একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারা যায় প্রকৃতিতে প্রাপ্ত ফল ও সবজিগুলোর রঙের সঙ্গে স্রষ্টা একটি নীরব সিগনাল সিস্টেম দিয়ে দিয়েছেন। লাল রঙের ফল ও সবজি প্রতি রয়েছে রেড সিগন্যাল অর্থাৎ এরা যথেষ্ট কম স্বাস্থ্যকর তাই কম খেতে হবে, হলুদ রঙের ফল ও সবজির প্রতি রয়েছে হলুদ সিগনাল অর্থাৎ মাঝারী ধরনের স্বাস্থ্যকর অর্থাৎ পরিমাণমতো খেতে হবে আর সবুজ রঙের ফল ও সবজির প্রতি রয়েছে গ্রীন বা সবুজ সিগনাল অর্থাৎ ইচ্ছেমতো খাওয়া যাবে। বিভিন্ন রঙের সিগনাল সিস্টেমকে ট্রাফিক লাইটের সিগনাল সিস্টেমের সঙ্গেও তুলনা করা যেতে পারে।
ডায়াবেটিক রোগীকে খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে উপরোক্ত সিগনাল সিস্টেম অনুসরণ করা উচিত। নিচে কোন রঙের ফলে কী কী থাকে তা কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।
লাল রঙের ফল ও সবজি
টমেটো, তরমুজ, লাল আঙ্গুর
আর লাল পেয়ারা ফলে
‘নাইকোপেন’ নামক ক্যারোটিন থাকে
চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে।
হৃদরোগ আর ডায়াবেটিস প্রতিরোধে
রয়েছে এর প্রভাব
হাড়ের ক্ষয়রোগ হতে পারে
যদি হয় এর অভাব।
কমলা রঙের ফল ও সবজি
গাজর, আম, কুমড়া, পেয়ারায়
থাকে ‘বিটা কেরোটিন’
রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে
এর ভূমিকা সীমাহীন।
ডায়াবেটিস আর ক্যান্সার প্রতিরোধে
রয়েছে এর প্রভাব
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়
যদি হয় এর অভাব।
সবুজ রঙের ফল ও সবজি
বাধাকপি, পালং আর লেটুস শাকে
থাকে ‘আইসোথিওসায়ানেট’
ক্যান্সার প্রতিরোধে এর ভূমিকা
ছড়িয়ে আছে ইন্টারনেট।
সবুজ সবজিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ
ফলিক এসিড থাকে
রক্তস্বল্পতা আর বন্ধ্যত্ব প্রতিরোধে
এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিডের রয়েছে
গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব
স্নায়ুতন্ত্র তৈরিতে বিঘœ ঘটে
যদি হয় এর অভাব।
সাদা রঙের ফল ও সবজি
পেঁয়াজ, রসুন, নাসপাতিতে থাকে
‘ফ্ল্যাভোনয়েড’ আর ‘এ্যালিসিন’
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকরণে
এদের ভূমিকা সীমাহীন।
হৃদরোগ আর ক্যান্সার প্রতিরোধে
রয়েছে এদের প্রভাব
জ্বর, ঠাণ্ডা লেগেই থাকে
যদি হয় এদের অভাব।
হলুদ রঙের সবজি ও ফল
হলুদ শস্য, মরিচ, পাকা কলায় থাকে
‘জিয়াজ্যানথিন’ আর ‘লিউটিন’
চোখের সূক্ষ্ম দর্শনে এদের
ভূমিকা রয়েছে সীমাহীন।
ছানিপড়া প্রতিরোধে রয়েছে এদের
গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব
চোখের ম্যাকুলায় ক্ষয়রোগ হয়
যদি হয় এদের অভাব।
বেগুনি ও নীল রঙের সবজি ও ফল
কিশমিশ, আঙুর, জাম আর স্ট্রবেরিতে
থাকে ‘এ্যানথোসায়ানিন’
সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে
কাজটা যেন সানস্ক্রিন।
রক্ত জমাটবাঁধা আর হৃদরোগ প্রতিরোধে
রয়েছে এর প্রভাব
মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ নষ্ট হয়
যদি হয় এর অভাব।
ডাঃ এম এ হালিম খান
এমডিÑ এন্ডোক্রাইনোলজি
ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
শেরে বাংলা নগর, ঢাকা
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: