ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

৪৩ লাখ টাকা খোয়া গেছে

এরশাদের বনানী কার্যালয়ে রহস্যজনক চুরি!

প্রকাশিত: ১১:২১, ১ মে ২০১৯

এরশাদের বনানী কার্যালয়ে  রহস্যজনক চুরি!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সম্পত্তি নিয়ে টানাটানির মধ্যে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটল। সোমবার রাতে বনানী কার্যালয়ে ভল্টের তালা ভেঙ্গে ৪৩ লাখ টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। বনানী থানা পুলিশ বলছে, চুরির বিষয়ে থানায় লিখিত কোন অভিযোগ করা হয়নি, তবে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। মঙ্গলবার ভোরে বনানীর ১৭/এ নম্বর রোডের কার্যালয়টিতে এসে তালা ভাঙ্গা দেখতে পান কর্মরতরা। এরপর তারা পুলিশে খবর দেন। কার্যালয়ে বর্তমানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দুপুরে সরজমিনে দেখা যায়, বনানী ‘রজনীগন্ধা’ অফিসের ভেতরে সিআইডির একটি টিম সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করছেন। এ সময় মিডিয়াকর্মী ও পার্টির কোন নেতাকর্মীকে পুলিশ ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। এ বিষয়ে পুলিশের বনানী থানার এসআই মোকলেস বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তারা এখনও লিখিতভাবে চুরির বিষয় কিংবা টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়ে ক্লেইম করেনি। এসআই মোকলেস আরও বলেন, কার্যালয়ে প্রধান ফটকের ভেতরে প্রবেশের পর ছোট্ট তিনটি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে দুটি কক্ষের লক ভাঙ্গা পেয়েছি আমরা। কক্ষের আশপাশে কোন সিসি ক্যামেরা ছিল না, এমনকি পুরো ভবনে কোন সিসি ক্যামেরা নেই। তিনি বলেন, কার্যালয়ের লোকজন দাবি করছে, একটি কক্ষ থেকে ৪২ লাখ টাকা এবং আরেকটি থেকে প্রায় এক লাখ টাকার মতো খোয়া গেছে। বনানী অফিসে ঢুকতেই ডান পাশের একটি রুমে এরশাদের ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম বসেন। তার রুমের তালা ভেঙ্গে সিন্দুক থেকে ৪২ লাখ এবং ড্রয়ার থেকে এক লাখ টাকা চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন জাহাঙ্গীর। একই সময়ে নিচতলায় এরশাদের ব্যক্তিগত সচিব মেজর অব খালেদ আখতার ও মহাসচিবের রুমের তালা ভাঙ্গলেও তাদের রুম থেকে কোন কিছু খোয়া যায়নি। বনানী থানা পুলিশ সন্দেহভাজন অফিসের দারোয়ান ওয়াহিদ ও ফেরদৌস এবং অফিসের কম্পিউটার অপারেটর রিপনকে থানায় নিয়ে যায়। যদিও পার্টির নেতাকর্মী ও অফিস-স্টাফরা বলছেন কম্পিউটার অপারেটর রিপনকে শুধুই সন্দেহবশত পুলিশ নিয়ে গেছে। সে এ কাজ করতে পারে না। বনানী অফিসের এক সহকারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ চুরির ঘটনাটি রহস্যজনক। পার্টির নামে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট থাকা সত্ত্বেও এত টাকা কেন অফিসে রাখা হবে। আর এত টাকা বনানী অফিসের কোন রুমে আছে চোরইবা জানল কিভাবে। এ চুরির ঘটনায় আমাদের অবশ্যই কেউ জড়িত। তা না হলে এরশাদের অফিসে চুরি করার সাহস কারও আছে বলে মনে হয় না। এ বিষয়ে এরশাদের ব্যক্তিগত সচিব মেজর অব খালেদ আখতার বলেন, চুরি যেই করুক বা যারাই জড়িত থাকুক আগামী দুই দিনের ভেতরেই ধরা পড়বে। কারণ, পুলিশ এবং আমাদের সহযোগিতা থাকলে চোর শনাক্ত করা কঠিন কাজ নয়। পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা বনানী কার্যালয়ের সামনে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, জাপা অফিসে টাকা চুরি তদন্তের পর বলা যাবে কে চোর। অফিসের যে টাকা চুরি হয়েছে সেখানে রংপুরে এরশাদের বাড়ি কাজ চলে সেই টাকা ছিল, স্টাফদের বেতনের, অফিস ভাড়া মিলিয়ে ৪৩ লাখ টাকা জমা রাখা হয়। যদিও ভবনের নিরাপত্তার জন্য ২ জন নিরাপত্তা প্রহরী ছিল তারপরেও তালা ভেঙ্গে এই টাকা চুরি হয়। তবে কারা চুরি করেছে তা আমরা পুলিশের তদন্তের পর জানতে পারব।
×