অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ই-পাসপোর্ট বানানোর মেশিনপত্র কেনা হচ্ছে। দেশের খাদ্য চাহিদা বিচেনায় নিয়ে ক্রয় করা হবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম। পনের বছর মেয়াদে ভারত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। ব্যাংক সুদ কমানোর বিষয়ে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, ব্যাংকের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে আনতে একটু সময় লাগবে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, সুদ হার কমাতেই হবে।
বুধবার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণলয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ওই সময় তিনি বলেন, অটোমেটেড বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার আওতায় ২ মিলিয়ন পাসপোর্ট ক্রয় এবং ২৮ লাখ পাসপোর্স বানানোর সারঞ্জম অর্থাৎ মেশিনপত্র কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার । যাতে পরবর্তী পাসপোর্ট বাই বাংলাদেশে তৈরি করা যায়। এতে ব্যায় হবে হবে ৩ হাজার ৩৩৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। জি টু জি (সরকার টু সরকার) ভিক্তিতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এ সকাল পণ্য ও সেবা জার্মানি ক্রেয় করা হবে। যন্ত্রে কাগুজে পাসপোর্টের দিন শেষ হয়েছে বেশ আগে। যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট-এমআরপি) ধারণাও প্রায় শেষ। কারণ, যুগ এখন ইলেক্ট্রনিক বা ই-পাসপোর্টের। এর মধ্যে বিশ্বের ১১৯টি দেশে চালু হয়ে গেছে এই পাসপোর্ট। পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। আগামী ডিসেম্বর থেকে চালু হতে পারে ই-পাসপোর্ট।
৫০ হাজার মেট্রিক টন গম কিনছে সরকার ॥ দেশে প্রয়োজনীয় খাদ্য চাহিদা পূরণে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম সংগ্রহ করছে সরকার। এ জন্য সরকারকে ব্যয় করতে হবে ১০৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্যাকেজ-৬ এর আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম ক্রয়ের একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ২৫৩ দশমিক ৩৮ মার্কিন ডলারে প্রতি মেট্রিক টন হিসেবে এ গম সরবরাহ করবে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স এ্যাগ্রোকোর ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। এ হিসেবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম সংগ্রহ করতে সরকারের ব্যয় হবে ১০৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি ॥ দেশের চাহিদা মেটাতে ১৫ বছর মেয়াদে ভারত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয় করবে সরকার। স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে ভারত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। চলতি বছরের ১ আগস্ট থেকে ভারতের সেমক্রপ গায়ত্রী পাওয়ার লিমিটেডের নিকট থেকে কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ দেশের সঞ্চালন লাইনে যোগ হবে। চলতি বছরের ১ আগস্ট থেকে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসা বিদ্যুতের প্রতি কিলোওয়াটের দাম হবে ৪ টাকা ৬৯ পয়সা। আর দীর্ঘ মেয়াদে ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০৩৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসা প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম পড়বে ৬ টাকা ১৭ পয়স। এছাড়া বৈঠকে ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ১৩ কোটি ৭৪ লাখ ৭০ হাজার বই ছাপানোর একটি ক্রয় প্রস্তাবেরও অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ১৮৮টি লটে দেশে এসব বই ছাপানোর জন্য সরকারের ব্যয় হবে ৪৩৩ কোটি ৪৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
সুদহার ৯ শতাংশে আনতে সময় লাগবে ॥ সব ব্যাংকের ঋণের সুদহার এক অঙ্কে অর্থাৎ ৯ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী বলেন এ টার্গেটটাই কঠিন ছিল। আমি বোধ হয় তখনই বলেছিলাম এটি যত জলদি করা যায়। কারণ এত কুইকলি করা সব ব্যাংকের পক্ষে সম্ভব নয়। কিছু কিছু ব্যাংক এটি বাস্তবায়ন করেছে, কিছু কিছু ব্যাংক এখনও করেনি, এতে করে ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে কি না? -জানতে চাইলে তিনি বলেন, না বিশৃঙ্খলা হবে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক দেখভাল করবে।
প্রসঙ্গত, প্রথম পর্যায়ে ব্যাংকগুলো শুধু শিল্প ঋণে ৯ শতাংশ সুদ নেবে। আর আমানতকারীদের তিন মাস মেয়াদে আমানতের সুদ দেবে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ। পর্যায়ক্রমে অন্য সব ক্ষেত্রে সুদহার কমানো হবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: