স্টাফ রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে এবং তিনি আগের চেয়ে অনেক ভাল আছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে মাহবুবুল হক। বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। পরিচালক জানান, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এখন রোজাও রাখছেন। হাসপাতালে খালেদার সঙ্গে থাকা গৃহকর্মী ফাতেমা প্রতিদিন তার পছন্দমতো যা ইফতার সামগ্রী তৈরি করছেন তাই তিনি খাচ্ছেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া যেসব সমস্যা নিয়ে এখানে ভর্তি হয়েছিলেন, সে সব সমস্যা ধীরে ধীরে কমছে। তার ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসের উন্নতি হয়েছে, দুর্বলতা কাটছে। তার শারীরিক অবস্থার ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে।
হাসপাতাল পরিচালক বলেন, গণমাধ্যমে গত কয়েক দিন ধরে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে মনগড়া সংবাদ ও বক্তব্য প্রকাশিত হচ্ছে, যা মোটেও সঠিক নয়। তিনি শারীরিকভাবে আগের চেয়ে এখন অনেক ভাল আছেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে। উনি ইনসুলিন নিচ্ছেন এবং ডায়াবেটিসের ওষুধও খাচ্ছেন। আর্থ্রাইটিসের ব্যথা অনেক কমে গেছে। ওনার দুর্বলতা অনেক ইম্প্রুভ করেছে, দুর্বলতা এখন নেই। নতুন কোন সমস্যার কথা তিনি এখনও বলেননি। উনি ভাল আছেন, সাবলীল আছেন। কিছুদিন আগে খালেদা জিয়ার জিহ্বায় ঘা (ফাংগাল ইনফেকশন) হলেও তা ৯০ শতাংশ সেরে গেছে বলে জানিয়ে মাহবুবুল হক বলেন, এখন উনি নরমাল খাবার খাচ্ছেন। রোজা রাখছেন। ছোলাসহ অন্য ইফতারের আইটেমগুলো খাচ্ছেন। উনার চয়েস মতো ইফতারের আইটেম উনার সঙ্গে যে মেয়েটা আছে সে রান্না করে দেয়। কেবিনের পাশে ছোট একটা কিচেন আছে সেখানে চুলা আছে।
উল্লেখ্য, ১ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস ও ডায়াবেটিসের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধিতে ভুগছেন। তাকে বর্তমানে হাসপাতালের ৬২১ নম্বর কেবিনে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বিএসএমএমইউতে ভর্তির পর তার জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। এই বোর্ডের প্রধান হলেন ডাঃ জিলন মিঞা সরকার। বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন ডাঃ সৈয়দ আতিকুল হক, ডাঃ তানজিমা পারভিন, ডাঃ বদরুন্নেসা আহমেদ ও ডাঃ চৌধুরী ইকবাল মাহামুদ। এ ছাড়া ডাঃ শামীম আহমেদ এবং ডাঃ মামুন মেডিক্যাল বোর্ডকে সহযোগিতা করছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে হাসপাতালের পরিচালক মাহবুবুল হক বলেন, আমি তো প্রতিদিন যাই না। আমার বোর্ড প্রতিদিন যায়। যতদিন আমি উনার কাছে গেছি, উনি সহজ, সানন্দ্যে, হাস্যোজ্জ্বল চেহারা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা প্রায় দুই মাসে কখনও দেখিনি যে উনি একটু এনোয়েড হয়েছেন, আমাদের ওপর আনস্যাটিসফায়েড। আমি মরে যাচ্ছি, আমার চিকিৎসা দিচ্ছে না- এ রকম কোন শব্দ উনার মুখে শুনিনি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে কয়েকদিন আগে মিডিয়াতে বলা হয়েছিল যে, উনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আসলে সম্পূর্ণ ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে, আমাদের মেডিক্যাল বোর্ড ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ না করেই ওই সংবাদ মনগড়া ও ভুল তথ্য দিয়ে করা হয়েছে।
পরিচালক বলেন, চিকিৎসার বিষয়ে আমরা উনার মতামত নিয়ে থাকি। আমরা কোন রকমের প্রেসার ক্রিয়েট করছি না যে, আপনি চলে যেতে পারেন বা যান। উনি যদি কম্ফোরটেবল মনে করেন আর উনার হসপিটালে থাকার দরকার নেই তাহলে যাবেন।
এ সময় খালেদার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক জিলন মিঞা সরকার, হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক নাজমুল করীম, উপ-পরিচালক খুরশেদ আলম, সহকারী পরিচালক বেলাল সরকার উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালক
বেগম জিয়া আগের চেয়ে অনেক ভাল আছেন
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: