ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

না ফেরার দেশে ভোরের কাগজের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আতিক 

প্রকাশিত: ১৭:০৯, ২৩ এপ্রিল ২০২৪; আপডেট: ১৮:০৫, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

না ফেরার দেশে ভোরের কাগজের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আতিক 

আতিকুর রহমান আতিক। ছবি: ফেসবুক থেকে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী, দৈনিক ভোরের কাগজের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক আমাদের মায়া ত্যাগ করে মহান সৃষ্টিকর্তার ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বার্তা সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিনসহ ভোরের কাগজ পরিবার।

ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।শ্রদ্ধা নিবেদনভোরের কাগজের সিনিয়র রিপোর্টার কামরুজ্জামান খান জানিয়েছেন, ভোরের কাগজ কার্যালয়ে দুপুর ১২টায়, জাতীয় প্রেস ক্লাবে দেড়টায় এবং ডিআরইউতে দুপুর ২টায় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। 

এ সময় তার কফিনে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানায় ভোরের কাগজ পরিবার এবং বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতা ও সদস্যরা। পরে তার লাশ গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে দাফন করা হবে। তিনি স্ত্রী ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। 

সালাম-বরকত আবাসিক হলের ছাত্র ও বর্তমানে শিবপুর শহীদ আসাদ কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. মো.জগলুল হায়দার ইকবাল বলেন, আতিক ভাই খুবই আমুদে, সহজ সরল, আড্ডাবাজ  ও মিশুক প্রকৃতির একজন মানুষ ছিলেন। ক্যাম্পাস থেকেই দেখেছি তিনি কাজের প্রতি সিরিয়াস ও প্রতিশ্রুতিশীল স্বভাবের একজন মানুষ ছিলেন। শহীদ সালাম বরকত হলের ছাত্রাবস্থায় কারও সঙ্গে কখনও কোন ঝগড়াবিবাদ এমন কী কথাকাটাকাটি পর্যন্ত হতে দেখিনি। তার শিক্ষকতায় আসার প্রবল আগ্রহ ছিল। এজন্য তিনি  বিসিএস পরীক্ষাও অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ সুপ্রসন্ন ছিল না। ভোরের কাগজ পত্রিকায় তিনি একজন দায়িত্ববান কর্মকর্তা হিসেবে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। আমি তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি।

আতিকুর রহমান আতিকের সাবেক সহকর্মী সুমন মোস্তফা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সাংবাদিকতায় উদাহরণ হয়ে থাকতে পারতেন আতিক ভাই। তিনি খুবই সৎ মানুষ ছিলেন। সাংবাদিকতার অনেক কিছু ওনার কাছ থেকে শিখেছি। এভাবে চলে যাবেন কখনই ভাবতে পারিনি।

আতিকুর রহমান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পড়ার সময় ১৯৯৬ সালে দৈনিক আল আমিন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। ১৯৯৭ সালে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার জাবি প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন। একই বছর সাপ্তাহিক অন্বেষা পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০০১ সালে মানবজমিনে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। ২০০৫ সালে পদোন্নতি পেয়ে সিনিয়র রিপোর্টার হন। 

২০০৬ সালে সান্ধ্যকালীন দৈনিক দিনেরশেষে পত্রিকায় যোগ দিয়ে ডেপুটি চিফ রিপোর্টার হন। পরবর্তী সময়ে চিফ রিপোর্টার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এরপর কিছুদিন চিফ রিপোর্টার হিসেবে দৈনিক আজকালের খবর পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন তিনি। 

২০১৫ সালে যোগ দেন দৈনিক ভোরের কাগজে। সর্বশেষ যুগ্ম বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ কালচারাল রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের বেস্ট কালচারাল রিপোর্টার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন তিনি।

১৯৭৬ সালের ১২ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার কদমতলী ইউনিয়নের গারাট্টা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মো. আতিকুর রহমান হাবিব। তার বাবার নাম প্রয়াত মোহাম্মদ আবু তালেব। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। 

ব্রেন টিউমারের সমস্যা নিয়ে গত ১২ এপ্রিল রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আতিকুর রহমান। গত ১৫ এপ্রিল তার মস্তিষ্কে অস্ত্রপচার সম্পন্ন হয়। সর্বশেষ হাসপাতালটির পোস্ট অপারেটিভ ইউনিটে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন তিনি।

এসআর

×