ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে ১১ জঙ্গীর পোস্টার প্রকাশ ॥ তালিকায় একই পরিবারের ৬ সদস্য

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

যশোরে ১১ জঙ্গীর  পোস্টার প্রকাশ ॥ তালিকায় একই পরিবারের ৬ সদস্য

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোর জেলা পুলিশ ১১ জঙ্গীর পোস্টার প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে চার ভাইবোনসহ ছয়জন একই পরিবারের সদস্য। এদের মধ্যে তিন ভাইবোনকে বিভিন্ন সময় পুলিশ আটক করলেও এরা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে পালিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান এ তথ্য জানান। পুলিশের প্রকাশিত পোস্টারের জঙ্গীরা হলো- একই পরিবারের ছয় সদস্য যশোর শহরের পুরাতন কসবা কদমতলা এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে তানজিব ওরফে আশরাফুল, তার ভাই তানজির আহমেদ, বোন মাছুমা আক্তার ও মাকসুদা খাতুন, মাকসুদার স্বামী শাকির আহম্মেদ ও মাছুমার স্বামী নাজমুল হাসান এবং অপর পাঁচজন হলো- রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ১৭ নম্বর বাড়ির মুসাব্বির ওরফে প্রকাশ ওরফে তন্ময় (৩০) এবং ঢাকার আশকোনা দক্ষিণখান ৪০১ কলেজ রোডের হারেজ আলী (২৭), যশোরের মনিরামপুরের জিএম নাজিমউদ্দিন ওরফে নকশা নাজিম, চাঁচড়া বেড়বাড়ি এলাকার মহিউদ্দিন এবং শার্শার মেহেদি হাসান ওরফে জিম ওরফে হুসাইন। নিষিদ্ধ সংগঠন হিযুবত তাহরীরের এ ১১ সদস্যের সন্ধান চেয়ে এ পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে। পোস্টারে স্থান পাওয়া ১১ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা ও সাধারণ ডায়েরি (জিডি) রয়েছে। মতবিনিময়কালে পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান আরও জানান, যশোর শহরের পুরাতন কসবা কদমতলা এলাকার মিসর প্রবাসী আবদুল আজিজের ছেলে হিযবুত তাহরীরের আঞ্চলিক কমান্ডার তানজিব ওরফে আশরাফুলের (২০) বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে দায়ের হওয়া সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এ ১১ জনের জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে। জঙ্গীদের সন্ধান চেয়ে যশোর পুলিশের পক্ষ থেকে পোস্টার ছাপানো হয়েছে। উল্লিখিত একই পরিবারের ছয় জঙ্গীর মধ্যে তানজিব হিযবুত তাহরীরের মোশরেক পদে আছে। বাকিরা একই সংগঠনের কর্মী। আশরাফুলের দুই ভগ্নিপতি এবং ঢাকা থেকে হারেজ ও মুসাব্বির নামে আরও দু’জন প্রশিক্ষক ওই বাড়িতে হিযবুত তাহরীরের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিত। জঙ্গী সংশ্লিষ্ট পরিবারের চার ভাইবোনের মধ্যে তানজিব, তানজির ও মাছুমাকে পুলিশ আটক করে আদালতে সেপার্দ করে। কিন্তু পরবর্তীতে তারা জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক রয়েছে। আদালতে সরকারী কৌঁসুলি জামিন আবেদনের বিরোধিতা না করায় তাদের জামিন দেয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, তানজিব ওরফে আশরাফুল, তানজির ও মাছুমাকে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। কিন্তু আদালতে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রফিকুল ইসলাম পিটু ও বিশেষ সরকারী কৌঁসুলি (এপিপি) ইদ্রিস আলী জঙ্গীদের জামিন আবেদনে বিরোধিতা করেননি। গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর তানজিবকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সরকারী কৌঁসুলি তার জামিনের বিরোধিতা না করায় আদালত গত মে মাসে তাকে জামিন দেয়। একই ভাবে তানজিবের ভাই তানজির আহমেদ ও বোন মাছুমা আক্তারকেও একটি ল্যাপটপসহ আটক করে পুলিশ। এ দুটি মামলাতেও সংশ্লিষ্ট সরকারী কৌঁসুলিরা জামিনের বিরোধিতা না করায় আদালত তাদের জামিন দিয়ে দেয়। তিনজনই বর্তমানে পলাতক রয়েছে। জঙ্গীর পক্ষে সরকারী সিটি কলেজের অধ্যক্ষ আবু তোরাব মোহাম্মদ হাসান প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন। ওই প্রত্যয়নপত্র আদালতে উপস্থাপন করে একজন জামিন নিয়েছে। এ বিষয়গুলো তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান আরও জানান, এটি যশোর পুলিশের দ্বিতীয় জঙ্গী তালিকা। পুলিশ এদের আটকের জন্য তৎপর রয়েছে।
×