়ে চুক্তি করা হলো। এখানে কমিশন বাণিজ্যের গুঞ্জন রটেছে। এটাও খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে আটাব। 
প্যাকেজের অন্যান্য খাতেও ব্যয় সংকোচন নীতিতে আরও কমানোর সুযোগ ছিল।- হজ গাইড ও মোয়াল্লেম খাতে টাকা নেওয়া হলেও সার্ভিস পায় না হাজিরা। যদিও এ দুটি খাতের যৌক্তিকতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী। বলেন, এটা বাধ্যতামূলক। কিন্তু সেবা যাতে নিশ্চিত করা যায় সেটা দেখতে হবে। এ খাতে ধরা হয়েছে যথাক্রমে ১৪ হাজার ৭০৩ টাকা ও  ছয় হাজার ৪৭০ টাকা। 
জানা গেছে, এসব খাতেই প্রতিটি হজযাত্রীর কাছ থেকে এক লাখ ৬২ হাজার টাকা বেশি ধরা হয়েছে। হজের এই অস্বাভাবিক ব্যয়ের ঘোষণায় গোটা দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। যার প্রতিক্রিয়ায় এ বছর হজের কোটাই পূরণ হয়নি সব। সোমবার শেষ দিনেও কোটা বাকি ছিল। 
এসব ইস্যুতে আটাব সভাপতি মনজুর মোর্শেদ জানিয়েছেন, হজ চুক্তিটি যদি দরকষাকষি ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে করা হতো তাহলে অন্তত মক্ক মদীনায় বাড়ি ভাড়া ও সার্ভিস চার্জে অনেক লাগাম টানা সম্ভব হতো। কিন্তু সেটা করা হয়নি।

সেখানেও নানা কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। একইভাবে বিমান আটাব ও হাবের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই একতরফা ভাড়া নির্ধারণ করেছে যা অযৌক্তিক। বিমান তাদের সারা বছরের অনিয়ম দুর্নীতির সব লোকসান পোষাতে চায় হজযাত্রীদের টাকায়। 
অন্যান্য দেশের ব্যয় ॥ হাব ও আটাব বলছে, এ বছর তুঘলকি কায়দায় বিমান ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। আটাব সভাপতি এস এন মঞ্জুর মোর্শেদ মাহবুব বলেন, বাংলাদেশ থেকে জেদ্দার দূরত্ব সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার হলেও ওমরায় ৮০ হাজার টাকার বিমান ভাড়া খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে হজে এক লাখ ৯৭ হাজার টাকার বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। যা হাজিদের ওপর জুলুম ও অমানবিক আচরণ। অথচ ভারতে সরকারিভাবে এয়ার ইন্ডিয়া কলকাতা থেকে জেদ্দা পর্যন্ত বিমান ভাড়া সরকারি ৪৫ থেকে ৫০ হাজার রুপি  বেসরকারিভাবে এক লাখ টাকা।

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে জেদ্দা আকাশপথে দূরত্ব ৭ হাজার কিলোমিটার। সৌদি এয়ারলাইন্স এ ভাড়া চার হাজার রিঙ্গিত, যা বাংলাদেশী টাকায় এক লাখ টাকা। ইন্দোনেশিয়া জাকার্তা থেকে জেদ্দার দূরত্ব ৮ হাজার কিলোমিটার, বিমান ভাড়া ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস থেকে জেদ্দার দূরত্ব ১৩ হাজার ৩৯৫ কিলোমিটার। বিমানে সময় লাগে ১৫ ঘণ্টা ২০ মিনিট। যার বিমান ভাড়া ১৭০০ ডলার যা বাংলাদেশী মুদ্রায় এক লাখ ৭০ হাজার টাকা।
একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে জেদ্দা শহরের দূরত্ব ১০ হাজার কিলোমিটারের বেশি। রয়েল জর্ডান এয়ারলাইন্সে এ ভাড়া ৭৮০ ডলার বাংলাদেশী টাকায় ৮০ হাজার টাকা। গত বছরের হজে সৌদি এয়ারলাইন্সে টিকিট কেনা হয়েছে এক হাজার ৮০০ ডলারে। আয়ারল্যান্ড থেকে জেদ্দার দূরত্ব ছয় হাজার ৭৭৯ কিলোমিটার। বিমান ভাড়া ৮০ থেকে ৮৫ কিলোমিটার। জার্মানির বার্লিন থেকে সৌদি আরবের জেদ্দার দূরত্ব পাঁচ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার। ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে জেদ্দার দূরত্ব ৫৪৮০ কিলোমিটার। বিমান ভাড়া ৫৭১ থেকে ৮৫০ ইউরো, যা বাংলাদেশী টাকায় ৬০ থেকে ৯০ হাজার টাকা।
এবার সব দেশে তুলনামূলকভাবে হজের খরচ বৃদ্ধি হলেও বাংলাদেশের হজযাত্রীদের খরচ তুলনামূলক অনেক বেশি। ইন্দোনেশিয়া থেকে একজন মুসলমানকে হজে যেতে হলে তিন লাখ ৪৭ হাজার ৩৪৭ টাকা খরচ করতে হবে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি। মালয়েশিয়ায় যেসব পরিবারের মাসিক আয় ৯৬ হাজার টাকার কম, সেসব পরিবারের সদস্যদের জন্য হজের খরচ ধরা হয়েছে দুই লাখ ১৮ হাজার ৭৫৪ টাকা। মাসিক আয় বেশি হলে দিতে হবে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা। দেশটিতে হজের জন্য সরকার বড় অঙ্কের ভর্তুকি দিয়ে থাকে।

×