ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে পর্যাপ্ত মঞ্চ থাকলে নাটকের অগ্রগতি হবে ॥ নূনা আফরোজ

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ৯ মার্চ ২০১৭

দেশে পর্যাপ্ত মঞ্চ থাকলে নাটকের অগ্রগতি হবে ॥ নূনা আফরোজ

অভিনেত্রী নূনা আফরোজ। মঞ্চে অভিনয়ের পাশাপাশি নাট্যকার ও নির্দেশক হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছেন। হৃদয়ের টানে থিয়েটারকে আঁকড়ে ধরে আছেন দীর্ঘদিন। প্রাণের সংগঠন প্রাঙ্গণেমোর নাট্যদলের প্রযোজনায় নতুন নতুন নাটকে দেশের মঞ্চকে আলোকিত করার পাশাপাশি বিদেশের মাটিতেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ‘প্রাঙ্গণেমোর দুই বাংলার নাট্যমেলা’ শিরোনামের নয় দিনব্যাপী উৎসব। এ নাট্যমেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক তিনি। এ নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়। এবারের নাট্যমেলা সম্পর্কে বলুন? নূনা আফরোজ ॥ প্রাঙ্গণেমোর প্রতি এক বছর অন্তর ‘প্রাঙ্গণেমোর দুই বাংলার নাট্যমেলা’ শিরোনামে নিয়মিত উৎসব করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় শুরু হচ্ছে উৎসব। এবারের উৎসবের প্রতিপাদ্য ‘তোমরা যেখানে সাধ চ’লে যাও-আমি এই বাংলার পারে র’য়ে যাব’। উৎসবে মঞ্চায়ন হবে এপার বাংলার ৫টি ও ভারতের ৪টি নাটক। সন্ধ্যা ৬টায় উৎসব উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও বাংলাদেশে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষ বর্ধন স্রিংলা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। উৎসবে দুই বাংলার কোন কোন দল অংশ নিচ্ছে? নূনা আফরোজ ॥ বাংলাদেশের প্রাঙ্গণেমোরের নাটক ‘আমি ও রবীন্দ্রনাথ’, নাগরিক নাট্যাঙ্গনের ‘গহর বাদশা ও বানেছা পরী’, লোক নাট্যদলের ‘কঞ্জুস’, থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ‘মর্ষকাম’ ও সুবচন নাট্য সংসদের নাটক ‘প্রণয় যমুনা’। ওপার বাংলার কলকাতা থেকে সংসৃতি’র নাটক ‘ব্রেন’, নিভা আর্টসের ‘ওরা আট জন’, কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্রর ‘নূরলদীনের সারাজীবন’ ও নিউ দিল্লীর গ্রীনরুম থিয়েটারের নাটক ‘অসুখ’। এবারের উৎসবে ব্যাতিক্রমী কি থাকছে? নূনা আফরোজ ॥ আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে ‘প্রাঙ্গণেমোর যুবরাজ সেরা নাটক পদক’ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেই বিবেচনায় এবার আমাদের মনোনয়নে রয়েছে তিনটি নাটক। তার মধ্য থেকে একটি নাটক এই পদক পাবে। উৎসবের শেষদিনে এই ঘোষণা দেয়া হবে। এছাড়া এবার ভারত থেকে ৪টি দল এ উৎসবে অংশ নিচ্ছে যা ইতিপূর্বে বাংলাদেশে কখনও হয় নাই। দুই বাংলার নাট্যমেলায় দিল্লীর দলকে কেন? নূনা আফরোজ ॥ গ্রীনরুম থিয়েটার নিউ দিল্লীর নাট্যসংগঠন হলেও তারা বাংলা নাটক করে। দিল্লীতে ১২ শতাংশ বাঙালী। সেখানে বাংলা নাটকের চর্চা সত্যিই খুব কঠিন। তবুও তারা এই কাজটি করে আসছে। এবং বাংলা নাটকের উৎসবও করে। আমরা খুবই উৎসাহিত বোধ করছি যে এই দলটি বাংলাদেশে আসছে। ভারতের দল আমাদের দেশের নাট্যকারের নাটক মঞ্চায়ন করছে এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী? নূনা আফরোজ ॥ আমি মনে করি উৎসবের সবচেয়ে বিশেষ আকর্ষণ সৈয়দ শামসুল হকের ‘নূরলদীনের সারাজীবন’ নাটকটি ভারতের কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্র মঞ্চায়ন করছে। প্রায় ৮ বছর ধরে আমি ও অনন্ত হিরা চেষ্টা করছিলাম বাংলাদেশের কোন নাটক ওপার বাংলার কেউ ডিরেকশন দিক। আমরা যেহেতু ওপার বাংলার অনেক নাট্যকারের নাটক করে থাকি। কার্যক্ষেত্রে দেখা যায় আমাদের দেশের ভাল নাট্যকারের নাটক ওপার বাংলায় কেউ করে না। নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় নাটকটি করেছে। উৎসবের শেষদিনে দলটির অভিনেতা ও কলাকুশলীদের আমরা হাজির করার চেষ্টা করব। উৎসবের প্রস্তুতি সম্পর্কে বলুন। নূনা আফরোজ ॥ আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ। এবারের সেøাগনের সঙ্গে মিল রেখে উৎসবের সাজসজ্জাও করা হয়েছে। এটাকে কেন্দ্র করে টি শার্ট, শাড়ি সবকিছুরই মিল রাখা হয়েছে। দেশের মঞ্চ নাটকের অগ্রগতি সম্পর্কে বলুন নূনা আফরোজ ॥ মঞ্চ নাটকে আমরা যে খুব বেশি এগোতে পেরেছি তা কিন্তু নয়। নব্বইয়ের দশকে যেসব নাটক মঞ্চায়ন হতো, মানের দিক থেকে তা থেকে যে উত্তীর্ণ হতে পেরেছি এটা বলতে পারব না। তবে মঞ্চে কিছু নতুন নাটক আসছে সেগুলো সময়ের সঙ্গে তার মিলিয়ে এগোচ্ছে। মঞ্চ নাটক এগিয়ে নিতে প্রতিবন্ধকতা কী? নূনা আফরোজ ॥ শুধু শিল্পকলা একাডেমিতে নাটক মঞ্চায়ন করলে নাটক এগোবে না। নাটককে এগিয়ে নিতে মঞ্চ সঙ্কট সবচেয়ে আমাদের দেশে বড় সমস্যা। দেশের বিভিন্ন স্থানে পর্যাপ্ত মঞ্চ থাকলে নাটকের অগ্রগতি হবে। দলগুলোকে মানসম্মত নাটকও তৈরি করতে হবে। -গৌতম পা-ে
×