ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

আর বাকি ১৭ দিন

বিচারকরা মাঠে থাকলে পরিবেশ সুন্দর হবে ॥ সিইসি

প্রকাশিত: ০৫:১০, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮

  বিচারকরা মাঠে থাকলে পরিবেশ সুন্দর হবে ॥  সিইসি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ১৭ দিন। নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, কমিশনের ব্যস্ততা ততই বাড়ছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্ঘুম রাত পার করতে হচ্ছে তাদের। নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী বিভিন্ন ব্যক্তিও প্রতিষ্ঠানকে প্রায় প্রতিদিনই কমিশন থেকে ব্রিফ করা হচ্ছে। নির্বাচনে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের করণীয় বিষয় নিয়ে ইসির পক্ষ থেকে ব্রিফ করা হয়। আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা বলেন, সারাদেশে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে। তবে পরিবেশ যেন উত্তপ্ত না হয়। লক্ষ্য রাখতে হবে যে ত্তাপের এই পরিবেশ যেন উত্তপ্ত না হয়। উত্তপ্ত হয়ে নির্বাচনী পরিবেশ যেন ব্যাহত না হয়, ব্যাঘাত না ঘটে। সে কারণেই আমাদের এই আয়োজন। আমাদের প্রস্তুতি। তিনি বলেন, কমিশনের কাজ শুধু ৩০ ডিসেম্বর ঘিরে। সেদিন ভোট হবে। সুষ্ঠু ভোট গ্রহণে যেন কোন সংঘাত না হয়, ভুলবোঝাবুঝি না হয়। সবাই যেন নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলেন। আপনাদের দায়িত্ব সেটা বুঝিয়ে দেয়া। কমিশনের এটাই উদ্দেশ্য। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কমিশন অত্যন্ত আশাবাদী। আপনারা বিচারকরা যদি মাঠে থাকেন, আপনাদের পদচারণায় এই নির্বাচনের পরিবেশ সুন্দর হবে। মানুষের মধ্যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। মানুষ যেন ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে, সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের পরের দিনও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনের আগের দিন ও নির্বাচনের দিন যতটা না সংঘাত হয়, তার থেকে বেশি সংঘাত হয় নির্বাচনের পরের দিন। অতি উৎসাহী লোক ও প্রতিহিংসা পরায়ণতার কারণে এসব হয়ে থাকে। ভোটের পরের দিন মিছিলের কারণে অনেকের মনে আঘাত লাগে, অনেকে কষ্ট পায়। এতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট হয়। বিষয়টি খেয়াল রাখতে এবং সজাগ থাকতে বিচারিক হাকিমের প্রতি নির্দেশ দেন তিনি। কেএম নুরুল হুদা বলেন, নির্বাচনী আইনে আছে নির্বাচনের পরের দিন কোন শোডাউন হবে না। এটা কঠোরভাবে পালন করতে হবে। নির্বাচনে সহিংসতা সৃষ্টির আগে বিচারিক ম্যাজিস্টেটরা অবস্থান নেবেন, যাতে কেউ কোন ধরনের সহিংসতার প্রস্তুতি নিতে না পারে। সেটাই যথেষ্ট। ত্বরিতগতিতে আপনাদের উপস্থিতি, সারা দেশে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, বিচারকদের মানুষের সঙ্গে মিশলে কোন ক্ষতি নেই। তবে মিশে যাবেন না। আপনার ব্যক্তিত্ব কতটা শক্তিশালী, তার ওপর নির্ভর করে আপনি প্রভাবিত হবেন কি হবেন না। আইন, বিবেক, জ্ঞান, প্রজ্ঞা, ব্যক্তিত্ব প্রয়োগ করে আপনারা একটি সুন্দর ও সাবলীল নির্বাচন করতে পারবেন বলে আশা করছি। সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে থাকবে আশাবাদ ব্যক্ত করে সিইসি বলেন, সব রাজনৈতিক দল একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে নির্বাচনের কাজ শুরু করে দিয়েছে। এত বড় নির্বাচনে এখনও পর্যন্ত কোন সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। বিচারকেরা মাঠে থাকলে আর কোন সংঘাত ঘটবে না। সিইসি আরও বলেন, কে সাদা, কে কালো, কে রঙিন সেটা বিচারকদের একেবারেই দেখার বিষয় নয়। বিচারক সঠিক বিচার করবেন। আমাদের উদ্দেশ্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা। এ জন্য যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটুকুই প্রয়োগ করবেন। সাধারণ মানুষ ও বিচারকদের মধ্যে একটা কৃত্রিম অদৃশ্য কৃত্রিম দেয়াল ছিল। অথচ বিচারক ও বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে দেয়ালের প্রয়োজন ছিল না। নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সেই দেয়াল আরও কিছুটা শিথিল হবে। মানুষের কাছাকাছি গিয়ে বুঝতে পারবেন তারা কি চায়। সেই অনাদিকাল থেকে বিচারকদের মানুষ অগাধ শ্রদ্ধা করে। কাজির আমল থেকেই বিচারকেরা যে সিদ্ধান্ত দিতেন, সেটা মানুষ মান্য করত, এখনও করে। আপনারা যদি মাঠে থাকেন, মানুষের মধ্যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, আইনানুগ নির্বাচনের কথা মুখে না বলে কাজ করে দেখাতে হবে। কালো টাকা আর পেশিশক্তির প্রভাব খাটানো বন্ধ করতে হবে। কবিতা খানম বলেন, নির্বাচনী উৎসব যেন কোন অবস্থাতেই প্রশ্নের সম্মুখীন না হয়। সে জন্য বিচারিকহাকিমদের যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, আইনের চোখ বাঁধা থাকলেও অন্তরের চোখ দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করতে হবে।
×