ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

১৬ কারণে এডিপি বাস্তবায়নে ধীরগতি

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ১২ মার্চ ২০১৭

১৬ কারণে এডিপি বাস্তবায়নে ধীরগতি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়ন না হওয়া এখন বাংলাদেশের জন্য স্বাভাবিক ঘটনা। বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রতিবছর সরকার যে এডিপি গ্রহণ করে তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হয় না। কোনও কোনও প্রকল্প ধীর গতিতে এগুলেও বেশির ভাগ প্রকল্পের কাজই শুরু হয় না। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় প্রতিবছর এডিপি বাস্তবায়নের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে সরকারের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এডিপি বাস্তবায়নের ধীর গতির বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করে তা সমাধানের সুপারিশ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে- সময় মতো অর্থছাড় না হওয়া, জমির অধিগ্রহণে বিলম্ব, দক্ষ প্রকল্প পরিচালকের অভাব, বাস্তব অভিজ্ঞতার অভাব, কর্মকৌশল গ্রহণে সরকারের ধীর গতি, ক্রয়কাজে জটিলতা, যোগ্য পরামর্শক প্যানেল না পাওয়া, সংশ্লিষ্ট উন্নয়নসহযোগীর সম্মতি পেতে দেরি, পরিবেশগত প্রভাবের বিষয়ে মূল্যায়নে জটিলতা, ঋণ নেগোশিয়েশন না হওয়া, সঠিক সময়ে বাস্তবসম্মত ক্রয় পরিকল্পনা ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও অনুসরণ না করা, দরপত্র আহ্বান ও কন্ট্রাক এ্যাওয়ার্ড কাজে বিলম্ব, ভৌত কাজের ডিজাইন ও রেট শিডিউল পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ ও বদলির ক্ষেত্রে প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণ না করা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা কর্তৃক যথাযথ পরীবিক্ষণের অভাব, প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন এবং বাস্তবায়নোত্তর আইএমইডির মনিটরিং প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে গুরুত্ব না দেয়া, সময়মতো প্রকল্পের পিসিআর না পাওয়া ইত্যাদি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এডিপির বাস্তবায়ন শুধু টাকার অঙ্কে বিচার করলে হবে না। যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এডিপির প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, তা সঠিকভাবে হয়েছে কিনা তা দেখতে হবে। অন্যদিকে যারা বাস্তবায়ন করতে পারছে না, তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে হবে। প্রতিবছরই জুনের মধ্যে এডিপি বাস্তবায়ন করতে নির্দেশনা জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। চলতি অর্থবছরে এডিপির ৯৫ শতাংশ বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা মন্ত্রণালয়। এছাড়া সঠিক সময়ে এডিপি বাস্তবায়নে সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানে একটি পুল ফান্ড গঠন করার কথাও বলা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায়। অগ্রাধিকার কর্মসূচী বা প্রকল্প বাস্তবায়নে এই ফান্ড থেকে অর্থ নেয়া হবে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প পরিচালকদের প্রকল্প এলাকায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়ায় প্রকল্প পরিচালকরা তা মানেন না। এমনকি অনেক প্রকল্প পরিচালকের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোন ধারণাও রাখেন না। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মনিটরিংয়ের কারণে আগের তুলনায় এখন এডিপি বাস্তবায়নের হার ভাল। বর্তমান সরকারের বড় বড় অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এডিপি বাস্তবায়নের হার আরও বাড়বে।
×