ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

এয়ারলাইন্সগুলোর ভরাডুবি

প্রকাশিত: ০৮:৩৮, ১৮ মার্চ ২০২০

এয়ারলাইন্সগুলোর ভরাডুবি

করোনাভাইরাসের কারণে ভ্রমণ বিধিনিষেধ এবং চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে এযারলাইন্সগুলো বেশিরভাগ ফ্লাইট বাতিল করতে এবং অস্থায়ীভাবে কর্মীদের হ্রাস করতে বাধ্য হচ্ছে। ভার্জিন আটলান্টিক ফ্লাইটের চার পঞ্চমাংশ বাতিল করবে এবং কর্মীদের আট সপ্তাহের জন্য অবৈতনিক ছুটি নিতে বলেছে। রায়ান এয়ার ও ইজিজেট তাদের বেশিরভাগ বিমানকে গ্রাউন্ড করছে, আর বিএ’র মালিক আইএজি সক্ষমতা ৭৫ শতাংশ হ্রাস করবে। বিশ্বজুড়ে করোনায় এ পর্যন্ত মারা গেছে ৭ হাজার ১৭৪ জন। আক্রান্ত প্রায় দুই লাখ।- বিবিসি করোনাভাইরাস নিয়ে চলমান পরিস্থিতির কারণে নরওয়েজিয়ান এয়ারলাইন্স তাদের হাজারো ফ্লাইট বাতিল করেছে এবং প্রায় ৮ হাজার কর্মীকে সাময়িকভাবে কাজে না আসার জন্য বলা হয়েছে। হলিডে কোম্পানি টিউই বলেছে, তারা তাদের কার্যক্রমের অধিকাংশই স্থগিত করবে, করোনা প্যাকেজ ট্রাভেল, ক্রুজ ও হোটেল বুকিংয়ে প্রভাব ফেলছে। অনেক দেশ তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ায় এবং হলিডে মার্কেট ভ্রমণ বাতিল করায় সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যাত্রী সংখ্যা এবং বুকিং একদম কমে গেছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এ্যাভিয়েশন ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে, বিশ্বের অধিকাংশ এয়ারলাইন্স মে মাসের শেষ নাগাদ দেউলিয়া হয়ে যাবে যদি তারা আর্থিক সমর্থন না পায়। প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যদি দুর্যোগ এড়াতে হয়, তহালে এখন সরকার ও কারখানার সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। চাহিদা বিভিন্নভাবে একদমই কমে যাচ্ছে যা সম্পূর্ণরূপে নজিরবিহীন। স্বাভাবিকতার কোন লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না। ফ্লাইট বাতিল ও অন্য পদক্ষেপ ঘোষণার পর তহবিল জোগাড়ের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এয়ারলাইন্সগুলো সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে তারা ৫০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত সাহায্য চাচ্ছে। যুক্তরাজ্যে ভার্জিন আটলান্টিক জরুরীভাবে ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত দেয়াসহ এই খাতে সহায়তার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে। ইজিজেটের প্রধান নির্বাহী জোহান লান্ডগ্রেনও বিমান শিল্পকে সহায়তার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তিনি বলেন, ইউরোপিয়ান বিমান সংস্থাটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সম্মুখীন এবং এটা পরিষ্কার যে, শিল্পটিকে বাঁচানো নিশ্চিত করতে সমন্বিত সরকারী সমর্থন প্রয়োজন হবে এবং সঙ্কট কেটে গেলে কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখতে সমর্থ হবে। করোনার বিস্তার ঠেকাতে ১১ মার্চ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপ থেকে ৩০ দিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আর এতেই বড় ধাক্কা খেয়েছে নরওয়েজিয়ান এয়ারলাইন্স। আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে স্বল্প খরচে ইউরোপ-আমেরিকা যাতায়াতে এই নরওয়েজিয়ান এয়ারই ছিল অনেকের ভরসা। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, দূরের বিভিন্ন দেশে তাদের যত ফ্লাইট ছিল মে মাসের শেষ পর্যন্ত তার প্রায় ৪০ শতাংশ ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়া নরওয়েজিয়ান এয়ারলাইন্স বর্তমান পরিস্থিতির জন্য করোনাকেই দুষছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী জ্যাকব স্খার্ম বলেন, খরচ কমানোর যত উপায় আসে সব আমাদের দেখতে হবে। শুনতে খারাপ লাগলেও তারই অংশ হিসেবে আমাদের ৫০ শতাংশ কর্মীকে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ রাখতে হবে, এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এ প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন প্রায় ১১ হাজার কর্মী। করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর জন্য নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এরনা সোলবার্গ আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এ সহায়তা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু এখনও জানানো হয়নি। প্যারিস, বার্সেলোনা, আমস্টার্ডাম, মাদ্রিদ, এথেন্স এবং অসলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিমান চলাচল বন্ধ হয়েছে।
×