ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

অরক্ষিত এমসি কলেজ এলাকায় ক্যাম্প স্থাপনসহ ছয় দফা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর

রিমান্ড শেষে আদালতে তিন আসামির জবানবন্দী

প্রকাশিত: ২২:১৩, ৩ অক্টোবর ২০২০

রিমান্ড শেষে আদালতে তিন আসামির জবানবন্দী

সালাম মশরুর, সিলেট অফিস ॥ অরক্ষিত সিলেট এমসি কলেজ এলাকা। নগরীর পূর্ব-উত্তর দিকে বিশাল এলাকা নিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে এখন সকল মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে। সিলেটে ছাত্র রাজনীতির আধিপত্য নিয়ে দাঙ্গাহাঙ্গামা, বোমাবাজি, সংঘর্ষের কারণে নগরবাসীর কাছে এলাকাটি অধিক পরিচিত। এমসি কলেজ এলাকায় ছিনতাই, বখাটেপনা, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা, সম্ভ্রমহানির ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। এই নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন তথা সচেতন মহল কখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেননি। এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনার পর কলেজ এলাকায় অপরাধকর্মকান্ড ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। কলেজ এলাকায় অপরাধ কর্মকান্ডের সঙ্গে সময়ে সময়ে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের সম্পৃক্ততার কারণে সাধারণ মানুষ এ নিয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়নি। এমসি কলেজ ছাত্রাবাস এলাকার সঙ্গেই রয়েছে সিলেট কৃষি বিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সরকারী দুগ্ধ খামার, ইকোপার্ক, বিশাল ফরেস্ট এলাকা সে সঙ্গে চা বাগান। এলাকাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। নগরবাসী ছাড়াও দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আগত পর্যটকরা এই এলাকায় প্রবেশ করে থাকেন। সার্বিকভাবে বিষয়টি নজরে এনে পূর্বেই এই এলাকার নিরাপত্তা বিধানে একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা প্রযোজন ছিল। এখন সমস্বরে এখানে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের দাবি উঠছে। এদিকে এমসি কলেজ ছাত্রবাস এলাকায় গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে ভিন্নমাত্রার তথ্য নানানভাবে আলোচনায় আসছে। নির্যাতিতের স্বামীর আচরণ নিয়েও সন্দেহ পোষণ করছেন অনেকে। ঘটনার পর মামলার এজাহারে নির্যাতিত গৃহবধূর নাম-ঠিকানা সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ না করা ও নিজেদের বিয়ের ব্যাপারে পরিবারের সম্পৃক্ততা না থাকার বিষয়টিও এখন আলোচনায় আসছে। ধর্ষণ ঘটনায় জড়িতদের কারো সঙ্গে এই দম্পতির পরিচিতি ছিল কিনা এবং এটি পরিকল্পিত কিনা সে বিষয়টিও ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। মামলার তদারককারী কর্মকার্তারা এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন। অর্জুন লস্কর আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে ॥ সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণ মামলার ৪ নম্বর আসামি ছাত্রলীগ নেতা অর্জুন লস্কর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে। সে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে আদালতের কাছে। শুক্রবার বিকেলে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক জিহাদুর রহমানের আদালতে তার জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়। এছাড়া মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও ৫ নম্বর আসামি রবিউলকে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে নেয়া হয়েছে। জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে তাদেরকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় আসামিরা আদালতে জবানবন্দী দিতে সম্মত হওয়ায় তাদের একে একে জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়। এর আগে গত সোমবার তাদের ৩ জনের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান। এছাড়া মামলায় গ্রেফতারকৃত আরও ৫ আসামির ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। শনিবার মামলায় রিমান্ডে থাকা আসামি রাজন, আইনুল ও মুহিবুর রহমান রনিকে রিমান্ড শেষে আদালতে নেয়ার কথা রয়েছে। ৫ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে নেয়া হয় সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি সাইফুর, অর্জুন ও রবিউলকে। শুক্রবার দুপুরে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে দিয়ে তাদেরকে আদালত প্রাঙ্গণে হাজির করেন সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান (রহ.) থানা পুলিশ। পরে তাদেরকে সিলেট মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট ১ আদালতে হাজির করা হয় বলে নিশ্চিত করেন সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য ভূষণ চৌধুরী। এর আগে ধর্ষণ মামলায় এজাহারভুক্ত ২ নং আসামি সাইফুর রহমান ও ৪ নং আসামি অর্জুন লস্কর গত সোমবার দুপুরে এবং একইদিন বিকেলে মামলার ৫নং আসামি রবিউল ইসলামকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। সেদিন তাদের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান। এদিকে এ মামলায় গ্রেফতারকৃত সন্দেহভাজন আসামি রাজন আহমদ, আইন উদ্দিন ও প্রধান ও ১ নং আসামি মুহিবুর রহমান রনি, ৩ নং আসামি তারেক ও ৬ নং আসামি মাহফুজুর রহমান মাছুমও রিমান্ডে রয়েছেন। তাদের মধ্যে সন্দেহভাজন আসামি রাজন আহমদ, আইন উদ্দিন ও প্রধান ও ১ নং আসামি মুহিবুর রহমান রনির রিমান্ডের মেয়াদ আগামীকাল শনিবার শেষ হবে। রিমান্ড শেষে তাদেরও আদালতে তোলার কথা রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিনে পুলিশের রিমান্ডে থাকা সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার ৩ নং আসামি তারেক ও ৬ নং আসামি মাহফুজুর রহমান মাছুমের রিমান্ডের মেয়াদ শেষ হবে আগামী রবিবার। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ॥ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনার ক্ষেত্রে কলেজ প্রশাসনের তদারকিতে ঘাটতি ছিল। অবশ্য অপর্যাপ্ত সীমানা প্রাচীর ও জনবলের অভাবের কারণেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা তদন্ত কমিটি সার্বিকভাবে যে চিত্র পেয়েছে, তাতে তদারকির ক্ষেত্রে এই ঘাটতি দেখেছে। এ জন্য কলেজ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আরও কর্মতৎপর ও দায়িত্বশীল হওয়া এবং ক্যাম্পাসকে নিরাপদ রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্যাম্প স্থাপনসহ ছয় দফা সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনার পর কলেজ প্রশাসনের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে গত সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) মোঃ শাহেদুল খবীর চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি এমসি কলেজ ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে এই প্রতিবেদন তৈরি করে। সূত্র জানায়, কমিটি ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায় ঘাটতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণ ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছে। তবে কলেজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন সুপারিশ করেনি কমিটি। কমিটি বলছে, প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্ত কমিটি আরও যেসব সুপারিশ করেছে তার মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরো ক্যাম্পাসে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাতি স্থাপন ও জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করা, রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতাদের সহযোগিতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়মিত পরিদর্শন করা। কলেজ ক্যাম্পাসে বিনা প্রয়োজনে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ ॥ সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সব কলেজের অধ্যক্ষদের চিঠি দিয়ে এই নিষেধের কথা জানিয়ে দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। চিঠিতে বলা হয়, ‘কলেজ ক্যাম্পাসে বিনা প্রয়োজনে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’ এতে বলা হয়, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ এই পদক্ষেপ। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার বিষয়টি তুল ধরে চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কলেজ ক্যাম্পাসগুলোতে নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং কলেজের সব সরকারী সম্পদ ও সরঞ্জামের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সচেষ্ট থাকতে হবে। অধ্যক্ষদের নয় দফা নির্দেশনা দিয়ে জরুরিভিত্তিতে তা বাস্তবায়নের জন্য ‘বিশেষভাবে’ অনুরোধ জানিয়েছে মাউশি। কলেজ ক্যাম্পাসে জনসাধারণকে ঢুকতে বারণ করা ছাড়াও মাউশির অন্য নির্দেশনাগুলো হলো- ছাত্রাবাস বন্ধ রাখা ও ছাত্রাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ক্যাম্পাসে পুলিশ টহল জোরদার করা, প্রতিষ্ঠানের মূল ফটকসহ সব প্রবেশপথে সর্বক্ষণিক পাহারা রাখা, প্রতিষ্ঠানে ভিজিল্যান্স টিম গঠন এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে নিয়মিত পরিদর্শন প্রতিবেদন দাখিল করা, অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম চালু রাখা, আঞ্চলিক পরিচালককে ক্লাস নেয়ার তথ্য দেয়া, শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ মনিটরিং এবং অভিভাবকের সঙ্গে সংযোগ সাধন করা, শিক্ষার্থীদের স্বাস্ব্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া এবং কলেজের বিজ্ঞানাগার ল্যাব, আইসিটি ল্যাব, লাইব্রেরিসহ সরকারী সম্পত্তি ও নথি রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। মানববন্ধন ॥ ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ন্যক্কারজনক গণধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার রাতে সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২০, ২১ ও ২৪নং ওয়ার্ড ও টুলটিকর ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনসাধারণের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় ৩ অক্টোবর শনিবার ধর্ষণকারীদের ফাঁসির দাবিতে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের সামনে এলাকাবাসীকে নিয়ে মানববন্ধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে এমসি কলেজে পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর উদ্যোগ নেয়ার জন্য মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, টিলাগড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মোতোয়ালি ও মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মকসুদ আলী, জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আলহাজ আতাউর রহমান, মহানগরীর ২০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিব, টিলাগড় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাঃ ছমর উদ্দিন মানিক, সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাঃ এলাইছ মিয়া, মনিপুরি আখড়া কমিটির সহসভাপতি শ্রী চন্দ্র শেখর বদর, সহসভাপতি সুরজিৎ সিংহ, সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সদস্য আলী ওয়াসিকুজ্জান চৌধুরী অনি প্রমুখ। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন সিলেট বিভাগ, জেলা ও মহানগর এবং বাংলাদেশ যুব উন্নয়ন পরিষদ ও সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের (সনাপ) যৌথ উদ্যোগে সিলেট নগরীতে এক পদযাত্রা বের করা হয়।
×