ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১

হ্যাটট্রিক জয়ে সুপার এইটে উইন্ডিজ

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ০০:২৪, ১৪ জুন ২০২৪

হ্যাটট্রিক জয়ে সুপার এইটে উইন্ডিজ

এভাবে পাখির মতো উড়াল দিয়ে নিউজিল্যান্ডের রাচিন রবীন্দ্রর ক্যাচ ধরছেন উইন্ডিজ তারকা আন্দ্রে রাসেল

ঘরের মাঠে এবারের টি২০ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কেন অন্যতম ফেভারিট, সেটিই যেন বুঝিয়ে দিল রোভমান পাওয়েলের দল। প্রথম ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে হারাতে কিছুটা বেগ পেতে হলেও পরের ম্যাচে আরেক ছোট দল উগান্ডাকে উড়িয়ে দেয় ক্যারিবিয়রা। এবার ‘সি’ গ্রুপে সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩ রানের দারুণ জয়ে সুপার এইটের টিকিট নিশ্চিত করল ক্যারিবিয়রা। ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবারের ম্যাচটিতে অবশ্য ঘটনা আর রোমাঞ্চের কমতি ছিল না। 
৫৮ রানে ৬ উইকেট হারানো উইন্ডিজের সংগ্রহ একশ’ পেরোনো নিয়ে যেখানে সন্দেহ ছিল, সেখানে শেরফান রাদারফোর্ডের (৩৯ বলে অপরাজিত ৬৮) শেষের ঝড়ে ৯ উইকেটে ১৪৯ রানের ‘চ্যালেঞ্জিং’ স্কোর গড়ে উন্ডিজ। জবাবে ঠিক ৯ উইকেটে ১৩৬ রানে থামে কেন উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ড। আলজারি জোসেফ ৪ ও গুদাকেশ মোতি নেন ৩ উইকেট। উড়ন্ত এক ক্যাচে নজর কাড়েন আন্দ্রে রাসেল।

ম্যাচসেরা রাদারফোর্ড। টানা দুই হারে কিউইরা এখন গ্রুপ-পর্ব থেকে ছিটটে যাওয়ার শঙ্কায়! এর আগে আফগানদের কাছে বড় ব্যবধানে হারে উইলিয়ামসনের দল। ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২ ম্যাচ খেলে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে রশিদ খানের আফগানিস্তানের সামনে সুপার এইটের হাতছানি। ৩ ম্যাচে ১ জয়ে তিনে উগান্ডা।

২টি করে ম্যাচ খেলে এখনো জয়ের দেখা পায়নি পাপুয়া নিউ গিনি ও নিউজিল্যান্ড। উগান্ডা ও নিউজিল্যন্ডকে উড়িয়ে দেওয়া আফগানিস্তানের নেট রানরেটও (+৫.২২৫) অনেক ভালো। পিএনজির মতো দুর্বল দলের বিপক্ষে ম্যাচ বাকি। আর রশিদরা বাকি দুটি ম্যাচে হারলেও নিউজিল্যান্ডের (-৪.৪২৫) পক্ষে তাদের এই রান রেট টপকে যাওয়া সহজ হবে না। যদিও তাদের খেলা বাকি দুর্বল দুই দল পিএনজি ও উগান্ডার বিপক্ষে।  ম্যাচের শুরুটা সুখকর ছিল না ওয়েস্ট ইন্ডিজের।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দলটি দ্রুতই হারিয়ে ফেলে প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে। ষষ্ঠ বলে জনসন চার্লসকে বোল্ড করেন ট্রেন্ট বোল্ট। ভালো শুরু করা নিকোলাস পুরানকে টিকতে দেননি টিম সাউদি। রোস্টন চেইস, রোভমান পাওয়েল ও ব্রেন্ডন কিংও পারেননি হাল ধরতে। খাদের কিনারে থাকা দলকে কক্ষপথে ফেরানোর চেষ্টা চালান রাদারফোর্ড।

পরের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে ছোট ছোট তবে বেশ কার্যকর জুটি গড়ে রান বাড়াতে থাকেন তিনি। ১৯তম ওভারে ড্যারিল মিচেলকে তিন ছক্কা মারেন রাদারফোর্ড। পরে একটি সিঙ্গেল নিয়ে ওই ওভারেই ৩৩ বলে পূরণ করেন ফিফটি। ইনিংসের শেষ ওভারে বাঁহাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনারকে দুই চার ও এক ছক্কায় ওড়ান তিনি।

শেষ দুই ওভারে রান আসে ১৯ ও ১৮। ১৮ ওভার শেষে রান ৯ উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান যেখানে ছিল ১১২। ২০ ওভারে সেই ৯ উইকেটেই তাদের স্কোর দাঁড়ায় ১৪৯! 
রান তাড়ায় নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে নিউজিল্যান্ড। তৃতীয় ওভারে বিদায় নেন ডেভন কনওয়ে। ভালো শুরু পাওয়া ফিন অ্যালেনকে ইনিংস বড় করতেদেননি পেসার আলজারি জোসেফ। নিজের পরপর তিন ওভারে কেন উইলিয়ামসন, রাচিন রবীন্দ্র ও মিচেলকে ফিরিয়ে প্রতিপক্ষের মিডল অর্ডার গুঁড়িয়ে দেন স্পিনার মোতি। এরপর কিছুক্ষণ লড়াই করেন গ্লেন ফিলিপস।

কিউইদের ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪০ রান করার পথে ৩৩ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চার মারেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। শেষ ওভারে ৩৩ রানের সমীকরণে শেফার্ডকে তিন ছক্কা মারেন স্যান্টনার। তাতে কেবল কমে হারের ব্যবধান।  
সংক্ষিপ্ত স্কোর : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪৯/৯ (২০ ওভার; কিং ৯, চার্লস ০, পুরান ১৭, চেইস ০, পাওয়েল ১, রাদারফোর্ড ৬৮*, আকিল ১৫, রাসেল ১৪, শেফার্ড ১৩, জোসেফ ৬, মোতি ০*; বোল্ট ৩/১৬, সাউদি ২/২১, ফার্গুসন ২/২৭, নিশাম ১/২৭, স্যান্টনার ১/২৭) নিউজিল্যান্ড ১৩৬/৯ (২০ ওভার; কনওয়ে ৫, অ্যালেন ২৬, রবীন্দ্র ১০, উইলিয়ামসন ১, মিচেল ১২, ফিলিপস ৪০, নিশাম ১০, স্যান্টনার ২১*, বোল্ট ৭; আকিল ১/২১, রাসেল ১/৩০, জোসেফ ৪/১৯, মোতি ৩/২৫)।
ফল ॥ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৩ রানে জয়ী।   
ম্যাচসেরা ॥ শেরফান রাদারফোর্ড (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।

×