উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উন শনিবার এক ঘোষণায় বলেছেন, পিয়ংইয়ং অবিলম্বে এর পরমাণু পরীক্ষা ও আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) উৎক্ষেপণ স্থগিত করেছে। পিয়ংইয়ংয়ের সর্বশেষ আইসিবিএম উৎক্ষেপণের পাঁচ মাস পর দ্রুত কূটনৈতিক বরফ গলনে উদ্যোগ প্রচেষ্টার মধ্যে কিম এ ঘোষণা দিলেন। খবর এএফপির।
উত্তর কোরিয়ার নিষিদ্ধ ঘোষিত পরমাণু অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীর অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলো সংক্ষেপে উল্লেখ করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র ও আইসিবিএম কর্মসূচীর সূচনা হয় ১৯৭০-এর দশকের শেষদিকে সোভিয়েত স্কাদ বিয়ের প্রতিরূপ ক্ষেপণাস্ত্র স্কাদ-বি ধরনের প্রায় ৩শ’ কিলোমিটার পাল্লার একটি ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ করে এবং ১৯৮৪ সালে ক্ষেপণাস্ত্রটির প্রথম পরীক্ষা চালানো হয়। পিয়ংইয়ং ১৯৮৭ ও ১৯৯২-এর মধ্যে দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কাজ শুরু করে। এগুলোর মধ্যে তায়েপোদং-ওয়ান (২ হাজার ৫শ’ কিলোমিটার) ও তায়েপোদং-টু (৬ হাজার ৭শ’ কিলোকিটার) ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। তায়েপোদং ওয়ানের পরীক্ষা চালানো হয় ১৯৯৮ সালে জাপানের আকাশে। কিন্তু পরের বছর পিয়ংইয়ং-যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হলেও এ ধরনের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করে।
দেশটি ২০০৫ সালে স্থগিত ঘোষণা প্রত্যাহার করে। তারা বুশ প্রশাসনের নীতি বৈরীসুলভ বলে অভিযোগ তোলে এবং ২০০৬ সালের ৯ অক্টোবর প্রথম পরীক্ষা চালায়। দেশটি ২০০৯ সালে এর দ্বিতীয় পরমাণু পরীক্ষাটি চালায়। প্রথম বোমাটির চেয়ে এটি কয়েকগুণ বেশি শক্তিসম্পন্ন। কিম জং ইল ২০১১-এর ডিসেম্বরে মারা যাওয়ার পর ছেলে জং উন উত্তরসূরি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং তার তত্ত্বাবধানে ২০১৩ সালে তৃতীয় পরমাণু পরীক্ষাটি চালানো হয়।
আন্ডারগ্রাউন্ডে চতুর্থ পরমাণু পরীক্ষা চালানো হয় ২০১৬-এর জানুয়ারিতে। পিয়ংইয়ং ওই সময় দাবি করে, এটি ছিল হাইড্রোজেন বোমা। জং উন মার্চে দাবি করেন, উত্তর কোরিয়া সফলভাবে থার্মোনিউক্লিয়ার ওয়ারহেডের মডেল নির্মাণে সফল হয়েছে। দেশটি এপ্রিলে ডুবোজাহাজ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য একটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। পিয়ংইয়ং ৩ আগস্ট প্রথমবারের মতো সরাসরি জাপান নিয়ন্ত্রিত সমুদ্রসীমার দিকে একটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। ওই মাসের পর ডুবোজাহাজ থেকে নিক্ষেপণযোগ্য আরও একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালানো হয়।
ফেব্রুয়ারি ও মে-এর মধ্যে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কয়েকটি পরীক্ষা চালানো হয়। এগুলো গিয়ে পড়ে জাপান সাগরে। পিয়ংইয়ং দাবি করে, পরীক্ষাগুলো ছিল জাপানে মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে আঘাত করার জন্য অনুশীলন। ৪ মেয়ে দেশটি পরীক্ষা চালায়। নতুন নির্মিত মাঝারি/দীর্ঘ পাল্লার কৌশলগত ব্যালিস্টিক রকেট হোয়াসোং টোয়েলভয়ে। পিয়ংইয়ং বলেছে, এটি জাপান সাগরে পতিত হওয়ার আগে ৭শ’ কিলোমিটার উড়েছে। দু’মাস পর পিয়ংইয়ং আলাস্কায় পৌঁছতে সক্ষম একটি আইসিবিএমের সফল পরীক্ষা চালায় ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসে।
১৯৭০ দশকে শুরু
পরমাণু অস্ত্র ইস্যুতে উত্তর কোরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: