মহড়ার সময় ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করছে রুশ সেনারা
কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া। এ সুযোগে ইউক্রেন সীমান্তে অত্যাধুনিক হাইপারসনিক অস্ত্র জড়ো করছে পুতিনের বাহিনী। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের নির্দেশে মহড়া করা হচ্ছে। মহড়ার প্রথম ধাপে ইস্কান্দার ও কিনজাল ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
ধাপে ধাপে বিভিন্ন ইউনিট এবং আরও শক্তিশালী সরঞ্জাম আনা হবে। এই মহড়ায় রাশিয়ার সাউদার্ন মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনী রয়েছে। এটি ইউক্রেনের পাশেই অবস্থিত। শুধু তাই না, এখানে ইউক্রেনের কিছু অংশ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণেও রয়েছে। খবর আরটি ও আলজাজিরার।
পরমাণু বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধে পশ্চিমাদের বিরত রাখতে পুতিনের সতর্ক সংকেত হিসেবে এই মহড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইউক্রেনকে অস্ত্র ও গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু সেনা পাঠায়নি তারা। রাশিয়া গত বছর কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র স্থাপন করছে বলে জানিয়েছিল। সেখানে বেলারুশও থাকবে বলে দুই দেশই জানিয়েছিল।
এদিকে ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনায় আবারও হামলা করেছে রাশিয়া। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত সুমি অঞ্চলের জ্বালানি স্থাপনায় এই হামলা চালিয়েছে দেশটি। এতে ৫ লাখেরও বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির জ্বালানি মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জিত একটি রুশ যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। রুশ অধিকৃত ক্রিমিয়ায় অবস্থিত জাহাজটি ধ্বংসের দাবি করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, একটি দূরপাল্লার আক্রমণ করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। সামরিক বাহিনী আরও জানিয়েছে, হামলায় কী ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত করতে আরও সময় লাগবে। ১৯ মে রাতে সেভাস্তোপলে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র জাহাজ সিকলনে হামলা করেছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনী। পরে ইউক্রেনের নৌবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেছে, জাহাজটি ধ্বংস করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করা যায়নি। এ ছাড়া রাশিয়ার পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, এসব অস্ত্র পরমাণু যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য কতটা প্রস্তুত তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিচ্ছে রাশিয়া। পশ্চিমাদের উসকানিমূলক বিবৃতি-হুমকির প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার এ ধরনের কার্যক্রম সরাসরি একটি বড় সতর্কবার্তা।
তবে মহড়ার সঠিক অবস্থান জানায়নি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এ মহড়ার জন্য অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিল রাশিয়া। গত বছরই কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের ব্যাপারে ঘোষণা দেয় তারা। সে সময় বেলারুশ নিজেদের ভূমি দেওয়ার ইচ্ছা জানায়।
সম্প্রতি বেলারুশ ফের ঘোষণা করে যে, রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন রাখতে তারা প্রস্তুত। এর আগেও বিভিন্ন সময় ছোটখাটো মহড়া করেছে রাশিয়া। এর মধ্যে গত বছরের ২২ অক্টোবর দেশটির বার্ষিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। ওই মহড়ায় দূর প্রাচ্য এবং আর্কটিক অঞ্চলে ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।
ওই সময়ে ক্রেমলিন জানিয়েছিল, এই মহড়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে শত্রুপক্ষের পরমাণু হামলার বিরুদ্ধে যেন পাল্টা ব্যাপক পরমাণু হামলা চালানো যায়, সেজন্য সামরিক কমান্ডকে অনুশীলনের মাধ্যমে প্রস্তুত রাখা। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ক্রিমিয়ায় নয়টি মার্কিন আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে রুশ বাহিনী।