স্টাফ রিপোর্টার ॥ রেললাইনে বাবা-মেয়ের চাঞ্চল্যকর আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার মূল আসামি ফারুকের ধারণা ছিলÑ এ ঘটনায় তার কিছুই হবে না। কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকলেই এ ঘটনা সবাই ভুলে যাবে। তখন আবার আগের
মতোই স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সম্ভব হবে। এমন ধ্যান-ধারণা নিয়েই গত এক মাস ধরে ঘটনাস্থল শ্রীপুর ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে ছিল ফারুক। কিন্তু র্যাব যে তাকে অনুসরণ করছিল ছায়ার মতোÑ সেটা ছিল তার ধারণাতীত। ধরা পড়ার পর এমনই তথ্য ফাঁস করেছে এই নরপশু। নিজের মেয়ের বয়সী এক শিশুকন্যাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের পরও তার টনক নড়েনি। তার বদ্ধমূল ধারণা এমন কত ঘটনাই তো ঘটে প্রতিনিয়ত। সব ঘটনায় তো আর হইচই হয় না। মানুষ অনেক ঘটনা জানতেও পারে না।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষক ফারুক আরও জানিয়েছে, শ্রীপুরের পল্লীতে তার লালসার শিকার হওয়া কিশোরী বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াবে, বিচার না পেয়ে তার বাবা তাকে নিয়ে রেললাইনে আত্মহত্যা করবে এমনটি তার মাথায় ছিল না। ফারুকের ভাষায়, ‘এ ঘটনা এত দূর গড়াবে, সাংবাদিকরা লেখালেখি করবে, মানবাধিকার চেয়ারম্যান সেখানে ছুটে যাবে, এটা জানা একবারও মাথায় আসেনি।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার নায়ক ফারুককে শনিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী ইসলামনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান জানান, ঘটনার পর র্যাব বিষয়টির ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরই ধারবাহিকতায় শনিবার প্রধান আসামি ফারুককে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে শুক্রবার সকালে বোরহান (৩০) নামে আরেক আসামিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গোপনে খবর পেয়ে নেত্রকোনা জেলার ঝানঝাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে বোরহানকে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য, প্রশাসনের কাছে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিকার না পেয়ে গত ২৯ এপ্রিল শ্রীপুর স্টেশনের কাছে পালিত মেয়ে আয়েশাকে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন হযরত আলী (৫৫)। এই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে নিহত হযরত আলীর স্ত্রী হালিমা বেগম সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় দেশে তোলপাড় দেখা দেয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: