বাবু ইসলাম ॥ সিরাজগঞ্জ উপজেলা সদরে নির্মিত স্বাধীনতা স্কয়ারের চূূড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। এটি স্থাপন করে স্বাধীনতা স্কয়ারকে আরও প্রাণোচ্ছল করে তোলা হয়েছে। জাতীয় চার নেতা-শহীদ এম মনসুর আলী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও এএইচএম কামরুজ্জামানের প্রতিকৃতিও স্থাপন করা হয়েছে। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারি, শহীদ দিবস, মুক্তিযোদ্ধা দিবসে গণতন্ত্রপ্রিয় নানা বয়সী মানুষের ঢল নামে এই স্বাধীনতা স্কয়ারে। এ প্রজন্মের সন্তানরা স্বাধীনতা স্কয়ারে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতাকে দেখেন এবং তাদের সম্পর্কে বড়দের কাছে থেকে জেনে নেন ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধ, নিরস্ত্র বাঙালীর ওপর পাকি হায়েনাদের সশস্ত্র হামলা, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়সহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা সম্পর্কে তারা জেনে নেয়। এ প্রজন্ম মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ধারণ করবে স্বাধীনতা স্কয়ার থেকে। এই স্বাধীনতা স্কয়ারের শিল্পকর্ম করেছেন স্থপতি বিপ্লব দত্ত। চারদিকে আম-জাম-কাঁঠালসহ নানা জাতের গাছগাছালির সবুজ ছায়ায় নির্মাণ করা হয়েছে এই স্কয়ার। পাশেই বয়ে গেছে ছোট্ট নদী। তবে নদী এখন ভরাট হয়ে অনেকটা খালে পরিণত হয়েছে। চৈত্র মাসে পানি না থাকলেও বর্ষায় পানিতে টইটম্বুর থাকে এই খাল। পরিবেশটা খুবই সুন্দর। এমন সুন্দর, মনোরম পরিবেশে কাজীপুর উপজেলা সদরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ডাকবাংলোর সামনে নির্মিত স্বাধীনতা স্কয়ারের চূড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলা সদরে যেতে সড়কের গোলচত্বরেই শেখ মুজিবসহ জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এম মনসুর আলীর ম্যুরাল শোভা পাচ্ছে।
কাজিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান সিরাজী উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে স্বাধীনতা স্কয়ার নির্মাণ প্রসঙ্গে বলেছেন- এটি ছিল সময়ের দাবি। নতুন প্রজন্মের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, যুগে যুগে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদের আঙ্গিনায় স্থাপিত এই স্বাধীনতা স্কয়ারে নতুন প্রজন্ম এসে দেখবে মহান স্বাধীনতার স্থপতি ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত ও আজীবনের রাজনৈতিক সহচর শহীদ এম মনসুর আলীসহ জাতীয় নেতার ইতিহাস। তখন বাস্তবতাকে আর কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। এখানে যত মানুষ আসবে সবাই ইতিহাসকে মনে করবে। জাতীয় চার নেতাসহ বঙ্গবন্ধুকে তত বেশি ভালবাসবে। এ কারণেই প্রিয় নেতা মোহাম্মদ নাসিম এই স্বাধীনতা স্কয়ার নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া কাজিপুরের মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মোহাম্মদ নাসিম এবং নৌকার হাল ধরে প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কাজিপুরের মানুষ বঙ্গবন্ধু, শহীদ মনসুর আলী এবং নৌকা ছাড়া আর কিছু জানেনি। স্বাধীনতা স্কয়ারের চূড়ায় জাতির পিতার ছবি স্থাপন করে স্বাধীনতা স্কয়ারকে আরও প্রাণোচ্ছল করে তোলা হয়েছে।
কাজিপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী অফিসার জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেছেন- উত্তরাঞ্চলের কোন উপজেলায় স্বাধীনতা স্কয়ার নির্মিত হয়েছে বলে জানা নেই। এই স্বাধীনতা স্কয়ার নির্মাণের ফলে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ এম মনসুর আলীসহ জাতীয় চার নেতাকে এ প্রজন্মের মানুষ হৃদয়ে ধারণ করবে। তারা স্বাধীনতা স্কয়ারে এসে দেখতে পাবে, এ দেশে কারা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান মুকুল বলেছেন- কাজিপুরে স্বাধীনতা স্কয়ার নির্মাণ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ অঞ্চল বিশেষ করে চর এলাকা ছিল স্বাধীনতাপ্রিয় মানুষের নিরাপদ স্থান। সেই কাজিপুরে স্বাধীনতা স্কয়ার নির্মাণে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। এক সময়ের ভাঙ্গনে বিধ্বস্ত কাজিপুর প্রিয় নেতা মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে জেগে উঠেছে। ২০১৮ সালের মহান স্বাধীনতা দিবসে এ স্কয়ারের উদ্বোধন করেছেন তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি এবং সাবেক এমপি তানভীর শাকিল জয়।