ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার মেডিক্যাল বোর্ড অনুগত চিকিৎসকদের দিয়ে করা হয়েছে ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

খালেদার মেডিক্যাল বোর্ড অনুগত চিকিৎসকদের দিয়ে করা হয়েছে ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পরিবারসহ জনগণের দাবিকে পাত্তা না দিয়ে অনুগত চিকিৎসকদের দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তাঁর চিকিৎসা কাজে সম্পৃক্ত না করায় জনমনে সন্দেহ ও শঙ্কার সৃষ্টি করেছে। এর মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মানবাধিকার কেড়ে নেয়া হলো। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়াকে গুরুতর শারীরিক অসুস্থতার দিকে ঠেলে দিতেই সরকারী দলের অনুগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। পছন্দের চিকিৎসক ছাড়া মেডিক্যাল বোর্ড গঠন দূরভিসন্ধিমূলক ও গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়ার সঙ্গে তামাশা। সরকারের এ সিদ্ধান্ত বিপদজনক। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের অন্তর্ভুক্ত করার আশ্বাস দেয়ার পরও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথা রাখেননি। তাই আমি আবারও দাবি করছি, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের মেডিক্যাল বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার ব্যাপক জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে সরকার তাকে অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করে রেখেছে। সেজন্য তাঁর মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে চলছে প্রতিবাদ। তার বিরুদ্ধে দেয়া মামলা জনগণ বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, বিনা চিকিৎসায় খালেদা জিয়াকে দুর্দশায় ফেলতে চক্রান্ত চালাচ্ছে। সরকারই ঠিক করে দিচ্ছে কারা হবেন তার চিকিৎসক। ক্ষমতাসীনদের অনুগত চিকিৎসকরা খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রথমে শেখ হাসিনাকে রিপোর্ট করবেন। তারপরে শেখ হাসিনা যা বলবেন সেই অনুযায়ী চিকিৎসা চলবে। তাই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। রুহুল কবির রিজভী বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপির এজেন্ট দেয়া দূরে থাক, প্রার্থীও যাতে খুঁজে না পাওয়া যায়, সেজন্য সরকার মামলা-হামলা ও আগাম আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতিগতভাবেই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নীতি অবলম্বন করে আওয়ামী লীগ। তাই খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার কথা বলেও বাস্তবে তাঁর চিকিৎসা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা করছে। তবে এ অপরিণামদর্শিতার মাশুল একদিন তাদের দিতেই হবে। রিজভী বলেন, মানুষের ক্ষোভের ধাক্কায় পালিয়ে যাবার পথ খুঁজছে সরকার। তাই বেসামাল হয়ে বিরোধী নেতাকর্মীদের নামে ভুয়া মামলা দিয়ে ও গ্রেফতার করে টিকে থাকতে চাচ্ছে। খুন, গুম, লুটপাট, দখলবাজি, মামলায় মানুষকে হয়রানি করছে আওয়ামী লীগ। শাসকদল পুলিশকে যেভাবে ব্যবহার করছে তা নজীরবিহীন। তাই এ সরকারকে উৎখাত করতে জনগণ প্রস্তুত। জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করা হতে পারে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এই আইন পাস করা যাবে না। দল-মত নির্বিশেষে সব মানুষকে এই কালো আইনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। এ আইন পাস করলে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে। কারণ, এই আইনের কারণে কোন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করা যাবে না। তাই সরকারের কোন দুর্নীতিই প্রকাশ করা যাবে না। যদি প্রকাশ করা হয় তাহলে গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে অপরাধী হয়ে যাবে। এটা শুধু চরম উদ্বেগজনকই নয়, এটি সংবিধানের মূল নীতির পরিপন্থী। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, দলের কেন্দ্রীয় নেতা শাহ মোঃ আবু জাফর, মুনীর হোসেন, হেলেন জেরিন খান, আমিনুল ইসলাম, আবেদ রাজা প্রমুখ। এ দিকে শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গাওয়া গান নিয়ে প্রকাশিত একটি সিডির মোড়ক উন্মোচন করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ নামক একটি সংগঠন এ সিডি প্রকাশ করে।
×