ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

এবার ভাড়ায় মিলছে নাতি-নাতনি!

প্রকাশিত: ১৮:০৩, ২১ মার্চ ২০১৭

এবার ভাড়ায় মিলছে নাতি-নাতনি!

অনলাইন ডেস্ক ॥ যৌথ পরিবারের দিন এখন আর নেই। ব্যস্ত সময়ে দাদা-দাদিদের পাশে নাতি-নাতনিদের ঘোরাফেরা প্রায় অলীক দৃশ্য। এ বাস্তব বোঝেন সকলেই, তবু মানুষের মন তো! কিছুতেই নিঃসঙ্গতা আর ঘোচে না। আর তাই এবার ভাড়াতেই মিলছে নাতি-নাতনি। নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির দিনকালে সকলেই একা একা। তবু বয়স্ক মনে ইচ্ছে জাগে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটানোর। যে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল সন্তান-সন্ততিদের, ব্যস্ত সময় তাদের থেকে সে সুযোগ কেড়ে নিচ্ছে। এবার তাই পয়সা দিয়ে নাতি-নাতনির বয়সিদের ভাড়া করেই সাধ মেটাতে হবে বয়স্কদের। সম্প্রতি বেশ কিছু সংস্থা বয়স্কদের নিঃসঙ্গতা ঘোচাতে অভিনব পন্থা নিয়েছে। টাকার বিনিময়ে এই সংস্থাগুলি অল্পবয়সি ছেলে মেয়েদের পাঠাবে প্রৌঢ়-প্রৌঢ়াদের কাছে। সপ্তাহে কয়েকবার এসে তারা ঘুরে যাবে। কখনো বা পড়ে কিছু শোনাবে। দরকার হলে টুকটাক বাইরে বেড়াতেও নিয়ে যাবে। আর কিছু না হলে স্রেফ পাশে বসে গল্পগুজব। মোদ্দা কথা নিঃসঙ্গতার দীর্ঘ প্রহর তারা ভরিয়ে তুলবে তাদের উপস্থিতিতে। ২০১১ সালের জনগণনার নিরিখে এই মুহূর্তে দেশে বয়স্কদের সংখ্যা ১ কোটিরও বেশি। ২০২১-এর মধ্যে সে সংখ্যা আরও বাড়বে। এঁদের প্রত্যেকেরই বয়স ষাটের বেশি। এবং বেশিরভাগ মানুষই নিঃসঙ্গ। এই একাকিত্ব ঘোচাতেই বাড়ছে ছোট ছোট কোম্পানিগুলো। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে দেশে প্রায় পাঁচটি সংস্থা এই কাজ করছে। সংখ্যাটা যে লাফিয়ে বাড়ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রৌঢ়দের কাছে এর গ্রহণযোগ্যতাও বাড়ছে। এক সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, মাসে অন্তত তিনজন করে ক্লায়েন্ট বাড়ছে তাঁদের। অর্থাৎ নিঃসঙ্গতার থাবা এতটাই প্রবল যে অচেনা কাউকে বাড়িতে এন্ট্রি দিতেও দ্বিধা করছেন না তাঁরা। এর জন্য ঘণ্টা হিসেবে তাদের দিতে হচ্ছে ১৫০ টাকা। কিংবা মাসে ২০,০০০ টাকা। বেশিরভাগ কলেজ ছাত্র-ছাত্রীরাই হাতখরচ তুলে নিতে বেছে নিচ্ছেন এই পেশা। তবে শুধু তাঁরাই নয়, অন্যান্যরাও আসছেন এই পেশায়। যার যেরকম পছন্দ সেই অনুযায়ী লোক পাঠায় সংস্থাগুলি। কথায় বলে রক্তের টান নাকি কোনো কিছুতেই পূরণ হয় না। কিন্তু যুগের হাওয়া যেদিকে, তাতে ব্লাড ইজ থিকার দ্যান ওয়াটার-এ কথা আর যেন তেমন খাটছে না। যে সঙ্গ পারিবারিক সূত্রে আসার কথা ছিল, তা আসেনি। তাই টাকা দিয়েই খানিকটা সঙ্গসুখ পাওয়ার চেষ্টা। কে না জানে, বাস্তবের থেকে কঠোর আর কিছু নেই! সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
×