ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

কার্গো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ফের যুক্তরাজ্যের ১০ শর্ত

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭

কার্গো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ফের যুক্তরাজ্যের ১০ শর্ত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি আকাশপথে কার্গো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে ফের ১০টি শর্ত দিয়েছে যুক্তরাজ্য। যদিও ডিসেম্বর মাসেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা আসতে পারে-এমন প্রত্যাশা করছিল বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে। এছাড়া, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে ইউকে ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্ট (ডিএফটি) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বৈঠকও করেন। এরপরই এসব শর্ত দেয় যুক্তরাজ্য। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ক্ষেত্রে ১০টি শর্ত দিয়েছে ইউকে ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্ট (ডিএফটি)। এরমধ্যে রয়েছে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদে দুজন পরামর্শক নিয়োগ, এভিয়েশন সিকিউরিটিতে ইউকে মডেল অনুসরণ করা, ইউকের একক নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি। ৩১ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের শর্তের বিষয়ে জবাব দেবে মন্ত্রণালয়। এ প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘শর্ত না; কিছু অবজারভেশন দিয়েছে। তারা (যুক্তরাজ্য) মনে করে এগুলো মিট-আপ করা দরকার। সেভাবে আমরা তাদের জবাব দিচ্ছি। আমরা তাদের কাছে কিছু ক্ল্যারিফিকেশন চেয়েছি। তাদের (যুক্তরাজ্য) বলেছি আগে এম্বার্গো তুলে নাও। এছাড়া, যুক্তরাজ্যে আমার সফরের সময় ডিএফটিকে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়ন বিষয়ে অবহিত করা হয়েছিল।’ কার্গো নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন। ক্রিসমাসে না পেলেও নিউইয়ারে পেয়ে যাবেন। প্রত্যাহারের বিষয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।’ জানা গেছে, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকার অজুহাতে ২০১৬ সালের মার্চ মাসে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সে দেশে সরাসরি পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাজ্য। এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে আলোচনার জন্য গত ২৭ নবেম্বর যুক্তরাজ্যের সফরে যান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্য ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ২২ থেকে ২৭ নবেম্বর পর্যন্ত শাহজালালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সিভিল এভিয়েশন অথরিটির সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠক করে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের মার্চে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর যুক্তরাজ্যের পরামর্শে শাহজালালের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয় ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান রেড লাইনকে। প্রতিষ্ঠানটি সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তা কর্মীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশিসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের পরামর্শ দেয়। যুক্তরাজ্যের পরামর্শে রফতানি কার্গো জোনে বসানো হয়েছে এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস)। এছাড়া, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এএপিবিএন) ডগ স্কোয়াডে যুক্ত হয়েছে ৮টি কুকুর। কুকুরগুলো মাদক, অস্ত্র, বিস্ফোরকসহ ক্ষতিকর বস্তু শনাক্তে পারদর্শী। কার্গো পরিবহন রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অন্যতম একটি আয়ের উৎস। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিমান মুনাফা করলেও গত অর্থবছরের তুলনায় কমেছে নিট মুনাফা। ১৯ ডিসেম্বর বিমানের ১০ম বার্ষিক সাধারণ সভায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরের আর্থিক বিবরণী অনুমোদিত হয়।
×