শিল্পী শেখ শাহ আলম। একাধারে গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী। কিশোর বয়স থেকে সাংস্কৃতিক পরিম-লে বেড়ে উঠেছেন। তিনি একজন সফল সংগঠকও। এ দেশের মাটির ঘ্রাণ ও সাধারণ মানুষের মনের কথাই উঠে এসেছে তার গানে। মুজিববর্ষকে ঘিরে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নানা পরিকল্পনা বিষয়ে গুণী এ শিল্পীর সঙ্গে কথা হয়।
মুজিববর্ষকে ঘিরে আপনার পরিকল্পনা কী?
শেখ শাহ আলম : মুজিববর্ষকে ঘিরে নানা পরিকল্পনা রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় আমার গান প্রচার হবে। আমার প্রাণের সংগঠন বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠান করব। এ অনুষ্ঠানে আমার লেখা গান পরিবেশন করবেন দেশের বরেণ্য শিল্পীরা। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে এই সংগঠনের যে শাখা রয়েছে তারাও সেই এলাকায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে। দেশের উন্নয়ন নিয়ে যেসব গান রচনা করেছি এগুলো মুজিববর্ষে সারা ঢাকায় প্রচার করব। আমরা ইতিমধ্যে ‘মহীয়সী বঙ্গমাতা’ নামে একটি সঙ্কলন বের করেছি। মুজিববর্ষ উপলক্ষে আমাদের আরেকটি সঙ্কলনের কাজ চলছে।
সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শুরুটা কিভাবে?
শেখ শাহ আলম : ছাত্রজীবন থেকেই সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত। যখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ালেখা করি তখন নাটকে অভিনয় করতাম। যাকে বলা যায় গ্রাম্য থিয়েটার। তখন থেকেই যাত্রা বা থিয়েটারের প্রতি আমার বিশেষ ঝোঁক ছিল। যখন ঢাকায় থাকি তখনও এখান থেকে গিয়ে আমার গ্রামে আমি নাটক করেছি। আমি বেশ কিছু নাটকে অভিনয়সহ পরিচালনাও করেছি। গ্রাম্য থিয়েটারে যেটা হয় সেটাই করেছি। ঢাকায় আশার পর পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে দুই একটা গান লিখতাম। তখন বেশিরভাগ বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন এবং দেশের গানই রচনা ও সুর করতাম। পরবর্তিতে কিছু কিছু ফোক গান ও বিচ্ছেদ বিষয়ক গান লিখতে শুরু করলাম। এখন আমি মূলত গান লেখা ও সুর করার ওপর বেশি জোর দিয়েছি। ইউটিউবে আলম মাল্টিমিডিয়ায় চার্চ দিলে সেখানে আমার লেখা ও সুর করা অনেক গান পাওয়া যাবে। এক হাজারেরও অধিক গান আমি লিখেছি, যার সুরও আমার করা।
আপনার এ্যালবামের সংখ্যা কত?
শেখ শাহ আলম : এখন তো সিডি’র যুগ হারিয়ে গেছে। কিছুদিন আগেও মানুষ সিডিতে গান শুনত। এখন ইউটিউবে শোনে। শুধু শোনে বললে ভুল হবে, গান দেখেও। তবে আমার লেখা ও সুর করা গানের তিনটি সিডি ইতিমধ্যে প্রকাশ হয়েছে। এগুলোর মিউজিক ভিডিও করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ‘উন্নয়নে শেখ হাসিনা’, ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি বঙ্গমাতা’ ও ‘বঙ্গবন্ধুর নায়’। আমার বেশিরভাগ গান দেশের প্রথিতযশা শিল্পীরা গেয়েছেন। আমি মাত্র দুইটা গান গেয়েছি। যারা গেয়েছেন তারা হলেন শিল্পী পুলক ঘোষ, আলভী সরকার, এসবি জয়সহ অনেকে। এর অনেক গানই মিউজিক ভিডিও আকারে আলম মাল্টিমিডিয়ায় পাওয়া যাবে।
আপনার বর্তমান কর্মযজ্ঞ নিয়ে বলেন।
শেখ শাহ আলম : বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটেও অনেকদিন কাজ করেছি। পরে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছি ‘বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোট’ নামে একটি সংগঠন। এটির বয়স প্রায় দুই বছর। শিল্পী, সাহিত্যিক, লেখক, অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র পরিচালক- এদের নিয়েই এই সংগঠনটি গড়া হয়েছে। বলা যায় অনেক গুণী মানুষের সমন্বয়ে এটা দাঁড় করানো হয়েছে। আমি এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। চলচ্চিত্র পরিচালক মীর্জা শাখাওয়াত হোসেন এই সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তিনি ‘অর্জন ৭১’ সিনেমার পরিচালক প্রযোজক। গান লেখা ও সুর করা নিয়ে ব্যস্ত আছি।
আপনার সংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে বলুন।
শেখ শাহ আলম : এটা একটা সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সাংস্কৃতিক সংগঠন। সমাজের কল্যাণে কাজ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। সাংস্কৃতিক চেতনার মাধ্যমে আমরা সমাজের উন্নয়ন ঘটাতে চাই। গান, কবিতা বা বিভিন্ন লেখনী এবং অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উন্নয়নের পথকে সুগম করাই উদ্দেশ্য। বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু করে তোলার পেছনে বঙ্গমাতার অবদানগুলো অসামান্য। এই বঙ্গমাতাকে অনেকে চিনত না। অথচ বঙ্গবন্ধুকে সব বিষয়ে পরামর্শ দেয়ার জন্য তিনিই প্রধান ভূমিকা রেখেছেন। আমার প্রস্তাবের ভিত্তিতে এই সংগঠনের নাম ‘বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোট’ হয়েছে। -গৌতম পাণ্ডে
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: