অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বৃহস্পতিবার ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। শনিবারের খুচরা বাজারে বাজেটের তেমন কোন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। তবে ব্যতিক্রম ছিল রসুনের বাজার। নিত্য প্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দর বেড়েছে বেশি।
শনিবার রাজধানীর কাওয়ানবাজার, হাতিরপুল বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম মানভেদে কেজি প্রতি ৫০ টাকা থেকে ১৯০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে কেজি প্রতি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া ভারতীয় রসুন ৫০ টাকা বেড়ে শনিবারের বাজারে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হওয়া চীনের রসুন শনিবারের বাজারে ৪০০-৪২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে গত সপ্তাহের মতো ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে দেশি রসুন।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মূল্য তালিকায় দেশী রসুনের দাম ১০০ টাকা এবং আমদানি করা রসুনের দাম মানভেদে ৩৫০ টাকা দেখানো হচ্ছে। এছাড়া চিনির দাম দেখানো হচ্ছে কেজি প্রতি ৭৫ টাকা। তবে গত সপ্তাহে ৭২ টাকা দরে বিক্রি হওয়া চিনি শনিবারের বাজারে ৭৫-৭৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গত এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে বেড়ে যাওয়া দামেই শনিবারের বাজারে সব ধরনের মুদি পণ্য বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ছোলা ৯৫ টাকা; মুগ ডাল ১৩৫ টাকা; ভারতীয় মুগ ডাল ১২৫ টাকা; মাসকলাই ১৩৫ টাকা, দেশী মসুর ডাল ১২৫ টাকা; ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে লবণের দাম কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
৫ লিটারের ভোজ্য তেলের বোতল ব্র্যান্ড ভেদে ৫০০-৫১০ টাকা; প্রতি লিটার ভোজ্য তেল ১০০-১০৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির তথ্যানুসারে ৫ লিটারের তেলের মূল্য ৪৯০-৫২০ টাকা। এছাড়া দারুচিনি ৩৬০ টাকা; জিরা ৪৫০ টাকা; শুকনা মরিচ ২০০ টাকা; লবঙ্গ ১৫০০ টাকা; এলাচ ১৬০০ টাকা; চীনের আদা ১২০ টাকা এবং ক্যারালা আদা ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজারও বাড়তি দামে অনেকটা স্থিতিশীল। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মোটা স্বর্ণা চাল কেজি প্রতি ৪৫ টাকা, পারিজা চাল ৪৪-৪৫ টাকা, মিনিকেট (ভাল মানের) ৫৬ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫২-৫৪ টাকা, বিআর২৮ ৪৮-৫০ টাকা, সাধারণ মানের নাজিরশাইল ৫৪ টাকা, উন্নত মানের নাজিরশাইল ৫৬ টাকা, পাইজাম চাল ৪৮-৫০ টাকা, বাসমতি ৫৬ টাকা, কাটারিভোগ ৭৬-৭৮ টাকা, হাস্কি নাজির চাল ৪১ টাকা এবং পোলাও চাল ১০০ (পুরাতন), নতুন ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচা পণ্যের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি টমেটো কেজি ৬০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা, শসা ৪৫-৫০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০-৫০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, কাকরোল ৫০ টাকা, আলু ১৮-২০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দেশী পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ২৮ টাকা, প্রতিটি ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০-৪৫ টাকা এবং লেবু হালি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক আঁটি প্রতি ১৫ টাকা, লালশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ২০ টাকা এবং লাউশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা, প্রতিটি ইলিশ ৮০০-১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে; প্রতি কেজি ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ১৬০০ টাকা।
এছাড়া হাড় ছাড়া গরুর মাংস ৫৮০-৬০০ টাকা; হাড়সহ গরুর মাংস ৪৯০-৫২০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৩০-৭৫০ টাকা দরে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। এছাড়া লেয়ার মুরগি ১৮০, দেশী মুরগি ৪০০, পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।