স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদের অস্তিত্ব বিলীন হতে চলেছে। একদা খরস্রোতা কপোতাক্ষে ইঞ্জিনচালিত স্টিমার, নৌকা চললেও এখন দখলদারদের দৌরাত্ম্যে মরাখালে পরিণত হয়েছে।
যশোরের ঝিকরগাছার ছুটিপুর থেকে মাটশিয়া খেয়াঘাট পর্যন্ত কপোতাক্ষ নদের বুকে অন্তত শতাধিক পুকুর বানানো হয়েছে। নদের মাঝখান বরাবর দখল করে বাড়ি তৈরি করা হয়েছে বেশ কয়েকটি স্থানে। পাশাপাশি সারা নদে মাছ ধরার নামে রয়েছে ভেসাল, কোমর, চান্দা, নেটপাটাতন ও কচুরিপনা আটকানো। ছুটিপুর বাজারে সিরাজুল কমপ্লেক্স, ঝিকরগাছা বাজারের বোটঘাটে কফিলউদ্দীনের (পৌর কাউন্সিলর) বাড়ি, ঝিকরগাছা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালিত মুহাম্মদিয়া নুরানি মাদ্রাসা ভবনের অংশবিশেষ, বাঁকড়া বাজারে মরহুম মাস্টার লোকমান আলী গংদের বাড়ি, মোসলেম আলী গংদের ভবন, ব্রিজের পূর্বপাশে গাজী আব্দুস সাত্তার, গাজী কওছার আলী ও সিরাজুল ইসলামের স্থাপনা নদের ভেতর থেকেই গড়ে তোলা হয়েছে। অথচ স্থাপনকারীরা সকলেই দাবি করেন তাদের বৈধ সম্পত্তিতে ইমারত নির্মাণ করা হয়েছে। এ বিষয় কফিলউদ্দীন (পৌর কাউন্সিলর) জানিয়েছেন, কেনা সম্পত্তিতে তার বাড়ি। কপোতাক্ষ নদের কোন জায়গা তিনি দখল করেননি। নদের বুকে তিন পাশ বেঁধে পুকুর তৈরি প্রসঙ্গে শরিফুল ইসলাম শরিফ (পৌর কাউন্সিলর) দাবি করেন তিনি পৈত্রিক ও কেনা সম্পত্তিতে পুকুর বানিয়েছেন। একই রকম দাবি করেন সরদার সাঈদ আহম্মদ। তিনি এক ইঞ্চিও কপোতাক্ষ নদের জমি দখল করে পুকুর বানাননি বলে জানিয়েছেন। কপোতাক্ষ নদ নিয়ে লেখক মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ নদী আইন মোতাবেক স্থাপনা উচ্ছেদের আহ্বান জানিয়েছেন। কপোতাক্ষ নদ বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক অনিল চক্রবর্তী বলেন, ‘ভরা মৌসুমে নদের পানি যে পর্যন্ত যাবে নদের সীমানা সেই পর্যন্ত, এটা নদী আইন। অথচ দখলকারীরা ২৭ ও ৬২ সালের রেকর্ডের বুনিয়াদে নদ খাচ্ছে’। জানতে চাইলে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা নদীরক্ষা কমিটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, সমস্যাটি দীর্র্ঘদিনের। নদ দখলকারীদের তালিকা আমাদের কাছে আছে। শীঘ্রই পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: