ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষকের সাথে খারাপ ব্যবহার করা মানিকগঞ্জের সেই কৃষি কর্মকর্তাকে দিনাজপুরে বদলি

প্রকাশিত: ২১:২৮, ৪ এপ্রিল ২০২৪

কৃষকের সাথে খারাপ ব্যবহার করা মানিকগঞ্জের সেই কৃষি কর্মকর্তাকে দিনাজপুরে বদলি

ভুক্তভোগী কৃষক

কৃষকের সাথে খারাপ ব্যবহার করা মানিকগঞ্জের শিবালয়ের সেই কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন সুজনকে দিনাজপুরে বদলি করা হয়েছে। গত বুধবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে দিনাজপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে বদলি করা হয় তাকে।

এর আগে গত ২ এপ্রিল মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথলী ইনিয়নের গহেরপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক ফজলুর রহমানকে গালমন্দ করে অফিস থেকে বের করে দেয় মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মো. সালাহউদ্দিন সুজন। পোকার আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত একগুচ্ছ বোরোধান নিয়ে প্রতিকারে পরামর্শ চাইতে কৃষি অফিসে যান ভুক্তভোগী কৃষক। কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভুক্তভোগী কৃষককে সমস্যা সমাধান না দিয়ে উল্টো তাকে গালমন্দ করে অফিস থেকে বের করে দেয়া হয়। বিষয়টি স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। পরে বুধবার এক আদেশে তাকে দিনাজপুরে বদলি করা হয়।

ভুক্তভোগী কৃষক ফজলুর রহমান জানান, এ বছর তার নিজস্ব ৬০ শতাংশ জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। কিছুদিন ধরে পোকার আক্রমণে তার কচি ধান মারা যাচ্ছে। এতে তিনি খুবই দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে সমাধানের জন্য কিছু ধানের চারা নিয়ে কৃষি অফিসে যান। তিনি উপজেলা কৃষি অফিসে গিয়ে জেলা কৃষি কর্মকর্তার ফোন নম্বর চান এবং তার পোকায় কাটা ধানের ভিডিওটি জেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে পাঠানোর অনুরোধ করেন। কিন্তু কৃষি অফিস থেকে তাকে ভেতরে যেতে বলেন। তিনি ভেতরে গিয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে বিষয়টি বললে কৃষি অফিসার তাকে কটাক্ষ করে বলে আপনিই শুধু কৃষক নাকি আরও কৃষক আছে? আমরা তো নিয়মিত বিভিন্ন চকে (জমিতে) যাই। এ রকম অভিযোগ তো আর কোনো কৃষক দেয়নি বলে তাকে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এ সময় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগ দেন অফিসের অন্য স্টাফরাও। একপর্যায়ে কৃষক ফজলুর রহমানকে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়।

পরে ‘আমরা কৃষক মানুষ আমাদের টাকায় আপনাদের বেতন হয়, আপনি কেন জমিতে যাবেন না? এটাতো প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ফজলুর রহমান এমন কথা বললে, জবাবে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি কি আপনার কামলা দেই? আপনি কি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছেন। আপনি বললেই মাঠে যেতে হবে। যা পারেন করেন গা। আপনি বেরিয়ে যান। যদি বয়স্ক লোক না হতেন তাহলে আপনাকে দেখে নিতাম’।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠে থেকে কৃষি ও কৃষকদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার কথা থাকলেও তারা মাঠে যান না। তাই সকালে বাধ্য হয়ে একগুচ্ছ ধান হাতে নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসে পরামর্শের জন্য যান ফজলুর রহমান। উপজেলা চত্বরে ভূক্তভোগী কৃষক এ ঘটনা দুই সাংবাদিককে জানান। তারা ফজলুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে পুনরায় কৃষি অফিসে যান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদারের কক্ষে গিয়ে সাংবাদিকরা কৃষকের এই অভিযোগের বিষয়টি জানান। এ সময় সাংবাদিকদের সামনেই রাজিয়া তরফদার ওই কৃষকের সাথে ধমকের স্বরে কথা বলেন এবং আচরণ ঠিক হয়নি বলে তার দিকেই অভিযোগ তুলেন এবং ইংরেজীতে নানা বুলি আওরান। ওই দুই সাংবাদিক এর প্রতিবাদ করলে তিনি তাদের ওপরও চড়াও হন ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। 

কাওসার

×