ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ফের ইয়াবা কারবারির আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ১১ এপ্রিল ২০১৯

ফের ইয়াবা কারবারির আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ইয়াবাসহ মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী যুদ্ধ ঘোষণার পর প্রথম দফায় ১০২ জন আত্মসমর্পণ করেছে। এবার দ্বিতীয় দফায় বিপুলসংখ্যক ইয়াবা কারবারি আত্মসমর্পণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রথম দফায় টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শীর্ষস্থানীয় ২৯সহ যে ১০২ জন আত্মসমর্পণ করে এরা জেলহাজতে রয়েছে। সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নিয়ে বাস্তবিক অর্থে এগিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এ কারবারে জড়িতদের কেউ যে রক্ষা পাবে না তা সংশ্লিষ্টদের মনে প্রতিভাত হচ্ছে। এর জের হিসেবে আত্মসমর্পণে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে আন্ডারওয়ার্ল্ডে ইয়াবা চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িতরা। চলতি মাসের শেষদিকে অথবা আগামী মাসের প্রথম দিকে দ্বিতীয় দফায় ইয়াবা চোরাকারবারিদের অনুষ্ঠান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবার পুরো কক্সবাজার এলাকায় ইয়াবার কারবারে জড়িতদের মধ্য থেকে ন্যূনতম পক্ষে ৫শ’ জন আত্মসমর্পণের সুযোগ নেয়ার জন্য ব্যাপকভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে ৩শ’ জনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। আবার এদের মধ্যে প্রায় অর্ধশত যে কোন মুহূর্তে প্রশাসনের আওতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে আছে। সূত্র জানায়, এবার দ্বিতীয় দফায় যারা আত্মসমর্পণের সুযোগের আওতায় আসছে এদের মধ্যে ৫৭ জন রয়েছে শীর্ষস্থানীয়। প্রথম দফার ১০২ জনের মধ্যে টেকনাফের সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির পরিবারের ১২ সদস্য রয়েছে। প্রথম দফার আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানটি টেকনাফে অনুষ্ঠিত হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজির উপস্থিতিতে। দ্বিতীয় দফার অনুষ্ঠানেও আইজিসহ পুলিশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। তবে অনুষ্ঠানটি কোথায় হবে এটি এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। এ নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আলাপ আলোচনা চলছে। এদিকে, প্রশাসনের বিভিন্ন সূত্রে মত দিচ্ছে ইতিপূর্বেকার তুলনায় মিয়ানমার থেকে ইয়াবার পাচার বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। তবে একেবারে বন্ধ হয়নি। বর্তমানে ওপার এবং এপারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যরাই ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এদের মধ্যে অধিকাংশ ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করছে। আর কিছু রয়েছে গডফাদার। যারা বহু আগে থেকে মিয়ানমারে বিশেষ করে সে দেশের রাখাইন রাজ্যে বসবাস করে আসছে। আর এ পারের গডফাদারদের অধিকাংশ এখন প্রাণ বাঁচাতে তৎপর। কেননা, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে দফায় দফায় ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, কোন অবস্থাতেই ইয়াবাসহ কোন মাদক কারবারিকে ছাড় দেয়া হবে না। টেকনাফে সাম্প্রতিক সময়ে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় বহু মাদক বিক্রেতা প্রাণ হারানোর ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে এদের কোন রেহাই নেই। সূত্র জানিয়েছে, এ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ইয়াবার গডফাদাররা ব্যাপকভাবে শঙ্কিত। প্রথম দফায় যে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান হয়েছে এর সার্বিক জের পর্যবেক্ষণ করে দ্বিতীয় দফায় আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে সংখ্যা বহুগুণে বেড়ে যেতে পারে। এ প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে ৫শ’ জনের একটি তালিকা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৩শ’ জনের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সূত্র জানায়, প্রথম দফায় আত্মসমর্পণকারীদের বেশ কিছুদিন পুলিশের নজরদারিতে রাখা হয়েছিল।
×